আমি সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চোখের সামনেই সন্তানদের মৃত্যুর পথযাত্রা ভেবে বিরল রোগ আর দারিদ্রতার কাছে মা-বাবা অসহায় হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সামান্য জমিজমা সর্বস্ব বিক্রি করে একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে চেষ্টা করলেও সেই প্রিয় সন্তান ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে। এমনই এক নির্মম বাস্তবতার মুখে বিরল রোগে আক্রান্ত মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার রাজ্জাক শেখের পরিবার।

বিরল রোগে আক্রান্ত একমাত্র ছেলে আব্বাসের একটি পা অস্বাভাবিক আকার ধারণ করেছে। শরীর জুড়ে আঁচিলে ভরা। ১৩ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে আব্বাস শেখ জন্মের পর ডান পা মোটা ছাড়া প্রায় স্বাভাবিক ছিল। বংশের প্রদীপ নিভে যাওয়ার আশঙ্কায় মোটা পায়ের চিকিৎসা করাতে শুরু থেকেই আপ্রাণ চেষ্টা করে মা-বাবা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামী-দামী সকল হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করেছেন। কিন্তু উন্নতির পরিবর্তে দিনদিন অবনতির হয়ে ডান পা ফুলে হাতির পায়ের মতো হয়েছে।

নির্গত হচ্ছে এক ধরণের রস। ছেলেটির সারা শরীর জুড়েই হয়েছে ছোট বড় হাজারো আঁচিল সদৃশ। বয়সের চেয়ে শারীরিক গঠন ছোট। চিকিৎসার ব্যয়ভার বহণ করতে গিয়ে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমিজমা সবই গেছে। আছে শুধু বাড়িটুকু। তাই পরিবারটির প্রিয় সন্তানসহ সদস্যদের মৃত্যু চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর যেন কিছুই করার নেই।

বিরল রোগে আক্রান্ত আব্বাস শেখ বলেন, আমার পা দিন দিন ফুলে মোটা হচ্ছে আর সারা শরীরে গোটা গোটা হচ্ছে। আবার পা থেকে দুর্গন্ধ রস বের হচ্ছে। তাই স্কুলেও যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আমার অনেক ইচ্ছা হয় লেখা-পড়া করার। অন্য সবার মত খেলা-ধুলা করার। কিন্তু আমার দিন দিন যে অবস্থা হচ্ছে জানি না কি হবে। আমার বাঁচতে খুব ইচ্ছা করে। আমি সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই।

রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার মণ্ডল বলেন, আব্বাস নামের কিশোরটি যে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছে এটাকে আসলে এ্যালিফেন্ট ডিজিজ রোগ বলা হয়। তার পা দেখতে অনেকটা হাতির পায়ের মত। এই রোগটি যদিও জটিল, কিন্তু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বড় হাসপাতালে বিশেষ ধরণের অপারেশন ও ঔষুধের মাধ্যমে এর চিকিৎসা সম্ভব। আমি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে আব্বাস ও ওদের পরিবারের আরো দুই জনের শারীরিক অবস্থা দেখাবো। কর্তৃপক্ষের সাথে ওদের চিকিৎসার ব্যাপারে কথা বলবো।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর