হাওর বার্তা ডেস্কঃ দোয়ারাবাজারে এক ইউপি সদস্য তাঁর আত্মীয় স্বজনের নামে চারটি পিআইসির কাজ করছেন। এসব পিআইসিতে বরাদ্দও প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছে। তদারকি কর্মকর্তার যোগসাজসে এমন অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
দোয়ারাবাজার উপজেলার নাইন্দার হাওরপাড়ের একাধিক কৃষক জানান, নাইন্দার হাওরের ৪ টি পিআইসির ৩টিই পেয়েছেন দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের সদস্য তাজির উদ্দিনের পরিবারের সদস্যরা। আরেকটি পিআইসির সভাপতি তাঁর ঘনিষ্ট এক ব্যক্তি। এই চারটি পিআইসির কাজই তিনি করছেন বলে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ।
উপজেলার নাইন্দার হাওরের একনম্বর পিআইসির সভাপতি ইউপি সদস্য তাজির উদ্দিনের আপন চাচা
খুর্শিদ আলী, ঐ পিআইসিতে তাজির উদ্দিন সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
এই বাঁধের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল ৯ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা, বিপরীতে বরাদ্দ আসে ৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। নাইন্দার হাওরের ১৫ নম্বর পিআইসির সভাপতি তাজির উদ্দিনের ঘনিষ্ট হিসাবে পরিচিত মোঃ আব্দুল মান্নান, এই বাঁধের জন্য সম্ভাব্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল ৭ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা, বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ২৪ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা।
নাইন্দার হাওর ২৬ নম্বর পিআইসির সভাপতি নজরুল ইসলাম, তিনি তাজির উদ্দিনের আপন শ্যালক, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন তাঁর ভাতিজা (তাজির উদ্দিনের বড় ভাই নুরুল আমিনের ছেলে)। এই বাঁধের জন্য সম্ভাব্য বরাদ্দ চাওয়া হয় ৮ লক্ষ টাকা, বিপরীতে বরাদ্দ আসে ১৯ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা।
নাইন্দার হাওর ২৭ নম্বর পিআইসির সভাপতি তাজির উদ্দিনের বড় ভাইয়ের ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন। এই বাঁধে সম্ভাব্য বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৭ লক্ষ টাকা, বরাদ্দ দেওয়া হয় ২৪ লক্ষ ৩ হাজার টাকা।
হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের দেখভালকারী বিশেষ কমিটির সদস্য দোয়ারাবাজার মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আব্দুল মালেক বলেন, ‘কাজ দেখেছি, যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাঁর চার ভাগের এক ভাগ টাকারও কাজ হয়নি। হাওর ঘুরে জানা গেছে ইউপি সদস্য তাজির উদ্দিন ৪ টি পিআইসির কাজ করছেন।’
এ ব্যাপারে জানার জন্য ইউপি সদস্য তাজির উদ্দিনের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী দোয়ারাবাজারের হাওররক্ষা বাঁধের তদারকি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন,‘ইউপি সদস্য তাজির উদ্দিন একটি পিআইসিতে সদস্য হিসাবে আছেন। তাঁর ওয়ার্ডে আরও ৪ টি পিআইসির কাজ রয়েছে।
কাজগুলো ওঠানোর জন্য তাঁর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে, এজন্য তিনি দেখভাল করছেন। এই চার পিআইসিতে অতিরিক্ত কোন বরাদ্দ হয়নি। বাঁধ পানির নীচে থাকা অবস্থায় সম্ভাব্য বরাদ্দ নির্ধারণ হয়েছিল, ৮ ফেব্রুয়ারি’র সভায় এই সম্ভাব্য বরাদ্দ জানানো হয়েছিল। পরে দুদক’এর সার্ভে রিপোর্টের ভিত্তিতে কোন কোন বাঁধে বরাদ্দ কমেছে, আবার কোন কোন বাঁধে বরাদ্দ বেড়েছে, আবার কোথাও কোথাও কাজই করা লাগছে না। দুদকের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাক্কলন করা হয়েছে।