ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রায় ১০ গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন একটি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪২:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৪৫৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মালিঝি নদীতে ছোট্ট একটি সেতু হবে- এটাই ময়মনসিংহের ফুলপুরের সিংহেশ্বর ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। নৌকা ও একটি বাঁশের সাঁকোই যাদের একমাত্র ভরসা।

মালিঝি নদীতে নিশুনিয়াকান্দায় একটি সেতুর অভাবে উন্নয়নবঞ্চিত চাতুলিয়া কান্দা, সেনেরচর, মালিঝিকান্দা, নিশুনিয়াকান্দা, কুঠুরাকান্দা, বানিয়াপাড়া ও ফতেপুরের মানুষ। বার বার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়ে আসলেও হয়নি কোন সেতু।

গত ৫/৬ বছরে নদী সাঁকো থেকে পড়ে প্রায় ৫০ জন আহত হন। সাঁতরে নদী পার হওয়ার সময় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী আফরোজা ও কৃষক আব্দুল কাদিরসহ তিনজন নিহত হন।

মালিঝি নদীটি ৫নং ফুলপুর ইউনিয়নের নাকাগাঁও ও বানিয়াপাড়া গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে কংশ নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে।  দুই নদী মিলে ময়মনসিংহের ফুলপুর ও হালুয়াঘাট উপজেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন ও উন্নয়নবঞ্চিত করে রেখেছে শত শত মানুষকে। বঞ্চিত ওইসব মানুষকে উন্নয়নমুখী করতে মালিঝি নদীতে একটি সেতুর কোন বিকল্প নেই।

এসব গ্রামে ধান ও সরিষার পাশাপাশি লাউ, কুমড়া, তরমুজ, সীম, ক্ষীরা, মরিচ, পেঁয়াজসহ এমন কোন ফসল নেই যা ফলে না।  কৃষিজ ওইসব পণ্যের ন্যায্যমূল্য তারা কখনই পান না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কৃষক, শ্রমিক, শিশু, বৃদ্ধ, রোগী, ছাত্রছাত্রী ও গর্ভবতীসহ শত শত মানুষকে চলাচল করতে হয় নড়বড়ে ওই সাঁকো দিয়েই।

কথা হয় কৃষক আকবর আলী, হারুনুর রশিদ, চান মিয়া, সুরুজ আলী ও জয়নাল আবেদীনসহ এলাকার বেশ কয়েকজনের সাথে। তারা বলেন, অধিকারবঞ্চিত ও অবহেলিত মালিঝিপাড়ের মানুষ। উপজেলা শহর থেকে মালিঝি নদী মাত্র ৪/৫ কিলোমিটারের পথ হলেও একটি সেতু আমাদের পিছিয়ে রেখেছে। এটুকু রাস্তা যেতে আমাদের কাছে মনে হয় শত কিলোমিটারের পথ। স্বাধীনতার প্রায় ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি ওইসব এলাকায়।

আকবর আলী বলেন, শিক্ষা, চিকিৎসা ও অধিকারবঞ্চিত অসহায় মানুষ আমরা। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছি না। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় একটা ভাল পরিবারের সাথে আত্মীয় করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হজরত আলী বলেন, আমাদের মালিঝিপাড়ের মানুষ সুবিধাবঞ্চিত। সরকারকে বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই নানা উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও ফলক উন্মোচন করতে দেখা যায়। দেখে আনন্দ লাগে; বুকটা ভরে যায়। কিন্তু হাজার বছরের অবহেলিত মালিঝিপাড়ের মানুষের যাতায়াতে দুর্দশায় এ আনন্দ ম্লান হয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান বলেন, আমি এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। আসলেই খুবই করুণ অবস্থা। এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন মালিঝি নদীতে ছোট্ট একটি সেতু। মাননীয় এমপি শরীফ আহমেদকে বিষয়টি জানিয়ে ওখানে একটি সেতুর জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রায় ১০ গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন একটি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা

আপডেট টাইম : ০৭:৪২:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মালিঝি নদীতে ছোট্ট একটি সেতু হবে- এটাই ময়মনসিংহের ফুলপুরের সিংহেশ্বর ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। নৌকা ও একটি বাঁশের সাঁকোই যাদের একমাত্র ভরসা।

মালিঝি নদীতে নিশুনিয়াকান্দায় একটি সেতুর অভাবে উন্নয়নবঞ্চিত চাতুলিয়া কান্দা, সেনেরচর, মালিঝিকান্দা, নিশুনিয়াকান্দা, কুঠুরাকান্দা, বানিয়াপাড়া ও ফতেপুরের মানুষ। বার বার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়ে আসলেও হয়নি কোন সেতু।

গত ৫/৬ বছরে নদী সাঁকো থেকে পড়ে প্রায় ৫০ জন আহত হন। সাঁতরে নদী পার হওয়ার সময় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী আফরোজা ও কৃষক আব্দুল কাদিরসহ তিনজন নিহত হন।

মালিঝি নদীটি ৫নং ফুলপুর ইউনিয়নের নাকাগাঁও ও বানিয়াপাড়া গ্রামের পশ্চিম পাশ দিয়ে কংশ নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে।  দুই নদী মিলে ময়মনসিংহের ফুলপুর ও হালুয়াঘাট উপজেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন ও উন্নয়নবঞ্চিত করে রেখেছে শত শত মানুষকে। বঞ্চিত ওইসব মানুষকে উন্নয়নমুখী করতে মালিঝি নদীতে একটি সেতুর কোন বিকল্প নেই।

এসব গ্রামে ধান ও সরিষার পাশাপাশি লাউ, কুমড়া, তরমুজ, সীম, ক্ষীরা, মরিচ, পেঁয়াজসহ এমন কোন ফসল নেই যা ফলে না।  কৃষিজ ওইসব পণ্যের ন্যায্যমূল্য তারা কখনই পান না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কৃষক, শ্রমিক, শিশু, বৃদ্ধ, রোগী, ছাত্রছাত্রী ও গর্ভবতীসহ শত শত মানুষকে চলাচল করতে হয় নড়বড়ে ওই সাঁকো দিয়েই।

কথা হয় কৃষক আকবর আলী, হারুনুর রশিদ, চান মিয়া, সুরুজ আলী ও জয়নাল আবেদীনসহ এলাকার বেশ কয়েকজনের সাথে। তারা বলেন, অধিকারবঞ্চিত ও অবহেলিত মালিঝিপাড়ের মানুষ। উপজেলা শহর থেকে মালিঝি নদী মাত্র ৪/৫ কিলোমিটারের পথ হলেও একটি সেতু আমাদের পিছিয়ে রেখেছে। এটুকু রাস্তা যেতে আমাদের কাছে মনে হয় শত কিলোমিটারের পথ। স্বাধীনতার প্রায় ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি ওইসব এলাকায়।

আকবর আলী বলেন, শিক্ষা, চিকিৎসা ও অধিকারবঞ্চিত অসহায় মানুষ আমরা। উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছি না। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় একটা ভাল পরিবারের সাথে আত্মীয় করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হজরত আলী বলেন, আমাদের মালিঝিপাড়ের মানুষ সুবিধাবঞ্চিত। সরকারকে বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই নানা উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও ফলক উন্মোচন করতে দেখা যায়। দেখে আনন্দ লাগে; বুকটা ভরে যায়। কিন্তু হাজার বছরের অবহেলিত মালিঝিপাড়ের মানুষের যাতায়াতে দুর্দশায় এ আনন্দ ম্লান হয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান বলেন, আমি এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। আসলেই খুবই করুণ অবস্থা। এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন মালিঝি নদীতে ছোট্ট একটি সেতু। মাননীয় এমপি শরীফ আহমেদকে বিষয়টি জানিয়ে ওখানে একটি সেতুর জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব।