হাওর বার্তা ডেস্কঃ নদী আমাদের জীবন। নদী দেশের প্রাণ। প্রকৃতি-পরিবেশের সঙ্গে তার নাড়ির বাঁধন। সেই নদীকে যদি নির্বিচার উন্নয়নের নিগড়ে বাঁধা হয়, তার দুই তীর যদি অন্যায় অট্টালিকায় মুছে যায়, তার পানি যদি আমাদের জঞ্জালের বাহন হয়, তাহলে নদী তার জননীরূপ জলাঞ্জলি দিয়ে প্রলয়মূর্তি ধারণ করবেই।
প্রতিবছর বর্ষায় নদীর তাণ্ডবনৃত্য হয়তো তারই একটা ঝলক। একঝটকায় কখনওবা হাজার হাজার মানুষ বালির পুতুলের মতো ধুয়েমুছে চলে যায়। এমন মহাপ্রলয় প্রকৃতির প্রতিশোধ ছাড়া আর কী! এমন ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় আগাম জানা যায় না ঠিকই, কিন্তু প্রকৃতির সুবোধ্য নিয়ম মেনে প্রকৃতির দুর্বোধ্য আঘাতের মোকাবেলায় আগাম ব্যবস্থা করতে কিসের এত বাধা? নদী তো তার দুই তীরে বৃক্ষ শিকড়বন্ধন চায়। সেই নদীতীরে আকাশ-ঢাকা অট্টালিকার এমন বাড়বাড়ন্ত হল কী করে? গোড়া থেকেই কেন এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হল না?
চট্টগ্রাম-ঢাকা-কক্সবাজারে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে আমাদের দীর্ঘদিনের ভ্রমণস্মৃতি। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া হয়ে ঢাকা; সিলেট থেকে কুমিলা হয়ে চট্টগ্রাম-এসব জায়গার প্রতিটি স্থান অর্থাৎ বহুধাবিস্তৃত পবিত্র ভূমি সব ভ্রমণার্থীরই প্রিয় স্মৃতি, কিংবা সাধের স্বপ্ন। এছাড়া আজকাল দেশের সর্বত্রই ভূমিকম্পের ব্যাপারে সবাই চিন্তিত ও অসহায়।
সেখানেও দেখা যাচ্ছে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় বসতি বিন্যাস ও গৃহনির্মাণে রক্ষাকবচের ব্যবস্থা করা যায়। কিন্তু তাও হচ্ছে না। নদীপ্রলয় এড়াতে নির্বিচার বাঁধ ও নদীতীরের কাছে অবাধ নির্মাণে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারিসহ অন্যান্য পদক্ষেপ এখনই নেয়া যাবে না কেন? দেশের প্রাণই যদি এভাবে ভেসে যায়, তাহলে ভ্রমণে গিয়ে আমরা কি আর আনন্দ পাব?
লিয়াকত হোসেন খোকন রূপনগর, ঢাকা