টঙ্গীর তুরাগ তীরে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি শেষ সমবেত হচ্ছেন মুসল্লিরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টঙ্গীর তুরাগ তীরে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ শুরু হবে আগামী ১২ জানুয়ারি। ইজতেমা মাঠের কাজ প্রায় শেষ। মাঠের পূর্ব দিকে ঢাকা জেলার একাংশের জন্য নির্ধারিত স্থান খালি রয়েছে। ঢাকা জেলার আগতরা এ অংশে শামিয়ানা নিজ উদ্যোগে টানিয়ে নেবেন।

বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে প্রথম ধাপে অংশগ্রহণ করবে ঢাকার একাংশসহ নারায়ণগঞ্জ, শেরপুর, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, লক্ষীপুর, সিলেট,চট্টগ্রাম, নড়াইল, মাদারীপুর, ভোলা, মাগুরা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠিী, পঞ্চগড়, নেত্রকোনা, নরসিংদী এবং বগুড়া থেকে আগতরা। প্রতিটি জেলার জন্য রয়েছে নির্ধারিত স্থান। প্রত্যেকেই স্ব স্ব খিত্তায় অবস্থান নেবেন। যদিও শুক্রবার থেকে ইজতেমা শুরু হবে। তবে তাবলিগ জামাতের নিয়মানুযায়ী বৃহস্পতিবার ফজরের পর থেকেই আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হবে।

এ বছর ১৬০ একর এলাকা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। বিদেশি মেহমানদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ৪ কামরা বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক নিবাস।

ইতোমধ্যে ইজতিমা মাঠের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, বিদ্যুত ও গ্যাস সংযোগ পরীক্ষা করা হয়েছে। গত সোমবার থেকে ইজতেমা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক নজরদারীতে রয়েছেন। আর ইজতেমার দ্বিতীয় ধাপ পর্যন্ত ১২ হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য অব্যাহত সেবা প্রদান করবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ৫টি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে আগতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নিরাপত্তা বেষ্টনি আরও বেশি সতর্ক থাকবে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়াতে সার্বক্ষণিক নজরদারিও রাখা হবে। এ কারণে ইজতেমা অনুষ্ঠিত এলাকায় ৬ স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে। যাতে বর্তমান সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও রোহিঙ্গা প্রবেশ রোধ করা যায়।

এবারের ইজতেমা ময়দানের রয়েছে ১৭টি প্রবেশ পথ। যার প্রতিটিতে থাকবে দেহ তল্লাশির কঠোর ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানের চারদিকে ১৫টি সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। মাঠ জুড়ে থাকবে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের কড়া নজরদারি।

ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সুবিধার্তে এবার ১৪টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি সরবরা করা হবে। ১৩ কিলোমিটার পানির লাইন স্থাপনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক অজু, গোসল এবং টয়লেটের নিরাপদ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। থাকবে পরিবেশ উন্নয়ন ও মশার উপদ্রব নিধনের কার্যক্রম।

ইজতেমা মাঠে সহজে আগতদের যাতায়াত অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৮টি ভাসমান ব্রিজ তৈরি করেছে। এগুলোও আজ উন্মুক্ত করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের দক্ষ কর্মীদের ৩টি আধুনিক ইউনিট সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা থাকবে। প্রস্তুত থাকবে ১২টি গাড়ি ও ৯০টি অগ্নিনির্বপক যন্ত্র।

ইজতেমায় আগতদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৬টি মেডিকেল টিম থাকবে। প্রস্তুত থাকবে ১৪টি অ্যাম্বুল্যান্স। অন্যান্য বছরের তুলনায় হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে। হৃদরোগ, ডায়রিয়া ও অ্যাজমাসহ জটিল রোগীদের জন্য গঠন করা হয়েছে বিশেষ মেডিকেল টিম।

দাওয়াত ও তাবলিগের কাজে বের হওয়া সাথীরা ইতোমধ্যে ইজতেমা মাঠের আশপাশের এলাকার মসজিদে অবস্থান করে প্রচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইজতেমার ময়দানে বয়নকারী ও মুরব্বিসহ আগতরা ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানে আগমন শরু করেছেন। যা আখেরি মোনাজাতের পূর্ব পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সব আগতদের প্রতি রইল শুভ কামনা ও মোবারকবাদ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর