ঢাকা ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লতিফ সিদ্দিকীর আসনে কে হচ্ছেন এমপি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩০:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ২৫৪ বার

লতিফ সিদ্দিকীর পদত্যাগের পর শূন্য ঘোষণা হওয়া টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিরাজ করছে উপনির্বাচনের আমেজ। দুটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে এ নির্বাচনী এলাকা গঠিত। আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫২ হাজার ২৬। আগামী উপনির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের হাফডজন নেতা ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টা করছেন তারা। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চায়ের দোকানগুলোতে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ, আলোচনা ও সমালোচনা। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এমপি নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাসদের শাহজাহান সিরাজ। ১৯৭৯ সালে লতিফ সিদ্দিকীর সহধর্মিনী লায়লা সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জাসদের শাহজাহান সিরাজের কাছে হেরে যান। ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লায়লা সিদ্দিকী স্বতন্ত প্রার্থী হয়ে জাসদের শাহজাহান সিরাজকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন জাসদের শাহজাহান সিরাজ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির এনামুল হক শহীদ। ১৯৯০ সালে শাহজাহান সিরাজ জাসদ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপির শাহজাহান সিরাজ ও আওয়ামী লীগের আবদুল লতিফ সিদ্দিকী একে অপরের মোকাবিলা করেন। ১৯৯১, ১৯৯৬ (১৫ই ফেব্রুয়ারি) ও ২০০১ সালে শাহজাহান সিরাজ এবং ১৯৯৬ (১২ই জুন) আবদুল লতিফ সিদ্দিকী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে বেশ কয়টি মামলায় শাহজাহান সিরাজ জেলে থাকায় এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শিল্পপতি লুৎফর রহমান মতিনকে। তিনি আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কাছে পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকী পান ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪৬ ভোট এবং লুৎফর রহমান মতিন পান ৮৬ হাজার ৯১২ ভোট। আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এমপি হওয়ার পর গুরুত্বপূর্ণ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৫ই জানুয়ারির এক তরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন যারা: আসনটিতে উপনির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য দলের বেশ কয়েকজন নেতা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও জনতা ব্যাংকের পরিচালক মো. আবু নাসের, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, টাঙ্গাইল জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক সাবিনা ইয়াসমিন ইব্রাহীম ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মোল্লা। এ ছাড়া উপনির্বাচন ঘিরে এ আসনটিতে জাতীয় পার্টির দুজন প্রার্থী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরা হলেন টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির অর্থবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোস্তাক আহম্মেদ রতন ও কালিহাতী উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান। তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু নাসের ও হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী অনেকটা কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। ইতিমধ্যেই তারা দলীয় কর্মী সমর্থক নিয়ে পুরোদমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মনোনয়ন পেতে উভয়ই জোড় তদবির চালাচ্ছেন। বসে নেই অন্য প্রার্থীরাও। যে যার আঙ্গিকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও জনতা ব্যাংকের পরিচালক মো. আবু নাসের বলেন, ৪০ বছর ধরে কালিহাতীতে রাজা-মহারাজার শাসন চলছিল। সাধারণ মানুষ তাদের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এর অবসান হয়েছে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, বিগত উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে আমি সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। উপজেলার প্রত্যেকটি এলাকায় আমি ঘুরেছি। জনগণ আমার পক্ষে আছে। আমার বিশ্বাস দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

লতিফ সিদ্দিকীর আসনে কে হচ্ছেন এমপি

আপডেট টাইম : ১২:৩০:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫

লতিফ সিদ্দিকীর পদত্যাগের পর শূন্য ঘোষণা হওয়া টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিরাজ করছে উপনির্বাচনের আমেজ। দুটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়ন নিয়ে এ নির্বাচনী এলাকা গঠিত। আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫২ হাজার ২৬। আগামী উপনির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের হাফডজন নেতা ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টা করছেন তারা। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চায়ের দোকানগুলোতে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ, আলোচনা ও সমালোচনা। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এমপি নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাসদের শাহজাহান সিরাজ। ১৯৭৯ সালে লতিফ সিদ্দিকীর সহধর্মিনী লায়লা সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে জাসদের শাহজাহান সিরাজের কাছে হেরে যান। ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লায়লা সিদ্দিকী স্বতন্ত প্রার্থী হয়ে জাসদের শাহজাহান সিরাজকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন জাসদের শাহজাহান সিরাজ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির এনামুল হক শহীদ। ১৯৯০ সালে শাহজাহান সিরাজ জাসদ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। এরপর ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপির শাহজাহান সিরাজ ও আওয়ামী লীগের আবদুল লতিফ সিদ্দিকী একে অপরের মোকাবিলা করেন। ১৯৯১, ১৯৯৬ (১৫ই ফেব্রুয়ারি) ও ২০০১ সালে শাহজাহান সিরাজ এবং ১৯৯৬ (১২ই জুন) আবদুল লতিফ সিদ্দিকী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে বেশ কয়টি মামলায় শাহজাহান সিরাজ জেলে থাকায় এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শিল্পপতি লুৎফর রহমান মতিনকে। তিনি আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কাছে পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে লতিফ সিদ্দিকী পান ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪৬ ভোট এবং লুৎফর রহমান মতিন পান ৮৬ হাজার ৯১২ ভোট। আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এমপি হওয়ার পর গুরুত্বপূর্ণ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৫ই জানুয়ারির এক তরফা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।
মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন যারা: আসনটিতে উপনির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য দলের বেশ কয়েকজন নেতা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও জনতা ব্যাংকের পরিচালক মো. আবু নাসের, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী, টাঙ্গাইল জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক সাবিনা ইয়াসমিন ইব্রাহীম ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মোল্লা। এ ছাড়া উপনির্বাচন ঘিরে এ আসনটিতে জাতীয় পার্টির দুজন প্রার্থী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরা হলেন টাঙ্গাইল জেলা জাতীয় পার্টির অর্থবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোস্তাক আহম্মেদ রতন ও কালিহাতী উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান। তবে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু নাসের ও হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী অনেকটা কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। ইতিমধ্যেই তারা দলীয় কর্মী সমর্থক নিয়ে পুরোদমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মনোনয়ন পেতে উভয়ই জোড় তদবির চালাচ্ছেন। বসে নেই অন্য প্রার্থীরাও। যে যার আঙ্গিকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও জনতা ব্যাংকের পরিচালক মো. আবু নাসের বলেন, ৪০ বছর ধরে কালিহাতীতে রাজা-মহারাজার শাসন চলছিল। সাধারণ মানুষ তাদের প্রতি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এর অবসান হয়েছে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী বলেন, বিগত উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হয়ে চেয়ারম্যান হিসেবে আমি সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। উপজেলার প্রত্যেকটি এলাকায় আমি ঘুরেছি। জনগণ আমার পক্ষে আছে। আমার বিশ্বাস দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে।