ঢাকা ০২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রামবাংলার কৃষি ক্ষেতে সেচযন্ত্র হিসেবে টিন বা বাঁশের তৈরি দোঙ্গার হারিয়ে যাচ্ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:২৬:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৬৪৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতায় প্রতিটি শাখায় আধুনিকায়নের ফলে যন্ত্র সভ্যতার যাঁতাকলে গ্রামঞ্চল থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন কৃষিযন্ত্র দোন কিংবা সেঁউতি (বরিশালের স্থানীয় ভাষায় দোঙ্গা)। আগেকার দিনে জমিতে পানি সেচের ব্যবস্থার জন্য ব্যবহার করা হতো টিন বা বাঁশের তৈরি এই দোঙ্গা।

এক সময় গ্রাম বাংলার কৃষিতে সেচযন্ত্র হিসেবে টিন বা বাঁশের তৈরি দোঙ্গার ব্যাপক চাহিদা ছিলো। টিন বা বাঁশের চাটাই দিয়ে তৈরি দোঙ্গা দিয়ে খাল বা নিচু জমি হতে উপরে পানি সেচ করা হতো।

গ্রামবাংলার কৃষকরা আদিকাল থেকেই চিন্তা-চেতনার ফসল হিসেবে আবিষ্কার করেছিল কাঠের এ দোঙ্গা। আম, কাঁঠাল জাতীয় গাছের কাঠের মাঝের অংশের কাঠ কেটে নিয়ে তার মাঝখানের কাঠের ড্রেন তৈরি করে পানি সেচ দেয়ার ব্যবস্থা করা সম্ভব। এতে করে পানি সেচ দিতে শ্রমিক ছাড়া কোনো প্রকার খরচ হয় না। তাছাড়া এটি সহজে বহনীয়।

দোঙ্গায় সেচ দেয়া খুব মজার কাজ। একটি বাঁশের শক্ত খুঁটি মাটিতে পুঁতে তার সাথে লম্বা অন্য একটি বাঁশ বেঁধে এক অংশে দোঙ্গার মাথা অন্য অংশে মাটির ভরা (ওজন) তুলে দিয়ে পানিতে চুবিয়ে তুললে একসঙ্গে অনেক পানি উঠে আসে। এভাবে অনবরত পানি সেচ দিলে দ্রুত সেচের কাজ হয়।

আগৈলঝাড়া উপজেলার মিঠু বিশ্বাস জানায়, সে কখনও দোঙ্গা দেখেনি। তবে বই পড়ে জানতে পেরেছে এসব কৃষিকাজে ব্যবহার করা হতো।

রাজিহার গ্রামের তপন বসু (৪২) জানান, আমি বাপ-দাদাদের দোঙ্গা ব্যবহার করে সেচকাজ করতে দেখেছি। এজন্য শখের বশে একটি দোঙ্গা তৈরি করে তা দিয়ে পানি সেচ দিয়েছি।

এলাকার প্রবীণ ইদ্রিস আলী মৃধা (৮৫) বলেন, আগে আমরা দোঙ্গা দিয়েই সেচকাজ চালাতাম। এখন আধুনিক অনেক যন্ত্রপাতি আসায় এগুলোর ব্যবহার হয় না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

গ্রামবাংলার কৃষি ক্ষেতে সেচযন্ত্র হিসেবে টিন বা বাঁশের তৈরি দোঙ্গার হারিয়ে যাচ্ছে

আপডেট টাইম : ০৫:২৬:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতায় প্রতিটি শাখায় আধুনিকায়নের ফলে যন্ত্র সভ্যতার যাঁতাকলে গ্রামঞ্চল থেকে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন কৃষিযন্ত্র দোন কিংবা সেঁউতি (বরিশালের স্থানীয় ভাষায় দোঙ্গা)। আগেকার দিনে জমিতে পানি সেচের ব্যবস্থার জন্য ব্যবহার করা হতো টিন বা বাঁশের তৈরি এই দোঙ্গা।

এক সময় গ্রাম বাংলার কৃষিতে সেচযন্ত্র হিসেবে টিন বা বাঁশের তৈরি দোঙ্গার ব্যাপক চাহিদা ছিলো। টিন বা বাঁশের চাটাই দিয়ে তৈরি দোঙ্গা দিয়ে খাল বা নিচু জমি হতে উপরে পানি সেচ করা হতো।

গ্রামবাংলার কৃষকরা আদিকাল থেকেই চিন্তা-চেতনার ফসল হিসেবে আবিষ্কার করেছিল কাঠের এ দোঙ্গা। আম, কাঁঠাল জাতীয় গাছের কাঠের মাঝের অংশের কাঠ কেটে নিয়ে তার মাঝখানের কাঠের ড্রেন তৈরি করে পানি সেচ দেয়ার ব্যবস্থা করা সম্ভব। এতে করে পানি সেচ দিতে শ্রমিক ছাড়া কোনো প্রকার খরচ হয় না। তাছাড়া এটি সহজে বহনীয়।

দোঙ্গায় সেচ দেয়া খুব মজার কাজ। একটি বাঁশের শক্ত খুঁটি মাটিতে পুঁতে তার সাথে লম্বা অন্য একটি বাঁশ বেঁধে এক অংশে দোঙ্গার মাথা অন্য অংশে মাটির ভরা (ওজন) তুলে দিয়ে পানিতে চুবিয়ে তুললে একসঙ্গে অনেক পানি উঠে আসে। এভাবে অনবরত পানি সেচ দিলে দ্রুত সেচের কাজ হয়।

আগৈলঝাড়া উপজেলার মিঠু বিশ্বাস জানায়, সে কখনও দোঙ্গা দেখেনি। তবে বই পড়ে জানতে পেরেছে এসব কৃষিকাজে ব্যবহার করা হতো।

রাজিহার গ্রামের তপন বসু (৪২) জানান, আমি বাপ-দাদাদের দোঙ্গা ব্যবহার করে সেচকাজ করতে দেখেছি। এজন্য শখের বশে একটি দোঙ্গা তৈরি করে তা দিয়ে পানি সেচ দিয়েছি।

এলাকার প্রবীণ ইদ্রিস আলী মৃধা (৮৫) বলেন, আগে আমরা দোঙ্গা দিয়েই সেচকাজ চালাতাম। এখন আধুনিক অনেক যন্ত্রপাতি আসায় এগুলোর ব্যবহার হয় না।