ঢাকা ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রামের বাংলার মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন বা কুপি বাতি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০৫:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ১১১৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রামীণ বাংলার জীবনে রাতের অন্ধকার দূর করতে একটা সময় দেশের ৬৪ হাজার গ্রামের মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন বা কুপি বাতি (টেমি) । সচিবসহ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে উচ্চ পর্যায়ে থাকা খোঁজ করলে লক্ষ্য করাযাবে অনেকেই পড়ালেখা করেছেন হারিকেনের মৃদু আলোয়।

গৃহস্থালী এবং ব্যবসার কাজেও হারিকেনের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তবে এখন সেই হারিকেনের ঠাঁই হইতাছে জাদুঘরে। হারিকেনের স্থান দখল করেছে নানা ধরনের বৈদ্যুতিক বাতি। বৈদ্যুতিক ও চায়নাবাতির কারণে শহরে হারিকেনের ব্যবহার অনেক আগেই বন্ধ হয়েছে। সেই আলোর প্রদীপ এখন গ্রাম থেকেও বিলুপ্ত হচ্ছে।

হারিকেন জ্বালিয়েই বাড়ি উঠানে বা বারান্দায় পড়াশোনা করতো শিক্ষার্থীরা। রাতের বেলায় পথ চলার জন্য ব্যবহৃত ছিল হারিকেন। হারিকেনের জ্বালানি আনার জন্য প্রতি বাড়িতেই থাকতো কাচের বিশেষ ধরনের বোতল। সেই বোতলে রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হতো। হাটের দিনে সেই রশিতে ঝুলানো বোতল হাতে যেতে হতো হাটে। এ দৃশ্য বেশি দিনের নয়।

পল্লীবিদ্যুতায়নের যুগে এখন আর এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। প্রাচীন বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য কুপি বাতি (টেমি) ও হারিকেন এখন শুধুই স্মৃতি। গ্রামের অমাবস্যার রাতে মিটি মিটি আলো জ্বালিয়ে মানুষের পথ চলার স্মৃতি এখনও তাড়া করে। চলচ্চিত্রের প্রথম আমলের ছবিগুলোর দিকে এক নজর তাকালেই তার কিছুটা নমুনা পাওয়া সম্ভব। যেখানে সিনেমার নায়িকা তার ভালোবাসার মানুষটিকে অন্ধকার রাতে খুজে পেতে কুপি হারিকেন নিয়ে ছুটে আসে। আবার বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ‘‘ডাক হরকরা’’ গল্পের নায়ক তার এক হাতে হারিকেন আর অন্য হাতে বল্লভ নিয়ে রাতের আধারে ছুটে চলে তার কর্ম পালনে।

দিন দিনই প্রযুক্তি মানুষকে উন্নত করছে যার ধরুন হারিকেন ছেড়ে মানুষ এখন বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছে। তাপ বিদ্যুৎ,জল বিদ্যুত, সৌর বিদ্যুৎ সহ জ্বালানী খাতে ব্যাপক উন্নয়নে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বিলুপ্তির পথে।

এছাড়া প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুতকে সংগ্রহ করার ও পন্থা আবিস্কার করেছে বিজ্ঞানীরা। চার্জ লাইট,সৌর বিদ্যুত সহ বেশ কিছু আলোর যোগান থাকায় এখন আর কেউ ই ঝুঁকছেন না হারিকেনের দিকে।

প্রবীণদের মতামত এক সময় হারিকেন দেখতে যেতে হবে জাদুঘরে। নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবে ও না হারিকেন কী ও হারিকেনের ইতিহাস! চায়না, জাপান সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ খুব দ্রুত ই চার্জ সংরক্ষনকারী আলোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে।এক সময় হয়তো চিরতরে বিলুপ্ত হবে হারিকেন।

হারিকেন নিয়ে তাই ছন্দের সুরে বলা যায়, “যখন তোমার কেউ ছিলো না-তখন ছিলাম আমি, এখন তোমার সব হয়েছে-পর হয়েছি আমি!

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

গ্রামের বাংলার মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন বা কুপি বাতি

আপডেট টাইম : ০৫:০৫:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গ্রামীণ বাংলার জীবনে রাতের অন্ধকার দূর করতে একটা সময় দেশের ৬৪ হাজার গ্রামের মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন বা কুপি বাতি (টেমি) । সচিবসহ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে উচ্চ পর্যায়ে থাকা খোঁজ করলে লক্ষ্য করাযাবে অনেকেই পড়ালেখা করেছেন হারিকেনের মৃদু আলোয়।

গৃহস্থালী এবং ব্যবসার কাজেও হারিকেনের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তবে এখন সেই হারিকেনের ঠাঁই হইতাছে জাদুঘরে। হারিকেনের স্থান দখল করেছে নানা ধরনের বৈদ্যুতিক বাতি। বৈদ্যুতিক ও চায়নাবাতির কারণে শহরে হারিকেনের ব্যবহার অনেক আগেই বন্ধ হয়েছে। সেই আলোর প্রদীপ এখন গ্রাম থেকেও বিলুপ্ত হচ্ছে।

হারিকেন জ্বালিয়েই বাড়ি উঠানে বা বারান্দায় পড়াশোনা করতো শিক্ষার্থীরা। রাতের বেলায় পথ চলার জন্য ব্যবহৃত ছিল হারিকেন। হারিকেনের জ্বালানি আনার জন্য প্রতি বাড়িতেই থাকতো কাচের বিশেষ ধরনের বোতল। সেই বোতলে রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হতো। হাটের দিনে সেই রশিতে ঝুলানো বোতল হাতে যেতে হতো হাটে। এ দৃশ্য বেশি দিনের নয়।

পল্লীবিদ্যুতায়নের যুগে এখন আর এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। প্রাচীন বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য কুপি বাতি (টেমি) ও হারিকেন এখন শুধুই স্মৃতি। গ্রামের অমাবস্যার রাতে মিটি মিটি আলো জ্বালিয়ে মানুষের পথ চলার স্মৃতি এখনও তাড়া করে। চলচ্চিত্রের প্রথম আমলের ছবিগুলোর দিকে এক নজর তাকালেই তার কিছুটা নমুনা পাওয়া সম্ভব। যেখানে সিনেমার নায়িকা তার ভালোবাসার মানুষটিকে অন্ধকার রাতে খুজে পেতে কুপি হারিকেন নিয়ে ছুটে আসে। আবার বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ‘‘ডাক হরকরা’’ গল্পের নায়ক তার এক হাতে হারিকেন আর অন্য হাতে বল্লভ নিয়ে রাতের আধারে ছুটে চলে তার কর্ম পালনে।

দিন দিনই প্রযুক্তি মানুষকে উন্নত করছে যার ধরুন হারিকেন ছেড়ে মানুষ এখন বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছে। তাপ বিদ্যুৎ,জল বিদ্যুত, সৌর বিদ্যুৎ সহ জ্বালানী খাতে ব্যাপক উন্নয়নে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বিলুপ্তির পথে।

এছাড়া প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুতকে সংগ্রহ করার ও পন্থা আবিস্কার করেছে বিজ্ঞানীরা। চার্জ লাইট,সৌর বিদ্যুত সহ বেশ কিছু আলোর যোগান থাকায় এখন আর কেউ ই ঝুঁকছেন না হারিকেনের দিকে।

প্রবীণদের মতামত এক সময় হারিকেন দেখতে যেতে হবে জাদুঘরে। নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবে ও না হারিকেন কী ও হারিকেনের ইতিহাস! চায়না, জাপান সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ খুব দ্রুত ই চার্জ সংরক্ষনকারী আলোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে।এক সময় হয়তো চিরতরে বিলুপ্ত হবে হারিকেন।

হারিকেন নিয়ে তাই ছন্দের সুরে বলা যায়, “যখন তোমার কেউ ছিলো না-তখন ছিলাম আমি, এখন তোমার সব হয়েছে-পর হয়েছি আমি!