ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এটি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারও শিশু কিশোরদের খেলার মাঠ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪৯:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৪৯৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এটি কোন ডোবা বা পুকুর নয় নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের খেলার মাঠের দৃশ্য। যেখানে বছরের প্রায় আট মাস থাকে পানির নিচে। কলেজের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী ছাড়াও উপজেলা সদরের অন্তত ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত মাঠটি জলাবদ্ধ থাকায় হচ্ছে না ক্রীড়া চর্চা ও প্রতিযোগিতা। বন্ধ রয়েছে নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আয়োজন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজের দক্ষিণ পাশে বিশাল এ মাঠ। মাঠের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে চলাচলের রাস্তা এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বাড়িঘর। মাঠে পানি থইথই করছে। মাঠজুড়ে কচুরিপনা ও ঘাসের ঝোপ। মনে হচ্ছে ডোবা পুকুর। পানি পচে দুর্গন্ধ হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এ মাঠের পানি নিষ্কাশনের চারটি কালভার্ট ছিল। অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনা গড়ে ওঠায় কালভার্টগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে এ জলাবদ্ধতা দূর হতে পারে।

মাঠের পাশের বাসিন্দা সৈয়দ আকরাম আলী জানান, গত মে মাস থেকে এ পর্যন্ত ৭ মাস পানির নিচে রয়েছে মাঠটি। আরো অন্তত দুই মাস পানি থাকবে। পানি পচে দুর্গন্ধ হওয়ায় পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা খুবই সমস্যায় আছেন। মশার উপদ্রবও বেড়েছে।

লোহাগড়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক দিলীপ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের বিদ্যালয় জাতীয় শীতকালীন অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় টানা নয়বার দেশসেরা হয়েছে। এর প্রশিক্ষণ সকাল-বিকাল এ মাঠেই হতো।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আনিচুর রহমান জানান, ওই কলেজ ছাড়াও লোহাগড়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, মিতালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদরের অন্তত ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ মাঠ ব্যবহার করত। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো এ মাঠে। জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিতে শিক্ষা বিভাগের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বাছাই পর্বের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এ মাঠেই হতো। ব্যায়াম করতে উপজেলা সদর ও আশপাশের লোকজন এ মাঠ ব্যবহার করতেন। বিকেল-সন্ধ্যায় উন্মুক্ত বাতাসে বসে শিশু, কিশোর, যুব-বৃদ্ধদের গল্প-আড্ডার আসর বসতো এখানে। গত তিন বছর ধরে মাঠটি বছরের প্রায় আট মাস জলাবদ্ধ থাকায় সব মহল পড়েছেন বিপাকে।

কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তারেক আলম জানান, এই মাঠটি শুধু কলেজের শিক্ষার্থীদেও খেলার মাঠ নয়।  এটি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারও শিশু কিশোরদের খেলার মাঠ। মাঠটি পরিতক্ত থাকায় এলকার ক্রিড়ামতী শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। দ্রুত এই মাঠটি ছেলেমেয়েদের খেলার উপযোগী করার দাবী তার।

লোহাগড়া পৌর মেয়র আশরাফুল আলম জানান, মাঠটি এলাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের প্রয়োজন মনে করে তিনি জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত বরাদ্দ পাব। বরাদ্দ পেলে মাঠের সমস্যার সমাধান করা হবে।

কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ এনামুল কবীর বলেন, বর্ষা মৌসুমেই মন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছি। এছাড়া গত তিন বছর ধরে সংশ্লিষ্ট নানা মহলে ধরনা দিয়েছি কোন লাভ হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এটি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারও শিশু কিশোরদের খেলার মাঠ

আপডেট টাইম : ০৪:৪৯:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এটি কোন ডোবা বা পুকুর নয় নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের খেলার মাঠের দৃশ্য। যেখানে বছরের প্রায় আট মাস থাকে পানির নিচে। কলেজের প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী ছাড়াও উপজেলা সদরের অন্তত ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত মাঠটি জলাবদ্ধ থাকায় হচ্ছে না ক্রীড়া চর্চা ও প্রতিযোগিতা। বন্ধ রয়েছে নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আয়োজন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজের দক্ষিণ পাশে বিশাল এ মাঠ। মাঠের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে চলাচলের রাস্তা এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাশে বাড়িঘর। মাঠে পানি থইথই করছে। মাঠজুড়ে কচুরিপনা ও ঘাসের ঝোপ। মনে হচ্ছে ডোবা পুকুর। পানি পচে দুর্গন্ধ হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এ মাঠের পানি নিষ্কাশনের চারটি কালভার্ট ছিল। অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনা গড়ে ওঠায় কালভার্টগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে এ জলাবদ্ধতা দূর হতে পারে।

মাঠের পাশের বাসিন্দা সৈয়দ আকরাম আলী জানান, গত মে মাস থেকে এ পর্যন্ত ৭ মাস পানির নিচে রয়েছে মাঠটি। আরো অন্তত দুই মাস পানি থাকবে। পানি পচে দুর্গন্ধ হওয়ায় পার্শ্ববর্তী বাসিন্দারা খুবই সমস্যায় আছেন। মশার উপদ্রবও বেড়েছে।

লোহাগড়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক দিলীপ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের বিদ্যালয় জাতীয় শীতকালীন অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় টানা নয়বার দেশসেরা হয়েছে। এর প্রশিক্ষণ সকাল-বিকাল এ মাঠেই হতো।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আনিচুর রহমান জানান, ওই কলেজ ছাড়াও লোহাগড়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, লোহাগড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, মিতালী মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদরের অন্তত ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ মাঠ ব্যবহার করত। নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো এ মাঠে। জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিতে শিক্ষা বিভাগের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের বাছাই পর্বের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এ মাঠেই হতো। ব্যায়াম করতে উপজেলা সদর ও আশপাশের লোকজন এ মাঠ ব্যবহার করতেন। বিকেল-সন্ধ্যায় উন্মুক্ত বাতাসে বসে শিশু, কিশোর, যুব-বৃদ্ধদের গল্প-আড্ডার আসর বসতো এখানে। গত তিন বছর ধরে মাঠটি বছরের প্রায় আট মাস জলাবদ্ধ থাকায় সব মহল পড়েছেন বিপাকে।

কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তারেক আলম জানান, এই মাঠটি শুধু কলেজের শিক্ষার্থীদেও খেলার মাঠ নয়।  এটি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজারও শিশু কিশোরদের খেলার মাঠ। মাঠটি পরিতক্ত থাকায় এলকার ক্রিড়ামতী শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। দ্রুত এই মাঠটি ছেলেমেয়েদের খেলার উপযোগী করার দাবী তার।

লোহাগড়া পৌর মেয়র আশরাফুল আলম জানান, মাঠটি এলাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের প্রয়োজন মনে করে তিনি জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত বরাদ্দ পাব। বরাদ্দ পেলে মাঠের সমস্যার সমাধান করা হবে।

কলেজের অধ্যক্ষ শরীফ এনামুল কবীর বলেন, বর্ষা মৌসুমেই মন্ত্রী বরাবর আবেদন করেছি। এছাড়া গত তিন বছর ধরে সংশ্লিষ্ট নানা মহলে ধরনা দিয়েছি কোন লাভ হয়নি।