আন্দোলনের মুখেই নির্বাচনে যেতে চায় বিএনপি মির্জা ফখরুল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দলের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে আন্দোলনের মুখেই নির্বাচনে যেতে হবে বলে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘বিএনপি ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠে। বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা, দেশপ্রেম, স্বাধীন থাকার যে আগ্রহ-আকাঙ্ক্ষা, তাকে কোনো দিন দাবিয়ে রাখা যাবে না।’

‘আমাদের সবার আগে ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে, সংগঠন গড়ে তুলতে হবে এবং আন্দোলনের মুখেই নির্বাচনে যেতে হবে এবং সেখানেই আমাদের জয়লাভ করতে হবে’,  নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন বিএনপির এই মুখপাত্র।

এজন্য সর্বস্তরে সংগঠনকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার তাগিদ দেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, ‘আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে যত যুদ্ধ জয় সম্ভব হয়েছে, যত আন্দোলন-সংগ্রাম সফল হয়েছে এর সব কিছুর পেছনে ছিল একটা ডিসিপ্লিনড ফোর্স। যদি শৃঙ্খলাবদ্ধ না হন, তাহলে কোনো আন্দোলনে বিজয় অর্জন করা যাবে না।’

‘আপনাদের সংগঠন তৈরি করতে হবে, ঘরে ঘরে মানুষের কাছে গিয়ে বলতে হবে কোথায় অন্যায়টা হচ্ছে, কেন আমরা এই কথা বলছি, কেন এই সরকার জনগণের অজনপ্রিয় সরকার- এসব মানুষকে বলতে হবে। আজকে ৬০/৭০ টাকা চালের দাম, প্রতিটি দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে, মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ুন গ্রামে গ্রামে, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে, মানুষকে সরকারের অন্যায়গুলো বলুন।’

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটির ঢাকা মহানগর শাখা।

‘একাদশ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে নয়’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় থাকবেন, ডুগডুগি বাজাবেন, আর সবকে নিয়ন্ত্রণ করে নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাবেন- এই স্বপ্ন দেখছেন আপনারা। আপনারা তো ২০৪১ সাল পর্যন্ত স্বপ্ন দেখে ফেলেছেন।’

‘আমরা বলতে চাই, এই সংসদ রেখে কোনো মতেই নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। এই সরকারকে রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেন, সহায়ক সরকার বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলেন- মূল কথা হচ্ছে একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে যারা নির্বাচন কমিশনকে সাহায্য করবে।’

খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন করতেই সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়ার চক্রান্ত করছেন বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বয়াতি ওবায়দুল কাদের সাহেব প্রতিদিন কোনো না কোনো গান গাচ্ছেন। উদ্ভট, অদ্ভুত গান গেয়ে যাচ্ছেন। মানুষ শুনছে কি শুনছে না সেই দিকে তার খেয়াল নেই। তিনি বলেছেন, বিএনপি গভীর খাদের কিনারে।’

‘আমি বলতে চাই, আপনারা কি বিশাল ফুল বাগানের কিনারে দাঁড়িয়ে আছেন নাকি। মানে ধাক্কা খেলে ওই কিনার থেকে হাস্না হেনা, চামেলি, গোলাপ, বেলি, চন্দ্রমল্লিকার মধ্যে পড়ে যাবেন। আপনারা এমন একটি কিনারে দাঁড়িয়ে আছেন, শুধু ছোট্ট একটা ধাক্কা খেলেই সিটি করপোরেশনের ডাস্টবিনের মধ্যে পড়ে যাবেন- এটা মনে রাখবেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। এখন চোরাবালির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। যখন পা-হাতটা ছুটে যাবে তখন একেবারে অতলে চলে যাবেন।’

মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজুর সভাপতিত্বে আলোচনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহ-সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ মহানগর উত্তরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর