হাওর বার্তা ডেস্কঃ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যকে ‘আহাম্মকদের’ মতো মিথ্যাচার হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ইউনেস্কো এই ভাষণের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে বিএনপি নেতারা গাত্রদাহ থেকে উল্টাপাল্টা বকছেন। কারণ তারা এই ভাষণের প্রচার দীর্ঘদিন তারা বন্ধ করে রাখতে রেখেছিলেন। আজ দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।
সম্প্রতি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। আর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সরকার এবং আওয়ামী লীগ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ইউনেস্কোর সিদ্ধান্তে এত উচ্ছ্বাসের সমালোচনা করছে বিএনপি। গত ২৫ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, আনন্দ উদযাপনে যোগ দিতে চাকরিজীবীদের বেতন কাটার হুমকি দিচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, ‘৭ মার্চের যে ভাষণ নিঃসন্দেহে তা ঐতিহাসিক। ইউনেস্কোর একটা তালিকায় এই ভাষণ যুক্ত হয়েছে। খুব ভালো কথা। অস্বীকার কে করেছে? আপনারা এতো বছর পরে হঠাৎ ঢাকঢোল পিটিয়ে নামছেন, তখন কিন্তু দেশের মানুষ কষ্টে আছে।’
পরদিন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘কবে কোন কালে কে বক্তৃতা করেছিল, তা নিয়ে কি মাতামাতি? সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাস্তায় নামিয়ে নৃত্য করতে বাধ্য করা হলো। এর ফল ভালো হবে না।’
মীর্জা ফকরুলের বক্তব্যের সমালোচনায় হাছান বলেন, ‘আমরা এতদিন ধরে বলে আসছি বিএনপি ইতিহাস বিকৃত করেছে, বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে নির্বাসিত করার চেষ্টা করেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম তার বক্তব্যের মাধ্যমে আগের করা অভিযোগগুলোকে আরও খোলাসা করেছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি ও তার মিত্ররা বছরের পর বছর এই ভাষণ অস্বীকার করে আসছে। সেটি যখন আজ জাতিসংঘ থেকে স্বীকৃতি পেল, তখন তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। তাই তারা উল্টাপাল্টা বকছেন।’
‘বিএনপি নেতাদের বলব আহাম্মকের মত মিথ্যাচার করবেন না।’
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘যতদিন বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, ততদিন রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্রে ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো নিষিদ্ধ ছিল। তারা ক্রমাগতভাবে ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়েছে, ইতিহাসকে অস্বীকার করেছে। এখন তারা বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকেও অস্বীকার করছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতি আওয়ামী লীগের অর্জন নয়, এটা জাতির অর্জন, রাষ্ট্রের অর্জন। সে কারণেই জাতির বিভিন্ন স্তরের মানুষ, রাষ্ট্রের কর্মকর্তা কর্মচারীরা স্বাগত জানাচ্ছে।
গত ২৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কর্মসূচির বিষয়ে হাছান বলেন, ওটা আওয়ামী লীগের কোন দলীয় কর্সসূচি ছিল না। সেখানে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন নেতা বক্তব্য দেননি, সেখানে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা বক্তব্য দিয়েছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে প্রস্তুতি নেয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য নিয়েও কথা বলেন হাছান। বলেন, ‘ইদানীং তিনি (রিজভী) কথাবার্তা শালীনতা হারিয়েছে। তিনি অশালীনভাবে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে যে কথা বলেন আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। তার কথাগুলো বদ্ধ উন্মাদের প্রলাপের মত।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ দপ্তর সস্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার উপ কমিটির সদস্য রাশেদুল ইসলাম রাসেল প্রমুখ।