হাওর বার্তা ডেস্কঃ বরশি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দ ভরিয়ে রাখে তাকে। সকাল আসলেই নাস্তা সেরে মধ্য হাইল-হাওরে ছুটে যান। বরশি পেতে মাছের নেশায় বসে থাকেন বকধ্যানে। মিষ্টি রোদের ঝলকানি সঙ্গী করে মাছের খোঁজে এভাবেই তার প্রাত্যহিক ছুটে যাওয়া। দুপুরে গড়াতেই থলি ভরে উঠে নানান প্রজাতির দেশি মাছে। থলি ভরে যাওয়া মাছের ‘ঝলৎ’ শব্দে বারবার নেচে ওঠে তার হৃদয়।
তবে এখন তিনি হতাশ। তার সেই ব্যক্তিগত হতাশা আজ রূপ নিয়েছে ক্ষোভে। কারণ, এখন আর তিনি থলি ভরে মাছ ধরতে পারেন না। প্রিয় মাছের পরশে চমকে উঠে না মন। সারাটি দিন গড়িয়ে গেলেও একটি মাছও ওঠে না বরশিতে।
সৌখিন মাছ শিকারীর নাম শেখ মোহাম্মদ সালিক। বরশি দিয়ে মাছ ধরা যার অদম্য নেশা। প্রতিদিন এভাবে মাছ ধরার টানেই প্রায় দুই কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে হাইল হাওরে ছুটে যান আধা ডজন বরশি কাঁধে করে।
তিনি যে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন তা আসলে নয়। তার প্রচণ্ড ভালো লাগে মাছ ধরতে। বরশিতে বিঁধে যাওয়া মাছ পানি থেকে ডাঙায় তুলে আনার নেশাটি তার বহু পুরোনো।
প্রতিদিন তার মৎস্য প্রাপ্তির পরিমাণ পাঁচ থেকে আট কেজি পর্যন্ত। আর সময়সীমা চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা। রুই, কাতল, কালিয়ারাসহ নানা প্রজাতির মাছ তার বরশিতে বিঁধতো। কিন্তু আজ তিনি শূন্য। ওই চার-পাঁচ ঘণ্টা বসে থেকে একটি মাছও তিনি তার বরশিতে বেঁধাতে পারেননি।
গত (১৫ নভেম্বর) দুপুরে হাইল হাওরের শ্রীমঙ্গল উপজেলার লামুয়া নামক এলাকায় গেলে দেখা হয় শেখ মোহাম্মদ সালিকের সাথে।
তিনি হাওর বার্তাকে বলেন, ‘আমি একজন সাধারণ মানুষ। শখের বসে মাছ মেরে খাই। গত ১৫ দিন ধরে আমি এখানে নিয়মিত বরশি দিয়ে মাছ মারি। প্রতিদিন ৫/৭ কেজি মাছ পাই। কিন্তু আজ একটি মাছও পাইনি। গত রাতে (১৪ নভেম্বর) আশিক মিয়ার পাট্টার জায়গায় অবস্থিত মাছের খামারে কে বা কারা বিষ দিয়ে সব মাছ মেরে ফেলেছে। আজ একটি মাছও নাই। একটি ছোট্ট দাড়কিনা মাছও নাই। এটা কি ঠিক হলো ? আমরা এই এলাকাতেই মাছ ধরি। এইভাবে হলে গরিব মানুষ বাঁচবে কি ।