সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেই মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ও বর্তমান প্রাইভেটাইশেন কমিশনের চেয়ারম্যান মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান। কিন্তু তিনি বিসিএস পরীক্ষার নির্ধারিত ফরমে মুক্তিযোদ্ধার কলামে মুক্তিযোদ্ধা বলে নিজেকে উল্লেখ করেননি। তাই তার নেয়া সনদ ভুয়া প্রমাণ করে তা বাতিল করে দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, প্রজাতন্ত্রের মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারীর অবসরের বয়স বাড়ানোর জন্য ২০১০ সালে গণকর্মচারী অবসর আইন-১৯৭৪ সংশোধন করা হয়। কিন্তু কী ভাবে মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারী চিহ্নিত করা হবে তা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব থাকা অবস্থায় চারটি নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করেন।
এ নির্দেশনার প্রথমটি ছিল যে ব্যক্তি চাকরিতে প্রবেশকালে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে ঘোষণা করেননি, তিনি অবসরের বয়স বৃদ্ধির সুযোগ পাবেন না। অর্থাত্, তিনি মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারী হিসাবে গণ্য হবেন না। এ শর্তেই ফেঁসে গেলেন মোল্লা ওয়াহেদুজ্জামান।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক রবিবার মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন মোল্লা ওয়াদুেজ্জামানের মুক্তিযোদ্ধার সনদ ভুয়া। এরই মধ্যে তা বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামানের বক্তব্য বিবেচনায় আমরা সে সময় সনদ বাতিল না করে স্থগিত করেছিলাম। তাকে শুনানিরও সুযোগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা, তার সপক্ষে কোনো যুক্তি তুলে ধরতে না পারায় তার সনদ বাতিল করা হয়েছে।’
এর আগে সরকারের তিন সচিব ও একজন যুগ্ম সচিবের মুক্তিযোদ্ধা সনদ ভুয়া বলে তা বাতিল করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া বর্তমান একটি সরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্টিত পূর্বে যিনি প্রশাসনের সর্বোচ্চ শীর্ষ পদে আসীন ছিলেন তার মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। কারণ, তিনিও চাকরিতে প্রবেশকালে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা দেননি।
এরই মধ্যে রূপালী ব্যংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফরিদউদ্দিনের মুক্তিযোদ্ধার সনদ জাল প্রমাণিত হওয়ায় তা বাতিল করা হয়। তার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য দুদককে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।