হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলাতে একটি ধানে দুটি চাল জাতের ধানের চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন এক কৃষক। এ জাতীয় ধানচাষের করা শুনে অনেকেই কৌতূহলবশত ধান দেখা ও কৃষকের সঙ্গে দেখা করতে অনেকেই ভিড় করছেন।
ওই কৃষকের বাড়ি গোদাগাড়ী সদর হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে মাটিকাটা ইউনিয়নের চোদুয়ার গাধাবাড়ী গ্রাম। তিনি মো. আইনাল হকের ছেলে কৃষক আসাদুল (৪০)। এমন ধান ৫ কাঠা জমিতে চাষ করেছেন তিনি।
সরেজমিন দেখা যায়, কৃষক আসাদুলের বাড়ির সামনে রাস্তার পাশেই মাত্র ৫ কাঠা জমিত এই ধানের চাষ করেছেন। ধানের চারাগুলো বেশ উঁচু প্রায় ৭ ফুটের অধিক হবে। আর ধানের আকার মোটা আকৃতির।
কৃষক আসাদুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার জামাই ঢাকায় কাজ করতে গিয়ে এই ধানের বীজ নিয়ে এসে জমিতে লাগিয়েছেন। তবে ধানের জাতের নাম বলতে পারেননি। মাত্র ৫ কাঠা জমিতে ধান লাগানের পর পরিচর্যায় ধানের গাছও বেশ তরতাজা ও উঁচু প্রায় ৭ ফুটের মতো বড় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই দুই-তিন আবহাওয়া বৈরী হওয়ার কারণে ধানের চারা মাটিতে পড়ে যায় ফলে ধানের ফলন কমে যাবে বলে জানান। আবহাওয়া খারাপ না হলে ধানের ফলন ও চারাও বেশ ভালো হতই বলে জানান।
আসাদুল ইসলামের জামাই সাদ্দামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি লেখা পড়ার পাশাপাশি কৃষি কাজের সাথে যুক্ত এবার এইচএসসি পাস করে ডিগ্রিতে ভর্তি হবো। এক বছর আগে আমি জননী কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরি নিয়ে ঢাকার সদর ঘাটে ছিলাম। সেখানে জানতে পারলাম যে একটি ধানের মধ্যে দুটি চাল হয়। শুধুমাত্র এ কথাটির প্রতি আকর্ষণ হয়ে আমি ধানের বীজ সংগ্রহ করি। তবে কি জাতের ধান তা বলতে পারব না।
এই ধান দুইবার লাগিয়েছি কিন্তু সঠিক পরিচর্যার কারণে ধান ভালো করতে পারিনি। তবে এবার আমার শ্বশুর লাগিয়ে ভালোই করে ছিলো কিন্তু হঠাৎ আবহাওয়া খারাপের কারণেই ফলন কমে গেছে। সাদ্দাম হোসেন আশাবাদি নতুন এ ধান কৃষি অধিদপ্তর হতে সঠিক তদারকি ও কৃষকদের দিক নির্দেশনা দিলে এ ধানের ফলন ভালো হবে বলে মন্তব্য করেন। এবার মাত্র ৫ কাঠা জমিতে মাত্র দেড় হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান।
তিনি আরো জানান, এই ধানের চাল খুব সুস্বাদু। পোলাওয়েরর চালের মতো সুগন্ধি। খেতেও খুব সুস্বাদু। ঢাকার সদরঘাট এলাকায় পোলাও এর চালের বিকল্প হিসেবে খেয়ে থাকে। সাদ্দাম হোসেনের বাড়ি উপজেলার কাদিপুর গ্রামে। তার বাবা মোয়াজ্জেম আলী।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌফিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি ধানে দুটি চাল হয় এমন ধান আবাদের কথা শুনেছি।
কীভাবে এমন ধানের আবির্ভাব ও ধানের জাতের নাম কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে এমন ধান বের হয়নি বা সন্ধান পাওয়া যায়নি। প্রকৃতিগতভাবে পরাগায়ন হয়ে ধানটি হঠাৎ হয়ে গেছে। তবে ধানটি ক্রমাগত কয়েকবার চাষ করে দেখলে বোঝা যাবে এ ধানের স্থায়িত্ব কেমন হবে।