ঢাকা ১১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিনজা-হটকুইনে মড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৬:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায় ফুলকপিতে মড়ক লেগেছে। পুষ্ট হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে ফুলকপি। এতে চরম লোকসানের মুখে পড়েছে ওই উপজেলার কৃষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলার ভোমরাডাঙ্গার গ্রামের মাঠে পরিপক্ক হওয়ার আগেই কৃষকরা তাদের ক্ষেত থেকে ফুলকপি কেটে বিক্রি করছেন। মাঠের বেশিরভাগ জমিতে চলছে এই ফুলকপি কাটার কাজ।

ওই গ্রামের কৃষক বাবলু জানান, প্রায় ২০ বছর তাদের এলাকায় ফুলকপিসহ নানা সবজির চাষ হয়। তবে এ বছর বেশি ফুলকপির চাষ হয়েছে।  নিনজা আর হটকুইন নামের দুই জাতের কপি বেশি চাষ হয়েছে।  আর দুই জাতের কপিতেই মড়ক বেশি লেগেছে।

তিনি জানান, আগস্ট মাসের শেষ দিকে তারা চারার জন্য বীজতলায় বীজ ফেলেন। এর ২৫ থেকে ৩০ দিন পর সেই বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করেন।  এই রোপণের দুই মাসের মধ্যে কপি কাটা শুরু হয়। চলে আরও এক মাস। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর কপি বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার। এখন তারা ফুলকপি পাচ্ছেন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার।

আরেক কৃষক নজির উদ্দিন জানান, শীতকালীন এই কপির চাষ লাভজনক হওয়ায় তাদের এলাকায় ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি নিজেও এ বছর ১৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন।

তিনি জানান, পার্শ্ববর্তী দুইটি মাঠে তার কপির চাষ রয়েছে।  কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে ভোমরাডাঙ্গা মাঠে।  একই নিনজা বীজ ব্যবহার করেছেন তিনি। কিন্তু এই মাঠে সমস্যা হলেও অন্য মাঠে ভালো আছে।

তিনি আরও জানান, এ বছর শুধু ভোমরাডাঙ্গা গ্রামেই ৩ শত বিঘা জমিতে এই ফুলকপির চাষ হয়েছে। যার বেশিরভাগ ক্ষেতের ফসলেই এই রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কৃষক আরমান আলী জানান, ১৫ দিন পূর্বেও তাদের ক্ষেত ভালো ছিল। এরপর হঠাৎ করেই দেখতে পান গাছগুলো শুকিয়ে আসছে। গাছের পাতা ঝরে পড়ছে। গাছগুলোতে থাকা কপি বড় হচ্ছে না। মাত্র ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে গোটা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ।

তিনি জানান, তার ক্ষেতের ফুলকপি কমপক্ষে এক কেজি ওজন হবার কথা।  সেখানে ৪ থেকে ৫ শত গ্রাম ওজন হচ্ছে। এই অবস্থায় গাছগুলো মরে কপি নষ্ট হতে পারে এই আশঙ্কায় সব কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন।  তবে তার ক্ষেতে কী রোগ দেখা দিয়েছে সেটা বুঝতে পারছেন না।  এই রোগ দেখা না দিলে বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করতে পারতেন।

কৃষকরা অভিযোগ করেন, এই সমস্যার কারণ কী তা জানানোর মতো কোনো লোক তারা খুঁজে পাচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক জিএম আব্দুর রউফ জানান, তিনি এই জেলাতে নতুন যোগদান করেছেন। বিষয়টি এখনও তাকে কেউ অবহিত করেনি। তবে এই অবস্থা হবার কারণ অসম সারের ব্যবহার। এছাড়াও এটা মাটির কোনো সমস্যায় হতে পারে।  তিনি দ্রুতই খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নিনজা-হটকুইনে মড়ক, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক

আপডেট টাইম : ১১:৪৬:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায় ফুলকপিতে মড়ক লেগেছে। পুষ্ট হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে ফুলকপি। এতে চরম লোকসানের মুখে পড়েছে ওই উপজেলার কৃষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলার ভোমরাডাঙ্গার গ্রামের মাঠে পরিপক্ক হওয়ার আগেই কৃষকরা তাদের ক্ষেত থেকে ফুলকপি কেটে বিক্রি করছেন। মাঠের বেশিরভাগ জমিতে চলছে এই ফুলকপি কাটার কাজ।

ওই গ্রামের কৃষক বাবলু জানান, প্রায় ২০ বছর তাদের এলাকায় ফুলকপিসহ নানা সবজির চাষ হয়। তবে এ বছর বেশি ফুলকপির চাষ হয়েছে।  নিনজা আর হটকুইন নামের দুই জাতের কপি বেশি চাষ হয়েছে।  আর দুই জাতের কপিতেই মড়ক বেশি লেগেছে।

তিনি জানান, আগস্ট মাসের শেষ দিকে তারা চারার জন্য বীজতলায় বীজ ফেলেন। এর ২৫ থেকে ৩০ দিন পর সেই বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করেন।  এই রোপণের দুই মাসের মধ্যে কপি কাটা শুরু হয়। চলে আরও এক মাস। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর কপি বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার। এখন তারা ফুলকপি পাচ্ছেন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার।

আরেক কৃষক নজির উদ্দিন জানান, শীতকালীন এই কপির চাষ লাভজনক হওয়ায় তাদের এলাকায় ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি নিজেও এ বছর ১৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন।

তিনি জানান, পার্শ্ববর্তী দুইটি মাঠে তার কপির চাষ রয়েছে।  কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে ভোমরাডাঙ্গা মাঠে।  একই নিনজা বীজ ব্যবহার করেছেন তিনি। কিন্তু এই মাঠে সমস্যা হলেও অন্য মাঠে ভালো আছে।

তিনি আরও জানান, এ বছর শুধু ভোমরাডাঙ্গা গ্রামেই ৩ শত বিঘা জমিতে এই ফুলকপির চাষ হয়েছে। যার বেশিরভাগ ক্ষেতের ফসলেই এই রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

কৃষক আরমান আলী জানান, ১৫ দিন পূর্বেও তাদের ক্ষেত ভালো ছিল। এরপর হঠাৎ করেই দেখতে পান গাছগুলো শুকিয়ে আসছে। গাছের পাতা ঝরে পড়ছে। গাছগুলোতে থাকা কপি বড় হচ্ছে না। মাত্র ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে গোটা মাঠে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ।

তিনি জানান, তার ক্ষেতের ফুলকপি কমপক্ষে এক কেজি ওজন হবার কথা।  সেখানে ৪ থেকে ৫ শত গ্রাম ওজন হচ্ছে। এই অবস্থায় গাছগুলো মরে কপি নষ্ট হতে পারে এই আশঙ্কায় সব কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন।  তবে তার ক্ষেতে কী রোগ দেখা দিয়েছে সেটা বুঝতে পারছেন না।  এই রোগ দেখা না দিলে বিঘায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার কপি বিক্রি করতে পারতেন।

কৃষকরা অভিযোগ করেন, এই সমস্যার কারণ কী তা জানানোর মতো কোনো লোক তারা খুঁজে পাচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক জিএম আব্দুর রউফ জানান, তিনি এই জেলাতে নতুন যোগদান করেছেন। বিষয়টি এখনও তাকে কেউ অবহিত করেনি। তবে এই অবস্থা হবার কারণ অসম সারের ব্যবহার। এছাড়াও এটা মাটির কোনো সমস্যায় হতে পারে।  তিনি দ্রুতই খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।