BANGLADESH, Cox's Bazar: People belonging to the ethnic minority Rohingyas of Myanmar (Burma) cross the Bangladesh border to arrive at the Balukhali camp in Cox's Bazar, Bangladesh on September 07, 2017. The refugees cross over to Bangladesh as violence against the community escalates. (AAP Image/NEWZULU/Parvez Ahmad).

রোহিঙ্গাদের চাপ খুব বেশি পোহাতে হচ্ছে না

হাওর বার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমার থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল ততটা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। রোহিঙ্গাদের কারণে আগামী বাজেটে তেমন কোনো চাপ পড়বে না বলেও জানানা মন্ত্রীা । আজ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে এডিবির এশিয়া অঞ্চল বিষয়ক মহাপরিচালক হুন কিনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে রোহিঙ্গা বিষয়েও কথা হয়।

গত আগস্ট মাসের শেষ দিকে মিয়ানমারের রাখাইনে নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার অজুহাতে রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক হত্যা ও নিপীড়ন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা। নির্যাতনের মুখে বানের স্রোতের মতো সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে থাকে। মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়।

গত কয়েক মাসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নিয়েছে। আগে থেকে বাংলাদেশে আছে চার থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা এখন কক্সবাজারে অবস্থান করছে। সরকার কূটনৈতিক উপায়ে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকেও দাবি উঠেছে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার।

বিশাল এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জাতীয় বাজেটে কোনো চাপ ফেলবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘তেমন একটা প্রভাব ফেলছে না। শুরুতে ভেবেছিলাম তারা আমাদের বাজেট তছনছ করে দেবে। কিন্তু এখন বলা যায় তেমন সমস্যা হচ্ছে না।’

কারণ হিসেবে মন্ত্রী বলেন, ‘তাদের খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলো সহায়তা করছে। তাই আমাদের খুব বেশি চাপ পোহাতে হচ্ছে না।’

মুহিত বলেন, ‘তবে সেখানে আমাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তাদের কিছু চাহিদার বিষয়ে তারা জানাচ্ছে। আমরা সেগুলোর ব্যবস্থা করছি। তবে এর পরিমাণ খুব বেশি নয়।’

মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবির কাছ থেকে অর্থ পেতে প্রকল্প তৈরি করছে সরকার। এ লক্ষ্যে কী পরিমাণ অর্থ লাগবে সেটিও এস্টিমেট করা হচ্ছে। অর্থসচিবকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি ১০/১৫ দিনের মধ্যে হিসাব দেবেন।

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির দক্ষিণ এশীয় মহাপরিচালকের বৈঠকে বাংলাদেশকে আগামী পাঁচ বছরে আট বিলিয়ন ঋণ সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার বিষয়টিও উঠে আসে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ চাইলে এডিবি রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা তহবিল দিতে প্রস্তুত আছে বলে জানান হুন কিম। পরে তিনি সাংবাদিকদেরও এ বিষয়ে অবহিত করেন।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য এডিবির কাছে সহায়তা চাইবো। রোহিঙ্গা ইস্যুতে এর আগে আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছেও সহায়তা চেয়েছি। এজন্য প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসাকে অগ্রাধিকার দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকল্প তৈরি করছে। তবে আমরা ধীরগতিতে এগুচ্ছি। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে কী অগ্রগতি হয় তা পর্যবেক্ষণ করেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর