পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে আরও বেশি জোর দেওয়া হবে

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, তার মন্ত্রণালয় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে এই মন্ত্রণালয়ের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। তার লক্ষ্য হচ্ছে, এই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দেশের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে আরও বেশি জোর দেওয়া। এ মন্ত্রণালয়ের নামই হচ্ছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এর পরিধি কিন্তু ১৬ কোটি মানুষ। আমরা যদি স্থানীয় সরকারের কথা বলি তাহলে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন এই মন্ত্রণালয়ের অধীন। একটা দেশের সরকার বলতে যেটা বোঝায় সেটা হচ্ছে এই মন্ত্রণালয়। পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের অস্তিত্ব নেই। এই মন্ত্রণালয় এলজিইডির মাধ্যমে সারা দেশে তিন লাখ ১০ হাজার কিলোমিটার রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করছে। এর মধ্যে এক লাখ পাঁচ হাজার কিলোমিটারই পাকা বা পিচ ঢালা রাস্তা। অবকাঠামোর ক্ষেত্রে এই মন্ত্রণালয়ের অবদান নিঃসন্দেহে সর্ববৃহৎ। এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের পদ্ধতি বের করার চেষ্টা করছেন তারা। আর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের যেসব প্রতিনিধিকে ইতিমধ্যে বরখাস্ত বা সাময়িক অপসারণ করা হয়েছে, তাদের কাউকেই অন্যায়ভাবে অপসারণ করা হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নিজ দফতরে বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন তিনি। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তার কাছে সব কয়টা মন্ত্রণালয় সমান গুরুত্বপূর্ণ। এলজিআরডি মন্ত্রণালয় হচ্ছে তার পুরনো জায়গা। তিনি বলেন, এলজিইডি ডিপার্টমেন্টটা আমারই তৈরি করা। শুধু তৈরি করা নয়, এলজিইডির জন্মলগ্ন থেকেই আমি এর সঙ্গে জড়িত। এই মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ড আমার কাছে নতুন কিছু নয়। এই মন্ত্রণালয়ের সব বিষয়ের সঙ্গে আমি পরিচিত। কাজেই আমি এই মন্ত্রণালয়ে খুবই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি। ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্প প্রসঙ্গে মোশাররফ হোসেন বলেন, এই প্রকল্প এখন পর্যন্ত আদর্শচ্যুত হয়নি। এটি একটি সঞ্চয়মুখী প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে একটা বিরাট অঙ্কের সঞ্চয় তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা ব্যাপক বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, এই প্রকল্প নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা বিচারের বিষয়। তবে ঢালাওভাবে বলা যাবে না যে, সব জিনিসই অপচয় হয়েছে। যেটা বিচার করতে হবে সেটা হচ্ছে- এর উদ্দেশ্যটা কতখানি সফল হয়েছে। আমার কাছে যেটা আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছে, এটার বড় দুর্বলতা এই প্রকল্পে মানুষের যথেষ্ট সম্পৃক্ততা নেই। যেখানে যে এলাকায় এই প্রকল্প করা হচ্ছে সেখানে ওই ৪০-৫০ মানুষের বাইরে আর কেউ প্রকল্প সম্পর্কে জানে না। আমার টার্গেট হবে এটিকে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়া এবং স্বতঃস্ফুর্তভাবে মানুষকে সম্পৃক্ত করা। আর এই প্রকল্পের পিডির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সেগুলো আমরা তদন্ত করে দেখব। যদি কোনো দুর্নীতি অনিয়ম পাই তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তার দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজনৈতিক বিদ্বেষ নিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাউকে বরখাস্ত বা অপসারণ করা হয়নি। এ অভিযোগ একেবারেই সঠিক নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংশ্লিষ্ট আইনের মাধ্যমেই অপসারণ বা বরখাস্ত করা হয়। এখানে দলবাজি করার কোনো সুযোগ নেই। যে নির্বাচিত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ আছে, আদালতে চার্জশিট হয়, ওয়ারেন্ট ইস্যু হয় তখন তাকে ক্ষমতায় রাখার মতো আইনি কোনো সুযোগ আমাদের থাকে না। চার্জশিট হলেই আমরা তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে আইনগতভাবে বাধ্য। এর মধ্যে অন্য কোনো ইস্যু নেই। মন্ত্রণালয় নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের কাজ একেবারে সুনির্দিষ্ট। তবে সাধারণভাবে বলতে গেলে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে অবশ্যই জোর দিতে হবে। এরপর গ্রামীণ অর্থনীতিকে সফল করতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর জোর দিতে হবে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের ওপর যথার্থ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ ছাড়া অন্যান্য কো-অপারেটিভকে সচল করা, জনগণকে সম্পৃক্ত করা। জনগণের সহযোগিতায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সুষ্ঠু রাখার কাজেও আমি গুরুত্ব দিচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর