ঢাকা ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছেড়ে দেয়া আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৭
  • ২৩৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এরশাদ সরকারের পতনের পর নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে জাতীয় পার্টির রাজনীতি বিলীন হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে জাতীয় পার্টি ভবিষ্যতে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে তা কেউ ভাবতে পারেনি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সমঝোতার নির্বাচনের কারণে সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পার্টি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। মহাজোটের রাজনীতির কারণে আওয়ামী লীগকে এ আসনটি জাতীয় পার্টির জন্য ছাড় দিতে হয়েছে। ফলে বিনা ভোটে সোনারগাঁওবাসী অপরিচিত এক নতুন মুখকে এমপি হিসেবে পেয়েছে। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁও আসনের বিনা ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয়ায় সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই বিনা ভোটে ছেড়ে দেয়া আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত দু’দলেই কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে। এ আসনে জাতীয় পার্টির মধ্যে প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি না থাকলেও রয়েছে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার। একটি পৌরসভা এবং ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসন।

আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে ৭ জন এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। পাশাপাশি বিএনপি থেকেও ৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন। জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার পাশাপাশি জাতীয় পার্টির থেকে আরো দু’জন আগামীতে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

আওয়ামী লীগ: আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, তার চাচা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডাক্তার আবু জাফর চৌধুরী বিরু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া ও লন্ডন প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম দলের মনোনয়ন প্রত্যাশায় এলাকার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। তাদের পদচারণায় সোনারগাঁওয়ের নির্বাচনী মাঠে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি: আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করে এলাকায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ওয়ালিউর রহমান আপেল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল হক আজিজ।

জাতীয় পার্টি: জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ছাড়াও কেন্দ্রীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পালিত কন্যা অনন্যা হুসেইন মৌসুমী, সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন।

বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেও নিজের ইমেজ এবং সোনারগাঁওয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে পারেননি জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হওয়া লিয়াকত হোসেন খোকা। নানা বিতর্ক তাকে আষ্টেপিষ্টে বেঁধে ফেলেছে। নিজের এবং নিজের পরিবারের সদস্যদের কারণে হয়েছেন ব্যাপক সমালোচিত। নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে সোনারগাঁওয়ের একদল সুবিধাভোগী আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে জোট গড়ে তুলেছেন।

বর্তমান জাতীয় পার্টির এমপির বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপথের জমি দখল, সরকারি সোলার প্যানেল স্থাপনের টাকা আত্মসাৎ, মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলণকারীদের প্রশ্রয় দেয়া, উপজেলার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ঠিকাদারী সমিতি গঠন, সোনারগাঁও শিল্পাঞ্চলে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়ারম্যান ফোরাম গঠনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি হওয়ার পর তার ছোট ভাই মনির হোসেনও এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তার বিরুদ্ধে মাদকের চালান নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়া, মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ একাধিক ত্যাগী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হয়ে লিয়াকত হোসেন খোকা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের কাছে টেনে নেন। তাদের নিয়েই তিনি সব ধরনের অপকর্ম করছেন। এ সব কারণে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এসব দলছুট নেতাদের কারণে ক্রমান্বয়ে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের একটাই দাবি, আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার প্রার্থী চাই। যাকেই নৌকার প্রার্থী দেবে তার পক্ষে সোনারগাঁও আওয়ামী লীগ থাকবে।

তবে বর্তমান জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি গত পৌনে ৪ বছরে অনেক উন্নয়ন করেছি। সামনেই আবার সংসদ নির্বাচন। একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
তবে আওয়ামী লীগ থেকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের মধ্যেও রয়েছে কোন্দল। যে কারণে সোনারগাঁও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভক্ত হয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। একে অন্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল-কায়সার হাসনাত বলেন, তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে দলের নেতা কর্মীদের গুছিয়ে নিচ্ছেন। তিনি উপজেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে সোনারগাঁও থেকে আবারো নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ গঠনের পেছনে বাংলাদেশের হাতে গোনা যে কয়েকটি পরিবারের অবদান ছিল তার মধ্যে হাসনাত পরিবার রয়েছে। আমি সেই পরিবারের একজন সদস্য। আগামী নির্বাচনে ভাতিজা আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের পাশাপাশি আমিও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তে জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয়া হয়। আমাকে কেন্দ্রের নির্দেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছিল। ভাতিজা কায়সার হাসনাত যদি আগামীতে কোনো কারণে মনোনয়ন না পায় তাহলে এ পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি মনোনয়ন পাবো বলে বিশ্বাস করি।

সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম বলেন, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হতে কেন্দ্রে লবিং করে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল বলেন, আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময় থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত জানিয়ে বলেন, এ আসনে রাজনৈতিকভাবে ক্লিন ইমেজের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে তিনি কাজ করছেন। আশা করছেন দল তাকে মনোনয়ন দেবেন।

ডাক্তার আবু জাফর চৌধুরী বিরু আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে জানান, নৌকা প্রতীকের মনোনয়নের জন্য মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া। আগামী সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের তিনিও একজন সম্ভাব্য প্রার্থী।

সোনারগাঁওয়ের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ৭ জনের নাম শোনা গেলেও মূলত আলোচনায় ৩ প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, তার চাচা মোশারফ হোসেন এবং এএইচএম মাসুদ দুলালই হচ্ছেন প্রকৃত প্রার্থী। বাকিরা এই ৩ জনকে সমর্থন দেবেন।

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও বসে নেই। তারা নিজ নিজ অনুসারি নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে কাজ রয়েছেন। সোনারগাঁওয়ে বিএনপিতে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব না থাকলেও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা রয়েছে। এখানে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম জানান, এ আসনে থেকে তিনি চারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এমপি থাকাবস্থায় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক দফতরে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সময়ে সোনারগাঁওয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। তিনি এমপি থাকাকালে এলাকার যেসব রাস্তাঘাট নির্মাণ করেছেন পরবর্তী সময়ে নতুনভাবে আর কোনো রাস্তাঘাটে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি বলে দাবি করেছেন।

অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেন, আমি সোনারগাঁওয়েরই সন্তান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।

বিএনপির আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান জানান, ১/১১’র সেনা শাসিত সরকারের সময় দলের দুঃসময়ে সোনারগাঁও বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফরকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেছি। বর্তমানে সোনারগাঁওয়ে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলছি। সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করেছি। ফলে আমি ও আমার নেতাকর্মীরা ১০-১২টি মামলার আসামি হয়েছি। আশা করি দল আমার কাজের মূল্যায়ন করে আমাকে মনোনয়ন দেবে।

সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর জানান, আগামী নির্বাচনে আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। আশা করি দল আমাকে বিমুখ করবে না।

মনোনয়ন প্রত্যাশী ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল জানান, আমি ৮ম শ্রেণি থেকে ছাত্রদলের রাজনীতির মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি। আশা করি দল আমাকে মূল্যায়ন করবেন।

এদিকে এ আসনটিতে বর্তমানে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি হিসেবে রয়েছেন।
লিয়াকত হোসেন খোকা দাবি করে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সোনারগাঁয়ে যত এমপি হয়েছেন তাদের সবার চেয়ে আমি বেশি উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আমি রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজের ভবন নির্মান, ব্রীজ, কালভার্টসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। এ উন্নয়ননের ধারা এখনো অব্যাহত আছে।

জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকার পাশাপাশি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পালিত কন্যা ও কেন্দ্রীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসেইন মৌসুমী বলেন, সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পার্টির এমপি থাকলেও তিনি আসলে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেন। সব কাজ করেন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে। এমনকি ব্যানার ফেস্টুনেও থাকে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবি। সেখানে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কোনো স্থান নেই। এমপি হওয়ার পর তিনি এখানে দলকেও সংগঠিত করেননি। মৌসুমী দাবি করেন, তিনিই সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনিই এখনো সোনারগাঁও জাতীয় পার্টির সভাপতি। আগামীতে দল তাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মানবকণ্ঠ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছেড়ে দেয়া আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া

আপডেট টাইম : ১২:৪০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এরশাদ সরকারের পতনের পর নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনে জাতীয় পার্টির রাজনীতি বিলীন হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে জাতীয় পার্টি ভবিষ্যতে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারবে তা কেউ ভাবতে পারেনি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সমঝোতার নির্বাচনের কারণে সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পার্টি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। মহাজোটের রাজনীতির কারণে আওয়ামী লীগকে এ আসনটি জাতীয় পার্টির জন্য ছাড় দিতে হয়েছে। ফলে বিনা ভোটে সোনারগাঁওবাসী অপরিচিত এক নতুন মুখকে এমপি হিসেবে পেয়েছে। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁও আসনের বিনা ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয়ায় সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কিন্তু আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই বিনা ভোটে ছেড়ে দেয়া আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত দু’দলেই কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে। এ আসনে জাতীয় পার্টির মধ্যে প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি না থাকলেও রয়েছে একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৮০ হাজার। একটি পৌরসভা এবং ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসন।

আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেতে ৭ জন এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। পাশাপাশি বিএনপি থেকেও ৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন। জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার পাশাপাশি জাতীয় পার্টির থেকে আরো দু’জন আগামীতে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

আওয়ামী লীগ: আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, তার চাচা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল, সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ডাক্তার আবু জাফর চৌধুরী বিরু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া ও লন্ডন প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম দলের মনোনয়ন প্রত্যাশায় এলাকার সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। তাদের পদচারণায় সোনারগাঁওয়ের নির্বাচনী মাঠে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি: আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করে এলাকায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ওয়ালিউর রহমান আপেল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল হক আজিজ।

জাতীয় পার্টি: জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা ছাড়াও কেন্দ্রীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পালিত কন্যা অনন্যা হুসেইন মৌসুমী, সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন।

বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেও নিজের ইমেজ এবং সোনারগাঁওয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে পারেননি জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হওয়া লিয়াকত হোসেন খোকা। নানা বিতর্ক তাকে আষ্টেপিষ্টে বেঁধে ফেলেছে। নিজের এবং নিজের পরিবারের সদস্যদের কারণে হয়েছেন ব্যাপক সমালোচিত। নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে সোনারগাঁওয়ের একদল সুবিধাভোগী আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে জোট গড়ে তুলেছেন।

বর্তমান জাতীয় পার্টির এমপির বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপথের জমি দখল, সরকারি সোলার প্যানেল স্থাপনের টাকা আত্মসাৎ, মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলণকারীদের প্রশ্রয় দেয়া, উপজেলার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে ঠিকাদারী সমিতি গঠন, সোনারগাঁও শিল্পাঞ্চলে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়ারম্যান ফোরাম গঠনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি হওয়ার পর তার ছোট ভাই মনির হোসেনও এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তার বিরুদ্ধে মাদকের চালান নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়া, মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ একাধিক ত্যাগী নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জাতীয় পার্টি থেকে এমপি হয়ে লিয়াকত হোসেন খোকা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের কাছে টেনে নেন। তাদের নিয়েই তিনি সব ধরনের অপকর্ম করছেন। এ সব কারণে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এসব দলছুট নেতাদের কারণে ক্রমান্বয়ে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের একটাই দাবি, আগামী নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার প্রার্থী চাই। যাকেই নৌকার প্রার্থী দেবে তার পক্ষে সোনারগাঁও আওয়ামী লীগ থাকবে।

তবে বর্তমান জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি গত পৌনে ৪ বছরে অনেক উন্নয়ন করেছি। সামনেই আবার সংসদ নির্বাচন। একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
তবে আওয়ামী লীগ থেকে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের মধ্যেও রয়েছে কোন্দল। যে কারণে সোনারগাঁও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভক্ত হয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। একে অন্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল-কায়সার হাসনাত বলেন, তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে দলের নেতা কর্মীদের গুছিয়ে নিচ্ছেন। তিনি উপজেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে সোনারগাঁও থেকে আবারো নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ গঠনের পেছনে বাংলাদেশের হাতে গোনা যে কয়েকটি পরিবারের অবদান ছিল তার মধ্যে হাসনাত পরিবার রয়েছে। আমি সেই পরিবারের একজন সদস্য। আগামী নির্বাচনে ভাতিজা আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের পাশাপাশি আমিও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তে জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয়া হয়। আমাকে কেন্দ্রের নির্দেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছিল। ভাতিজা কায়সার হাসনাত যদি আগামীতে কোনো কারণে মনোনয়ন না পায় তাহলে এ পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি মনোনয়ন পাবো বলে বিশ্বাস করি।

সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম বলেন, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ করছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হতে কেন্দ্রে লবিং করে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এএইচএম মাসুদ দুলাল বলেন, আগামী নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময় থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত জানিয়ে বলেন, এ আসনে রাজনৈতিকভাবে ক্লিন ইমেজের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে তিনি কাজ করছেন। আশা করছেন দল তাকে মনোনয়ন দেবেন।

ডাক্তার আবু জাফর চৌধুরী বিরু আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে জানান, নৌকা প্রতীকের মনোনয়নের জন্য মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া। আগামী সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের তিনিও একজন সম্ভাব্য প্রার্থী।

সোনারগাঁওয়ের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে ৭ জনের নাম শোনা গেলেও মূলত আলোচনায় ৩ প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, তার চাচা মোশারফ হোসেন এবং এএইচএম মাসুদ দুলালই হচ্ছেন প্রকৃত প্রার্থী। বাকিরা এই ৩ জনকে সমর্থন দেবেন।

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও বসে নেই। তারা নিজ নিজ অনুসারি নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে কাজ রয়েছেন। সোনারগাঁওয়ে বিএনপিতে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব না থাকলেও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা রয়েছে। এখানে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম জানান, এ আসনে থেকে তিনি চারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এমপি থাকাবস্থায় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক দফতরে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সময়ে সোনারগাঁওয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। তিনি এমপি থাকাকালে এলাকার যেসব রাস্তাঘাট নির্মাণ করেছেন পরবর্তী সময়ে নতুনভাবে আর কোনো রাস্তাঘাটে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি বলে দাবি করেছেন।

অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেন, আমি সোনারগাঁওয়েরই সন্তান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক।

বিএনপির আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান জানান, ১/১১’র সেনা শাসিত সরকারের সময় দলের দুঃসময়ে সোনারগাঁও বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফরকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেছি। বর্তমানে সোনারগাঁওয়ে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলছি। সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে কাজ করেছি। ফলে আমি ও আমার নেতাকর্মীরা ১০-১২টি মামলার আসামি হয়েছি। আশা করি দল আমার কাজের মূল্যায়ন করে আমাকে মনোনয়ন দেবে।

সোনারগাঁও থানা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফর জানান, আগামী নির্বাচনে আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। আশা করি দল আমাকে বিমুখ করবে না।

মনোনয়ন প্রত্যাশী ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল জানান, আমি ৮ম শ্রেণি থেকে ছাত্রদলের রাজনীতির মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি। আশা করি দল আমাকে মূল্যায়ন করবেন।

এদিকে এ আসনটিতে বর্তমানে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি হিসেবে রয়েছেন।
লিয়াকত হোসেন খোকা দাবি করে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সোনারগাঁয়ে যত এমপি হয়েছেন তাদের সবার চেয়ে আমি বেশি উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। আমি রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজের ভবন নির্মান, ব্রীজ, কালভার্টসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। এ উন্নয়ননের ধারা এখনো অব্যাহত আছে।

জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকার পাশাপাশি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পালিত কন্যা ও কেন্দ্রীয় মহিলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনন্যা হুসেইন মৌসুমী বলেন, সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পার্টির এমপি থাকলেও তিনি আসলে আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেন। সব কাজ করেন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে। এমনকি ব্যানার ফেস্টুনেও থাকে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবি। সেখানে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কোনো স্থান নেই। এমপি হওয়ার পর তিনি এখানে দলকেও সংগঠিত করেননি। মৌসুমী দাবি করেন, তিনিই সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনিই এখনো সোনারগাঁও জাতীয় পার্টির সভাপতি। আগামীতে দল তাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মানবকণ্ঠ