ঢাকা ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

সৈয়দ আশরাফের বনানীর বাড়ি বিক্রি নিয়ে মিথ এবং আসল তথ্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৭
  • ২৬১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢাকায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ব্যক্তিগত কোন বাড়ি নেই যে তিনি সেটি বিক্রি করবেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন। গুলশানে জাতীয় চার নেতার নামে বরাদ্দ করা প্লট থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে হিসেবে তিনি ২ শতাংশ জমি পেয়েছিলেন। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ভাই-বোনদের কাছে তিনি সেই জমি বিক্রি করে দেন।

অনাড়ম্বড় জীবনে অভ্যস্ত এ নেতা চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে লন্ডন থেকে জার্মানি নেয়ার জন্য পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় দু’বার প্লেনের টিকিটের তারিখও পরিবর্তন করেছিলেন।

সম্প্রতি সৈয়দ আশরাফের স্ত্রী শিলা ইসলামের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস ভাইরাল হয় যেখানে বলা হয়, মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য নিজের বনানীর বাড়িটি বিক্রি করেছেন। তবে  হাওর বার্তাকে পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে তার একাধিক ঘনিষ্ঠজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনানী কিংবা ঢাকার অন্য কোন জায়গায় সৈয়দ আশরাফের নিজের কোন বাড়ি নেই, এমনকি কোন প্লটও নেই। সৈয়দ আশরাফদের কিশোরগঞ্জের বাড়ি যার অংশ বিশেষ তিনি পৈতৃক সূত্রে পেয়েছেন

১৯৯৬ থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ১৯৯৬-২০০১ তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী, ২০০৮ থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী এবং এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

ঘনিষ্ঠজনদের কাছে সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত সৈয়দ আশরাফ। তারা বলছেন, সৈয়দ আশরাফের সততা সম্পর্কে বলার জন্য ভুল কোন তথ্য দেওয়ার দরকার নেই। ঢাকায় তার কোন বাড়িই নেই যে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তিনি তা বিক্রি করবেন। বরং বাড়ি বিক্রি করেছেন বলা হলে মনে হয়, তিনি সরকারি কোন প্লট পেয়েছিলেন, তার অনেক টাকা যে বনানীতে তিনি বাড়ি করেছেন। আসলে এর কিছুই নেই তার।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সততার নজির তুলে ধরে তাকে কাছ থেকে দেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোফাজ্জল হোসেন সতাকহাওর বার্তাকে বলেন, সৈয়দ আশরাফের কোন ব্যক্তিগত প্লট নেই। চার বারের সংসদ সদস্য হিসেবে সরকারী প্লট এবং শুল্কমুক্ত গাড়ি ক্রয়ের সুবিধা আইনগতভাবে পেয়েছেন তিনি। কিন্তু কোন প্লট নিয়েছেন কিংবা গাড়ি কিনেছেন বলে আমরা জানি না। যদিও প্লট নেয়া কিংবা গাড়ি কেনার বিষয়টি অসততার মধ্যেও পড়ে না। তবুও তিনি এসব সুবিধা গ্রহণ করেন নি।

জার্মানিপ্রবাসী সুমন জার্মানিতে শিলা ইসলামের চিকিৎসার সময় পরিবারটিকে কাছ থেকে দেখেছেন।

হাওর বার্তাকে অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সাবেক এ সাধারণ সম্পাদক কিশোরগঞ্জ সদরের যশোদল ইউনিয়নের যশোদল গ্রামে ১৫ শতাংশ জমির উপরে একটি বাড়ি এবং ময়মনসিংহের কলেজ রোডে ৮ শতাংশ জমির উপরে একতলা একটি বাড়ির অংশ বিশেষের মালিক যা তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন।

সৈয়দ আশরাফদের ময়মনসিংহের বাড়ি যার অংশ বিশেষ তিনি পৈতৃক সূত্রে পেয়েছেন মালিকানা পেয়েছিলেন সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে হিসেবে।

জাতীয় চার নেতার নামে সরকার ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ করেছিল। বাড়ি করার সময় চার ভাই-দুই বোনের মধ্যে তিনি পেয়েছিলেন দুই শতাংশ জমি। বাড়ি করার জন্য ভাই-বোনেরা যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়েছিলেন, তখন তার টাকা না থাকায় দুই কাঠা জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ৮০ লাখ টাকা ঋণ নেন সৈয়দ আশরাফ।

পরবর্তীতে তার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সেই জমিটি ভাইদের কাছে বিক্রি করে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করেন এবং স্ত্রীর চিকিৎসা বাবদ খরচ করেন।

তার অন্য ভাইয়েরা ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি সবসময় নিজেকে ব্যবসা থেকে দূরে রেখেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ক্যাটরিনার হাতে ২০ বার থাপ্পড় খেয়েছিলেন ইমরান খান

সৈয়দ আশরাফের বনানীর বাড়ি বিক্রি নিয়ে মিথ এবং আসল তথ্য

আপডেট টাইম : ০৪:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঢাকায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ব্যক্তিগত কোন বাড়ি নেই যে তিনি সেটি বিক্রি করবেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন। গুলশানে জাতীয় চার নেতার নামে বরাদ্দ করা প্লট থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে হিসেবে তিনি ২ শতাংশ জমি পেয়েছিলেন। স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ভাই-বোনদের কাছে তিনি সেই জমি বিক্রি করে দেন।

অনাড়ম্বড় জীবনে অভ্যস্ত এ নেতা চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে লন্ডন থেকে জার্মানি নেয়ার জন্য পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় দু’বার প্লেনের টিকিটের তারিখও পরিবর্তন করেছিলেন।

সম্প্রতি সৈয়দ আশরাফের স্ত্রী শিলা ইসলামের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস ভাইরাল হয় যেখানে বলা হয়, মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য নিজের বনানীর বাড়িটি বিক্রি করেছেন। তবে  হাওর বার্তাকে পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে তার একাধিক ঘনিষ্ঠজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনানী কিংবা ঢাকার অন্য কোন জায়গায় সৈয়দ আশরাফের নিজের কোন বাড়ি নেই, এমনকি কোন প্লটও নেই। সৈয়দ আশরাফদের কিশোরগঞ্জের বাড়ি যার অংশ বিশেষ তিনি পৈতৃক সূত্রে পেয়েছেন

১৯৯৬ থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ১৯৯৬-২০০১ তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী, ২০০৮ থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী এবং এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

ঘনিষ্ঠজনদের কাছে সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত সৈয়দ আশরাফ। তারা বলছেন, সৈয়দ আশরাফের সততা সম্পর্কে বলার জন্য ভুল কোন তথ্য দেওয়ার দরকার নেই। ঢাকায় তার কোন বাড়িই নেই যে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তিনি তা বিক্রি করবেন। বরং বাড়ি বিক্রি করেছেন বলা হলে মনে হয়, তিনি সরকারি কোন প্লট পেয়েছিলেন, তার অনেক টাকা যে বনানীতে তিনি বাড়ি করেছেন। আসলে এর কিছুই নেই তার।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সততার নজির তুলে ধরে তাকে কাছ থেকে দেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মোফাজ্জল হোসেন সতাকহাওর বার্তাকে বলেন, সৈয়দ আশরাফের কোন ব্যক্তিগত প্লট নেই। চার বারের সংসদ সদস্য হিসেবে সরকারী প্লট এবং শুল্কমুক্ত গাড়ি ক্রয়ের সুবিধা আইনগতভাবে পেয়েছেন তিনি। কিন্তু কোন প্লট নিয়েছেন কিংবা গাড়ি কিনেছেন বলে আমরা জানি না। যদিও প্লট নেয়া কিংবা গাড়ি কেনার বিষয়টি অসততার মধ্যেও পড়ে না। তবুও তিনি এসব সুবিধা গ্রহণ করেন নি।

জার্মানিপ্রবাসী সুমন জার্মানিতে শিলা ইসলামের চিকিৎসার সময় পরিবারটিকে কাছ থেকে দেখেছেন।

হাওর বার্তাকে অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সাবেক এ সাধারণ সম্পাদক কিশোরগঞ্জ সদরের যশোদল ইউনিয়নের যশোদল গ্রামে ১৫ শতাংশ জমির উপরে একটি বাড়ি এবং ময়মনসিংহের কলেজ রোডে ৮ শতাংশ জমির উপরে একতলা একটি বাড়ির অংশ বিশেষের মালিক যা তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন।

সৈয়দ আশরাফদের ময়মনসিংহের বাড়ি যার অংশ বিশেষ তিনি পৈতৃক সূত্রে পেয়েছেন মালিকানা পেয়েছিলেন সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে হিসেবে।

জাতীয় চার নেতার নামে সরকার ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ করেছিল। বাড়ি করার সময় চার ভাই-দুই বোনের মধ্যে তিনি পেয়েছিলেন দুই শতাংশ জমি। বাড়ি করার জন্য ভাই-বোনেরা যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়েছিলেন, তখন তার টাকা না থাকায় দুই কাঠা জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ৮০ লাখ টাকা ঋণ নেন সৈয়দ আশরাফ।

পরবর্তীতে তার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সেই জমিটি ভাইদের কাছে বিক্রি করে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করেন এবং স্ত্রীর চিকিৎসা বাবদ খরচ করেন।

তার অন্য ভাইয়েরা ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলেও রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি সবসময় নিজেকে ব্যবসা থেকে দূরে রেখেছেন।