ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশের অপেক্ষায় আছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০৫:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৭
  • ২৪৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সীমান্ত দিয়ে উখিয়ায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। পালংখালী ইউনিয়নের আনজুমানপাড়া দিয়ে গত তিনদিনে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত আরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশে প্রবেশে করার জন্য। অনেকেই নাফ নদীর বেড়িবাঁধে অবস্থান করছে। এদের আসতে দালালরা সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত রোহিঙ্গা পারাপারের নিরাপদ পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে নৌকার মাঝিরা। তাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে স্থানীয় দালালচক্র। এদিকে নৌকার অদক্ষ মাঝির কারণে কয়েক কিলোমিটার নাফ নদী ও সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে এ পর্যন্ত ২৭টি নৌকাডুবিতে ১৮০ জন রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এসব ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরও অনেক রোহিঙ্গা। এদিকে মঙ্গলবার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়েও রাতের আঁধারে নৌকাযোগে দেড় হাজারের বেশি রোহিঙ্গা এসেছে। এদের বেশিরভাগ রাখাইনের বুছিধং থানার।

গত রোববার রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে গিয়ে নাফ নদী ও সাগরের মোহনায় ফের নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পাঁচ শিশু ও ছয় নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২১ জনকে। আরও অন্তত ২০ জন নিখোঁজ রয়েছে বুধবার পর্যন্ত।

আনজুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসা বুছিধং থানার কোয়াইডং গ্রামের মৃত গণি মিয়ার ছেলে মো. ইসমাইল বলেন, রাখাইনের সহিংসতার পর থেকে বাজার বন্ধ। কোনো কাজ করতে পারছি না। বাড়িতে খাবারও নেই। আছে প্রতি মুহূর্তে আতঙ্ক আর প্রাণের ভয়। তাই এপারে আসতে বাধ্য হয়েছি।

উখিয়ার স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান আহমেদ জানান, তিন দিনে প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে। তবে তারা বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ৩৪ বিজিবির মেজর আশিকুর রহমানের ধারণা, এপারের রোহিঙ্গারা ওপারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাদের ডেকে আনছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, এক হাজার নৌকায় রোহিঙ্গাদের আনার ব্যবসা করে দেড় শতাধিক দালাল। ছোট নৌকায় ১০ থেকে ১২ এবং বড় নৌকায় ৩৫ থেকে ৪০ জন লোক তুলে আনা হয়। কম করে হলেও প্রতিবার তাদের এক লাখ টাকা আয় হয়। টাকার লোভে পড়েই মাছ ধরার নৌকাগুলো এখন রোহিঙ্গা আনায় ব্যবহার হচ্ছে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন খান বলেন, রোহিঙ্গা পারাপারের অভিযোগে ২৭টি নৌকা আগুনে পোড়ানো হয়েছে। প্রায় শতাধিক নৌকার মাঝি ও দালালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। তারপরও সীমান্ত এলাকার দালালরা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সহায়তা করে। এসব দালালের অনেককে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

২০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশের অপেক্ষায় আছে

আপডেট টাইম : ০১:০৫:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সীমান্ত দিয়ে উখিয়ায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। পালংখালী ইউনিয়নের আনজুমানপাড়া দিয়ে গত তিনদিনে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত আরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশে প্রবেশে করার জন্য। অনেকেই নাফ নদীর বেড়িবাঁধে অবস্থান করছে। এদের আসতে দালালরা সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত রোহিঙ্গা পারাপারের নিরাপদ পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে নৌকার মাঝিরা। তাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে স্থানীয় দালালচক্র। এদিকে নৌকার অদক্ষ মাঝির কারণে কয়েক কিলোমিটার নাফ নদী ও সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে এ পর্যন্ত ২৭টি নৌকাডুবিতে ১৮০ জন রোহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এসব ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরও অনেক রোহিঙ্গা। এদিকে মঙ্গলবার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়েও রাতের আঁধারে নৌকাযোগে দেড় হাজারের বেশি রোহিঙ্গা এসেছে। এদের বেশিরভাগ রাখাইনের বুছিধং থানার।

গত রোববার রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে গিয়ে নাফ নদী ও সাগরের মোহনায় ফের নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পাঁচ শিশু ও ছয় নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২১ জনকে। আরও অন্তত ২০ জন নিখোঁজ রয়েছে বুধবার পর্যন্ত।

আনজুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসা বুছিধং থানার কোয়াইডং গ্রামের মৃত গণি মিয়ার ছেলে মো. ইসমাইল বলেন, রাখাইনের সহিংসতার পর থেকে বাজার বন্ধ। কোনো কাজ করতে পারছি না। বাড়িতে খাবারও নেই। আছে প্রতি মুহূর্তে আতঙ্ক আর প্রাণের ভয়। তাই এপারে আসতে বাধ্য হয়েছি।

উখিয়ার স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান আহমেদ জানান, তিন দিনে প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে। তবে তারা বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ৩৪ বিজিবির মেজর আশিকুর রহমানের ধারণা, এপারের রোহিঙ্গারা ওপারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাদের ডেকে আনছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে এ বিষয়ে তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, এক হাজার নৌকায় রোহিঙ্গাদের আনার ব্যবসা করে দেড় শতাধিক দালাল। ছোট নৌকায় ১০ থেকে ১২ এবং বড় নৌকায় ৩৫ থেকে ৪০ জন লোক তুলে আনা হয়। কম করে হলেও প্রতিবার তাদের এক লাখ টাকা আয় হয়। টাকার লোভে পড়েই মাছ ধরার নৌকাগুলো এখন রোহিঙ্গা আনায় ব্যবহার হচ্ছে।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন খান বলেন, রোহিঙ্গা পারাপারের অভিযোগে ২৭টি নৌকা আগুনে পোড়ানো হয়েছে। প্রায় শতাধিক নৌকার মাঝি ও দালালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। তারপরও সীমান্ত এলাকার দালালরা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সহায়তা করে। এসব দালালের অনেককে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।