ঢাকা ০২:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ’লীগের প্রতিনিধি দল ইসিতে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৭:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭
  • ১৯৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে পৌঁছেছেন।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা পৌঁছেন।

সকাল ১১টায় ইসি সচিবালয়ে অনুষ্ঠেয় সংলাপে সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছেন। এ সময় দলের ১১ দফা প্রস্তাবের মূল দাবিই থাকবে, নির্বাচন বিষয়ে সংবিধানে যা বলা আছে, তার কোনো রকম ব্যত্যয় করা যাবে না। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। তবে ভোটের সময় সংসদ বলবৎ থাকলেও শেষ তিন মাসে সংসদের কোনো অধিবেশন বসবে না।

এ ছাড়া বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী নির্বাচনকালে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনেরও কঠোর বিরোধিতা করবে সরকারি দল। সংলাপে তাদের প্রস্তাবে থাকবে, প্রয়োজন অনুযায়ী ইসি ও প্রশাসন সেনাবাহিনীকে নির্বাচনকালীন ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে রাখতে পারবে। তবে কোনো অবস্থায়ই তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় এনে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া যাবে না। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না।

ইসির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আজকের সংলাপকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দলটি কী কী প্রস্তাব ও সুপারিশমালা দিচ্ছে, তা নিয়ে সব মহলে কৌতূহলও রয়েছে। গত রোববার ইসির সঙ্গে সংলাপকালে বিএনপির দেওয়া প্রস্তাব ও সুপারিশের সঙ্গে তাদের প্রস্তাবের কী মিল-অমিল থাকছে, তা জানার অপেক্ষায়ও রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।

এ সংলাপের জন্য বেশ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে আওয়ামী লীগ। সংলাপের প্রস্তাব ও সুপারিশ তৈরির লক্ষ্যে গঠিত দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এইচটি ইমামের নেতৃত্বাধীন কমিটি কয়েক দফা বৈঠকও করেছে। এই কমিটির খসড়া প্রস্তাবে গত শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার পর এই প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন এবং সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি দলের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়।

এর আগে রোববার এক অনুষ্ঠানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, ইসির সঙ্গে সংলাপে তাদের দল থেকে ১১ দফা প্রস্তাব দেওয়া হবে।

আরও যেসব প্রস্তাব আওয়ামী লীগের : সংলাপে আগামী নির্বাচনে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ প্রশ্নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবে আওয়ামী লীগ। বিএনপি এ ক্ষেত্রে ২০০৮ সালের আগের সীমানা পুনর্বহালের দাবি তুলেছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি আদমশুমারির সঙ্গে সম্পর্কিত। আগামী নির্বাচনের আগে কোনো আদমশুমারি হচ্ছে না। এ ছাড়া অল্প সময়ের মধ্যে কোনোভাবেই সীমানা পুনর্নির্ধারণ সম্ভবও নয়। তাই সংলাপকালে আগামী নির্বাচনে বিদ্যমান সংসদীয় আসনের সীমানা বহাল রাখার পক্ষে মত দেবেন তারা।

সংলাপে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষেও মত দেবে আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ কয়েকটি দল আগে থেকেই বলে আসছে, ‘ভোট কারচুপির’ সুযোগ করে দিতে ইভিএমের ব্যবহার চলবে না। তবে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে থাকবে, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং জনমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আধুনিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর মতো ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সংলাপে আওয়ামী লীগের মূল ১১ দফা প্রস্তাব থাকলেও বিভিন্ন উপদফা দিয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আরও কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এসব প্রস্তাব ও সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনে অবৈধ অর্থ ও পেশিশক্তির ব্যবহার রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ, প্রার্থী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে বাছাই করে সংশ্নিষ্ট রাজনৈতিক দল থেকে মনোনীত প্রার্থী চূড়ান্ত করা, নির্বাচনের কমপক্ষে তিন দিন আগে প্রার্থীর নিয়োজিত পোলিং এজেন্টের তালিকা রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) প্রয়োজনীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন, নির্বাচনে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পরিচয় চিহ্নিতকরণ এবং দলীয় পরিচয়ধারী ও বিতর্কিতদের পর্যবেক্ষণের অনুমতি না দেওয়া, সব কেন্দ্রে পর্যবেক্ষক মোতায়েন নিশ্চিত করা, বেসরকারি ও এনজিও কোনো কর্মকর্তাকে পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দেওয়া, প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটার তালিকার অসঙ্গতি দূর করা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিন্ন পোস্টার, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ইসির উদ্যোগে একই সমাবেশের মাধ্যমে প্রার্থীদের পরিচয় করানোর ব্যবস্থা চালু, প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়সীমা পুনর্নির্ধারণসহ জামানতের টাকা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা প্রভৃতি।

আওয়ামী লীগের এসব প্রস্তাবের কয়েকটির সঙ্গে অবশ্য বিএনপির দেওয়া প্রস্তাবের কিছু মিল রয়েছে। প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নিরপেক্ষ প্রশাসন নিশ্চিত করাসহ কয়েকটি বিষয়ে দুই দল প্রায় অভিন্ন সুপারিশ করেছে।

লিখিত এসব প্রস্তাবের বাইরে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় ইসিকে সাংবিধানিক ও আইনি ক্ষমতার মধ্য থেকে কাজ করার জন্যও বলবে আওয়ামী লীগ। কমিশনের এখতিয়ারে নেই এমন কাজের দায়িত্ব নেওয়া সম্পর্কেও আওয়ামী লীগ তাদের সতর্ক করবে। গত রোববার বিএনপির সঙ্গে সংলাপকালে জিয়াউর রহমানকে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠাকারী’ আখ্যা দিয়ে এবং খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে দেওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদার বক্তব্যের ব্যাখ্যাও চাইবেন দলের প্রতিনিধি দল।

সংলাপের প্রতিনিধি দল : ইসির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, এইচটি ইমাম, মসিউর রহমান, মোহাম্মদ জমির, রশিদুল আলম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, আবদুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওসার।

স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে দেশের বাইরে থাকায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংলাপে যোগ দিতে পারেননি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আ’লীগের প্রতিনিধি দল ইসিতে ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে

আপডেট টাইম : ১১:৪৭:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে পৌঁছেছেন।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা পৌঁছেন।

সকাল ১১টায় ইসি সচিবালয়ে অনুষ্ঠেয় সংলাপে সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছেন। এ সময় দলের ১১ দফা প্রস্তাবের মূল দাবিই থাকবে, নির্বাচন বিষয়ে সংবিধানে যা বলা আছে, তার কোনো রকম ব্যত্যয় করা যাবে না। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। তবে ভোটের সময় সংসদ বলবৎ থাকলেও শেষ তিন মাসে সংসদের কোনো অধিবেশন বসবে না।

এ ছাড়া বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী নির্বাচনকালে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনা মোতায়েনেরও কঠোর বিরোধিতা করবে সরকারি দল। সংলাপে তাদের প্রস্তাবে থাকবে, প্রয়োজন অনুযায়ী ইসি ও প্রশাসন সেনাবাহিনীকে নির্বাচনকালীন ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে রাখতে পারবে। তবে কোনো অবস্থায়ই তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় এনে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া যাবে না। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না।

ইসির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আজকের সংলাপকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দলটি কী কী প্রস্তাব ও সুপারিশমালা দিচ্ছে, তা নিয়ে সব মহলে কৌতূহলও রয়েছে। গত রোববার ইসির সঙ্গে সংলাপকালে বিএনপির দেওয়া প্রস্তাব ও সুপারিশের সঙ্গে তাদের প্রস্তাবের কী মিল-অমিল থাকছে, তা জানার অপেক্ষায়ও রয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।

এ সংলাপের জন্য বেশ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে আওয়ামী লীগ। সংলাপের প্রস্তাব ও সুপারিশ তৈরির লক্ষ্যে গঠিত দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এইচটি ইমামের নেতৃত্বাধীন কমিটি কয়েক দফা বৈঠকও করেছে। এই কমিটির খসড়া প্রস্তাবে গত শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার পর এই প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন এবং সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য প্রতিনিধি দলের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হয়।

এর আগে রোববার এক অনুষ্ঠানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, ইসির সঙ্গে সংলাপে তাদের দল থেকে ১১ দফা প্রস্তাব দেওয়া হবে।

আরও যেসব প্রস্তাব আওয়ামী লীগের : সংলাপে আগামী নির্বাচনে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ প্রশ্নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবে আওয়ামী লীগ। বিএনপি এ ক্ষেত্রে ২০০৮ সালের আগের সীমানা পুনর্বহালের দাবি তুলেছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি আদমশুমারির সঙ্গে সম্পর্কিত। আগামী নির্বাচনের আগে কোনো আদমশুমারি হচ্ছে না। এ ছাড়া অল্প সময়ের মধ্যে কোনোভাবেই সীমানা পুনর্নির্ধারণ সম্ভবও নয়। তাই সংলাপকালে আগামী নির্বাচনে বিদ্যমান সংসদীয় আসনের সীমানা বহাল রাখার পক্ষে মত দেবেন তারা।

সংলাপে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষেও মত দেবে আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ কয়েকটি দল আগে থেকেই বলে আসছে, ‘ভোট কারচুপির’ সুযোগ করে দিতে ইভিএমের ব্যবহার চলবে না। তবে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে থাকবে, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং জনমানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আধুনিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর মতো ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সংলাপে আওয়ামী লীগের মূল ১১ দফা প্রস্তাব থাকলেও বিভিন্ন উপদফা দিয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে আরও কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এসব প্রস্তাব ও সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনে অবৈধ অর্থ ও পেশিশক্তির ব্যবহার রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ, প্রার্থী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে বাছাই করে সংশ্নিষ্ট রাজনৈতিক দল থেকে মনোনীত প্রার্থী চূড়ান্ত করা, নির্বাচনের কমপক্ষে তিন দিন আগে প্রার্থীর নিয়োজিত পোলিং এজেন্টের তালিকা রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) প্রয়োজনীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন, নির্বাচনে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পরিচয় চিহ্নিতকরণ এবং দলীয় পরিচয়ধারী ও বিতর্কিতদের পর্যবেক্ষণের অনুমতি না দেওয়া, সব কেন্দ্রে পর্যবেক্ষক মোতায়েন নিশ্চিত করা, বেসরকারি ও এনজিও কোনো কর্মকর্তাকে পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দেওয়া, প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তিসহ তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটার তালিকার অসঙ্গতি দূর করা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিন্ন পোস্টার, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় ইসির উদ্যোগে একই সমাবেশের মাধ্যমে প্রার্থীদের পরিচয় করানোর ব্যবস্থা চালু, প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়সীমা পুনর্নির্ধারণসহ জামানতের টাকা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা প্রভৃতি।

আওয়ামী লীগের এসব প্রস্তাবের কয়েকটির সঙ্গে অবশ্য বিএনপির দেওয়া প্রস্তাবের কিছু মিল রয়েছে। প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নিরপেক্ষ প্রশাসন নিশ্চিত করাসহ কয়েকটি বিষয়ে দুই দল প্রায় অভিন্ন সুপারিশ করেছে।

লিখিত এসব প্রস্তাবের বাইরে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় ইসিকে সাংবিধানিক ও আইনি ক্ষমতার মধ্য থেকে কাজ করার জন্যও বলবে আওয়ামী লীগ। কমিশনের এখতিয়ারে নেই এমন কাজের দায়িত্ব নেওয়া সম্পর্কেও আওয়ামী লীগ তাদের সতর্ক করবে। গত রোববার বিএনপির সঙ্গে সংলাপকালে জিয়াউর রহমানকে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠাকারী’ আখ্যা দিয়ে এবং খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে দেওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদার বক্তব্যের ব্যাখ্যাও চাইবেন দলের প্রতিনিধি দল।

সংলাপের প্রতিনিধি দল : ইসির সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, এইচটি ইমাম, মসিউর রহমান, মোহাম্মদ জমির, রশিদুল আলম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, আবদুর রাজ্জাক, মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ এইচএন আশিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওসার।

স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে দেশের বাইরে থাকায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংলাপে যোগ দিতে পারেননি।