ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোমরের ব্যাথা আছে এই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন (ভিডিও)

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৭
  • ৪৬৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোমরের ব্যাথা যাদের আছে, তারা এই প্রয়োজনে এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন

কোমর ব্যথায় সুস্থ থাকবেন কিভাবে?

জীবনের কোনো না কোনো সময় লো ব্যাক পেইন বা কোমর ব্যথায় ভেগেননি এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। সাধারণত মহিলারাই কোমর ব্যথায় বেশি ভোগেন। মেনোপোজের পর অধিকাংশ মহিলাই কোমর ব্যথায় ভুগে থাকেন। কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে চললে কোমর ব্যথায় সুস্থ থাকা যায়।

শরীর সামনে বাঁকাবেন না : শরীরকে সামনের দিকে বাঁকানো যাবে না। কোনো কিছু নিচ থেকে তোলার সময় শরীরকে না বাকিয়ে হাঁটু ভেঙে বসে পড়–ন। এবার জিনিসটি হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে দাঁড়ান। এক হাতে কোনো ভারী জিনিস বহন করবেন না। এতে যে হাতে ভর বহন করবেন সে পাশের স্পাইনের মাংসপেশিতে টান লাগবে। ফলে কোমর ব্যথা আরো বেড়ে যাবে। ছোট শিশুদের কোলে নেয়ার মতো করে কোনো জিনিস বহন করুন। কাঁধেও ভারী কোনো জিনিস বহন করবেন না। কাঁধে যতটা সম্ভব কম জিনিস বহন করুন। ভারী হলে কমিয়ে ফেলুন ব্যাগের ওজন।

বসুন কোমর সোজা রেখে : চেয়ারে বসলে কোমর সোজা রেখে বসুন। এ জন্য দু-একটি ছোট কুশন কোমরের নিচের অংশে রেখে বসতে পারেন। এতে কোমর সোজা হয়ে থাকবে। যারা কম্পিউটারে অনেকক্ষণ ধরে কাজ করেন তারা শরীর না বাঁকায়ে কোমর সোজা রেখে কাজ করুন। দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকবেন না। হেঁটে আসুন কিছু সময়ের জন্য বা দাঁড়ায়েও থাকতে পারেন। যদি দীর্ঘ সময় দাঁড়ায়ে থাকতে হয় তাহলে এক জায়গায় ঠায় দাঁড়ায়ে না থেকে একটু হাঁটা-চলা করতে পারেন। অনেকক্ষণ দাঁড়ায়ে থাকতে হলে এক পা একটা ছোট টুল বা উঁচু কোনো কিছুর ওপর রেখে অন্য পায়ে দাঁড়াতে পারেন। এতে আরাম বোধ করবেন।

দীর্ঘ সময় যাত্রা করবেন না : দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেন বা গাড়িতে বসে থাকলে ঝাঁকুনিতে কোমর ব্যথা আরো বেড়ে যায়। এ জন্য দীর্ঘ যাত্রা পথে এক-দুই ঘণ্টা পর থেমে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আবার যাত্রা করুন। ট্রেন-বাস থেকে নেমেই লাগেজ নিয়ে টানাটানি না করে কিছু সময় কোমরের মাংসপেশিকে রেস্ট দিন। এতে আপনার কোমর ভালো থাকবে।

শক্ত বিছানায় ঘুমান : শক্ত বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস করুন। এতে পুরো শরীর যেমন সাপোর্ট পায় তেমনি নিচের দিকের স্পাইনগুলোতে চাপ কমে যায়। কাত হয়ে অথবা চিৎ হয়ে শোন। কিন্তু উপুড় হয়ে শোবেন না। এতে কোমর বাঁকা হয় এবং লোয়ার স্পাইনের চাপ পড়ার ফলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। যদি কাত হয়ে শোন সে ক্ষেত্রে দুই হাঁটুর মধ্যে একটা বালিশ রেখে ঘুমুতে পারেন এতে কোমর সাপোর্ট পাবে।

কমিয়ে ফেলুন অতিরিক্ত ওজন : দেহের ওজন বেশি হলে অতিরিক্ত ওজন বহনের জন্য কোমরের ওপর চাপ বেড়ে যায়। ফলে বেড়ে যায় কোমর ব্যথা। এ জন্য কমিয়ে ফেলুন অতিরিক্ত ওজন। এ জন্য নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন। খাবার খান শারীরিক পরিশ্রমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে। ওজন কমানোর জন্য খাবার থেকে ক্যালরি কমিয়ে ফেলুন, শাকসবজি ও ফলমূল খান বেশি করে, চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করুন।

ব্যায়াম করুন :কোমর ব্যথার জন্য সবচেয়ে ভালো ওষুধ হলো ব্যায়াম। সামনের দিকে ঝুঁকে কোনো ব্যায়াম করবেন না। এত ব্যথা আরো বেড়ে যাবে। প্রথমে সহজ ব্যয়াম দিয়ে শুরু করুন। প্রতিদিন অল্প অল্প করে ব্যয়াম করুন। নিচের ব্যায়ামগুলো করা যেতে পারে :
ক) ১.উপুড় হয়ে শুয়ে পড়–ন। হাত দুটো পাশে রেখে দিন। ২-৩ মিনিট রিলাক্স করুন।
২. কুনইয়ের ওপর ভর দিয়ে কোমরের ওপরের অংশ (যতটুকু পারেন) আস্তে আস্তে ওপরে তুলুন ২-৩ মিনিট এভাবেই থাকুন।
৩. আবার উপুড় হয়ে শুয়ে পড়–ন। হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে কোমরের ওপরের অংশ আস্তে আস্তে ওপরে তুলুন। এভাবে ২-৩ মিনিট থাকুন। আবার আস্তে আস্তে সোজা হয়ে শুয়ে পড়–ন।

আরেকটি ব্যয়াম হলো : খ) উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাতগুলো শরীরের পাশে রেখে দিন। হাতের ওপর ভর না দিয়ে পা সোজা রেখে শ্বাস নিতে নিতে ডান পা আস্তে আস্তে ওপরের দিকে তুলুন। যতটুকু পারেন ওপরে তুলে নিঃশ্বাস বন্ধ করে মনে মনে ১০ পর্যন্ত গুনুন। শ্বাস নিতে নিতে আস্তে আস্তে নিচে নামান। একই ভাবে বাম পা ওপরে তুলে ধরে রাখুন। এবার দুই পা একসাথে শ্বাস নিতে নিতে ওপরে তুলে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। আস্তে আস্তে নামান। এবার হাত দুটো কোমরের পেছনে রাখুন। দুই পা ও কেমরের ওপরের অংশ একসাথে ধীরে ধীরে ওপরের দিকে তুলুন। ১০ সেকেন্ড ধরে রেখে ধীরে ধীরে নিচে নামান। এভাবে পাঁচবার করে দিনে তিনবার করে করুন।

দুশ্চিন্তা দূর করুন : গবেষণায় দেখা গেছে দুশ্চিন্তার কারণে বেড়ে যায় কোমর ব্যথা। তাই কমিয়ে ফেলুন মানসিক চাপ। জোর করে হলেও প্রাণ খুলে হাসুন। মেডিটেশনও করতে পারেন। এত কমবে মানসিক চাপ, বাড়বে আত্মবিশ্বাস।

এ ছাড়াও ব্যথা কমানোর জন্য আছে নানা রকম চিকিৎসা পদ্ধতি। যদি কোমর ব্যথা অসহ্য হয় তাহলে দ্রুত কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে শরণাপন্ন হন।

আরও পড়ুন…

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কোমরের ব্যাথা আছে এই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন (ভিডিও)

আপডেট টাইম : ১১:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কোমরের ব্যাথা যাদের আছে, তারা এই প্রয়োজনে এই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন

কোমর ব্যথায় সুস্থ থাকবেন কিভাবে?

জীবনের কোনো না কোনো সময় লো ব্যাক পেইন বা কোমর ব্যথায় ভেগেননি এমন লোকের সংখ্যা খুবই কম। সাধারণত মহিলারাই কোমর ব্যথায় বেশি ভোগেন। মেনোপোজের পর অধিকাংশ মহিলাই কোমর ব্যথায় ভুগে থাকেন। কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে চললে কোমর ব্যথায় সুস্থ থাকা যায়।

শরীর সামনে বাঁকাবেন না : শরীরকে সামনের দিকে বাঁকানো যাবে না। কোনো কিছু নিচ থেকে তোলার সময় শরীরকে না বাকিয়ে হাঁটু ভেঙে বসে পড়–ন। এবার জিনিসটি হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে দাঁড়ান। এক হাতে কোনো ভারী জিনিস বহন করবেন না। এতে যে হাতে ভর বহন করবেন সে পাশের স্পাইনের মাংসপেশিতে টান লাগবে। ফলে কোমর ব্যথা আরো বেড়ে যাবে। ছোট শিশুদের কোলে নেয়ার মতো করে কোনো জিনিস বহন করুন। কাঁধেও ভারী কোনো জিনিস বহন করবেন না। কাঁধে যতটা সম্ভব কম জিনিস বহন করুন। ভারী হলে কমিয়ে ফেলুন ব্যাগের ওজন।

বসুন কোমর সোজা রেখে : চেয়ারে বসলে কোমর সোজা রেখে বসুন। এ জন্য দু-একটি ছোট কুশন কোমরের নিচের অংশে রেখে বসতে পারেন। এতে কোমর সোজা হয়ে থাকবে। যারা কম্পিউটারে অনেকক্ষণ ধরে কাজ করেন তারা শরীর না বাঁকায়ে কোমর সোজা রেখে কাজ করুন। দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকবেন না। হেঁটে আসুন কিছু সময়ের জন্য বা দাঁড়ায়েও থাকতে পারেন। যদি দীর্ঘ সময় দাঁড়ায়ে থাকতে হয় তাহলে এক জায়গায় ঠায় দাঁড়ায়ে না থেকে একটু হাঁটা-চলা করতে পারেন। অনেকক্ষণ দাঁড়ায়ে থাকতে হলে এক পা একটা ছোট টুল বা উঁচু কোনো কিছুর ওপর রেখে অন্য পায়ে দাঁড়াতে পারেন। এতে আরাম বোধ করবেন।

দীর্ঘ সময় যাত্রা করবেন না : দীর্ঘ সময় ধরে ট্রেন বা গাড়িতে বসে থাকলে ঝাঁকুনিতে কোমর ব্যথা আরো বেড়ে যায়। এ জন্য দীর্ঘ যাত্রা পথে এক-দুই ঘণ্টা পর থেমে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আবার যাত্রা করুন। ট্রেন-বাস থেকে নেমেই লাগেজ নিয়ে টানাটানি না করে কিছু সময় কোমরের মাংসপেশিকে রেস্ট দিন। এতে আপনার কোমর ভালো থাকবে।

শক্ত বিছানায় ঘুমান : শক্ত বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস করুন। এতে পুরো শরীর যেমন সাপোর্ট পায় তেমনি নিচের দিকের স্পাইনগুলোতে চাপ কমে যায়। কাত হয়ে অথবা চিৎ হয়ে শোন। কিন্তু উপুড় হয়ে শোবেন না। এতে কোমর বাঁকা হয় এবং লোয়ার স্পাইনের চাপ পড়ার ফলে ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। যদি কাত হয়ে শোন সে ক্ষেত্রে দুই হাঁটুর মধ্যে একটা বালিশ রেখে ঘুমুতে পারেন এতে কোমর সাপোর্ট পাবে।

কমিয়ে ফেলুন অতিরিক্ত ওজন : দেহের ওজন বেশি হলে অতিরিক্ত ওজন বহনের জন্য কোমরের ওপর চাপ বেড়ে যায়। ফলে বেড়ে যায় কোমর ব্যথা। এ জন্য কমিয়ে ফেলুন অতিরিক্ত ওজন। এ জন্য নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন। খাবার খান শারীরিক পরিশ্রমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে। ওজন কমানোর জন্য খাবার থেকে ক্যালরি কমিয়ে ফেলুন, শাকসবজি ও ফলমূল খান বেশি করে, চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করুন।

ব্যায়াম করুন :কোমর ব্যথার জন্য সবচেয়ে ভালো ওষুধ হলো ব্যায়াম। সামনের দিকে ঝুঁকে কোনো ব্যায়াম করবেন না। এত ব্যথা আরো বেড়ে যাবে। প্রথমে সহজ ব্যয়াম দিয়ে শুরু করুন। প্রতিদিন অল্প অল্প করে ব্যয়াম করুন। নিচের ব্যায়ামগুলো করা যেতে পারে :
ক) ১.উপুড় হয়ে শুয়ে পড়–ন। হাত দুটো পাশে রেখে দিন। ২-৩ মিনিট রিলাক্স করুন।
২. কুনইয়ের ওপর ভর দিয়ে কোমরের ওপরের অংশ (যতটুকু পারেন) আস্তে আস্তে ওপরে তুলুন ২-৩ মিনিট এভাবেই থাকুন।
৩. আবার উপুড় হয়ে শুয়ে পড়–ন। হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে কোমরের ওপরের অংশ আস্তে আস্তে ওপরে তুলুন। এভাবে ২-৩ মিনিট থাকুন। আবার আস্তে আস্তে সোজা হয়ে শুয়ে পড়–ন।

আরেকটি ব্যয়াম হলো : খ) উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাতগুলো শরীরের পাশে রেখে দিন। হাতের ওপর ভর না দিয়ে পা সোজা রেখে শ্বাস নিতে নিতে ডান পা আস্তে আস্তে ওপরের দিকে তুলুন। যতটুকু পারেন ওপরে তুলে নিঃশ্বাস বন্ধ করে মনে মনে ১০ পর্যন্ত গুনুন। শ্বাস নিতে নিতে আস্তে আস্তে নিচে নামান। একই ভাবে বাম পা ওপরে তুলে ধরে রাখুন। এবার দুই পা একসাথে শ্বাস নিতে নিতে ওপরে তুলে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। আস্তে আস্তে নামান। এবার হাত দুটো কোমরের পেছনে রাখুন। দুই পা ও কেমরের ওপরের অংশ একসাথে ধীরে ধীরে ওপরের দিকে তুলুন। ১০ সেকেন্ড ধরে রেখে ধীরে ধীরে নিচে নামান। এভাবে পাঁচবার করে দিনে তিনবার করে করুন।

দুশ্চিন্তা দূর করুন : গবেষণায় দেখা গেছে দুশ্চিন্তার কারণে বেড়ে যায় কোমর ব্যথা। তাই কমিয়ে ফেলুন মানসিক চাপ। জোর করে হলেও প্রাণ খুলে হাসুন। মেডিটেশনও করতে পারেন। এত কমবে মানসিক চাপ, বাড়বে আত্মবিশ্বাস।

এ ছাড়াও ব্যথা কমানোর জন্য আছে নানা রকম চিকিৎসা পদ্ধতি। যদি কোমর ব্যথা অসহ্য হয় তাহলে দ্রুত কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাথে শরণাপন্ন হন।

আরও পড়ুন…