হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের চলচ্চিত্র এখন সংগঠনমুখরই বলা চলে। ১৮ সংগঠন মিলে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার’ গঠনের পর এ মাসের প্রথম সপ্তাহে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অঙ্গনের অনেকে মিলে আরেকটি সংগঠন করে। ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম’ নামের এই সংগঠনের পর আরেকটি নতুন সংগঠন গঠনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এই সংগঠনের উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচালক, প্রযোজক ও রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরী আর গুণী অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের নাম শোনা যাচ্ছে। নতুন সংগঠনের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে গতকাল শনিবার দুপুরে প্রথম আলো যোগযোগ করে ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারে সংগঠন, চলচ্চিত্র নিয়ে ভাবনা আর এখনকার ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
চলচ্চিত্রে নাকি আরেকটি সংগঠন হচ্ছে?
এ ধরনের একটি সংগঠন গঠন নিয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। শফি বিক্রমপুরী চাইছেন আমি যেন থাকি। কিন্তু দেশের সিনেমা অঙ্গনের এখনকার কাজকর্ম দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর কোনো সংগঠন নয়।
সিদ্ধান্ত বদলের কারণ কী?
আমি মনে করি, মানুষের জীবনটা আসলে খুব ছোট। যত দিন আমরা বেঁচে আছি, সবার ভালো কিছু কাজ করে যাওয়া উচিত। এটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে ভুলে যাই। আরেকটা কথা, আমি ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ কার্যক্রম নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকি। মনে হচ্ছে, সিনেমার নতুন কোনো সংগঠন করলে সেখানে সময় দিতে পারব না। তা ছাড়া আমি যে কাজ মন দিয়ে করতে পারি না, সেখানে কখনোই যুক্ত থাকি না।
অন্য কোনো কারণ আছে?
বলতে চাইনি, কিন্তু এখন বলতে বাধ্য হচ্ছি, দেশের সিনেমায় এত সংগঠন হচ্ছে দেখে খু্ব বিরক্ত লাগছে। তাই ভাবছি, আর কোনো সংগঠন নয়, কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকব। আমি মনে করি, চলচ্চিত্রের মানুষদের তাঁদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা উচিত। এত সংগঠন করার কীই-বা দরকার! শিল্পীদের মানুষ চেনেন তাঁদের সৃষ্টিশীল কাজের জন্য। কিন্তু সংগঠন নিয়েই যদি শিল্পীরা ব্যস্ত থাকেন, তাহলে কাজ করবেন কখন!
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার আর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
চলচ্চিত্র পরিবার বলেন আর চলচ্চিত্র ফোরামই বলেন, এখানে তো আছেন চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শাখার লোকজন। সবার লক্ষ্য একটাই হওয়া উচিত, সিনেমা বানানো। শিল্পী, পরিচালক ও প্রযোজকেরা প্রতিনিয়ত নতুন সিনেমা নিয়ে দর্শকের সামনে হাজির হবেন, সেটাই সবার জন্য আনন্দের খবর। কিন্তু এত মিছিল, মিটিং আর সংগঠন বাড়িয়ে কী লাভ! আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। গত কয়েক মাসে সিনেমার অনেকে আন্দোলন, সংগ্রাম, মিছিল, মিটিংয়ের কারণে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। আমরা দেখেছি, ওই সময় সেভাবে নতুন কোনো সিনেমার কাজ হয়নি। আমাদের সবার উচিত সিনেমার কাজে মন দেওয়া। কীভাবে নতুন সিনেমার শুটিং বাড়ানো যায়, সেদিকে মনোযোগী হওয়া। সিনেমার শুটিং না বাড়ালে এসব সংগঠন করে কোনো লাভ হবে না।