ঢাকা ০৩:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্ভার আওয়ামী লীগ, হতাশায় বিএনপি, দুশ্চিন্তায় জাপা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২১:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০১৭
  • ২৪৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লালমনিরহাট-১ আসন আওয়ামী লীগের দুর্গ। এখানে প্রার্থীর পরিচয়েই ভোটাররা ভোট দেন। এক সময় এরশাদের জনপ্রিয়তা ছিল এখন তা তলানিতে। এ নিয়ে টেনশনে জাপা। সবদিক দিয়েই এগিয়ে রয়েছেন এমপি মোতাহার হোসেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হওয়ায় তার মনোনয়ন চূড়ান্ত- এমনটাই মনে করছেন ভোটার ও সমর্থকরা। জামায়াত আত্মগোপন করায় বিএনপি একাই চালাচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা। তবে জামায়াতের অনেক নেতাই এখন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। লালমনিরহাট-১ আসনে সর্বত্র চলছে নির্বাচনী আমেজ। দিন যত ঘনিয়ে আসছে তত নির্বাচনী হাওয়া জটিল হয়ে উঠছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট-১ আসনে। প্রার্থীরাও কৌশল পাল্টিয়ে চালাচ্ছেন প্রচারণা। গত নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন জয়লাভ করেন। সাধারণ ভোটারদের মন জয় করায় এমপি মোতাহার হোসেন রয়েছেন সুবিধাজনক অবস্থানে। অগোছালো বিএনপিকে সাজাচ্ছেন নতুন আঙ্গিকে ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান। দিন-রাত চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা। লালমনিরহাট-১ আসনের দুই উপজেলা পাটগ্রাম-হাতিবান্ধার প্রায় ১২ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলায় দিয়ে কোণঠাসা করে রাখা হয়। ব্যারিস্টার হাসান রাজিব ওই নেতাকর্মীদের আইনের মাধ্যমে বের করে তাদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছেন। নেতাকর্মীরা এক যোগে হাসান রাজিব প্রধানের সঙ্গে গোচাচ্ছেন বিএনপি। করছেন সুসংগঠিত। তাদের নিয়ে এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। এ আসন হাতিবান্ধা-পাটগ্রাম উপজেলা নিয়ে গঠিত হলেও চারদিকে রয়েছে সীমান্ত। লালমনিরহাট জেলার ৩টি আসনের মধ্যে লালমনিরহাট-১ আসনটি ভিআইপি আসন। আলোচিত তিন বিঘা করিডোর, বুড়িমারী স্থলবন্দর, তিস্তা ব্যারেজ ও সীমান্ত পয়েন্ট রয়েছে এ আসনে। সব দলের টার্গেট এ আসনটি। এ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন। গত নির্বাচনে জাপা চেয়ারম্যান হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে ১ লাখ ৭৭ হাজার ভোটে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। এবারো সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে নাম শোনা যাচ্ছে মোতাহার হোসেনের। জাপার সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম শোনা যাচ্ছে মেজর (অব.) খালিদ ও হাতিবান্ধা উপজেলা জাপার সভাপতি এমজি মোস্তফার নাম। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছে ছয়জন। তারা হলেন ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান, হাতিবান্ধা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন, হাতিবান্ধা উপজেলায় যুবদল সাধারণ সম্পাদক ও হাতিবান্ধা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান এএসএম শামসুজ্জামান সেলিম। এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় জাকের পার্টির অন্যতম সদস্য অধ্যক্ষ আলহাজ নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড শওকত হোসেন আহম্মেদ। হাতিবান্ধা-পাটগ্রাম উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনের সবর্ত্র চলছে নির্বাচনী আমেজ। চলছে উঠান বৈঠক। ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ২ হাজার ৭০০ দুজন। তার মধ্যে পাটগ্রাম উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৪৪ হাজার ১২৮ জন। হাতিবান্ধা উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৭৯ জন। গত সংসদ নির্বাচনে মোতাহার হোসেন জয়লাভ করে এলাকায় করেছেন ব্যাপক উন্নয়ন। তার আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে মোতাহার হোসেন প্রায় ২৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। নির্বাচনী এলাকায় স্কুল- কলেজ ভবন নির্মাণ করে শিক্ষাক্ষেত্রে করেছেন আধুনিকায়ন। ন্যাশনাল সার্ভিস মাধ্যমে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, ধরলা সেতু নির্মাণ করে সাধারণ ভোটারদের কাছে নিজেকে জনপ্রিয় করে তুলেন। প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে সারা দেশে পিএসপি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা তার অবদান। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি করেছেন। বিগত দিনে বিএনপির প্রার্থী সংকট থাকায় ৪ দলীয় জোট তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি। জামায়াতের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জটিলতা থাকায় আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে বেশি। ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান বলেন, সরকারের দায়েরকৃত অসংখ্য মামলা মাথায় নিয়ে নেতাকর্মীরা হয়রানির শিকার হন। দুঃসময়ে আমি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। দল মনোনয়ন দিলে নিশ্চিত জয় উপহার দেবো দেশনেত্রীকে। জাতীয় পার্টি সম্ভাব্য প্রার্থী মেজর (অব.) খালেদ জানান, এ আসন জাপার ছিল। এ আসন পুনরায় উদ্ধার করে জনগণের দাবি পূরণ করবো। ওদিকে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন জানান, মহাজোট সরকারের সময়ে এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আধুনিক সড়ক ব্যবস্থা করা হয়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বয়ষ্কভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এলাকার উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। তবে আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আবারো মনোনয়ন দিলে আমি বাকি কাজ সম্পন্ন করবো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নির্ভার আওয়ামী লীগ, হতাশায় বিএনপি, দুশ্চিন্তায় জাপা

আপডেট টাইম : ১১:২১:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লালমনিরহাট-১ আসন আওয়ামী লীগের দুর্গ। এখানে প্রার্থীর পরিচয়েই ভোটাররা ভোট দেন। এক সময় এরশাদের জনপ্রিয়তা ছিল এখন তা তলানিতে। এ নিয়ে টেনশনে জাপা। সবদিক দিয়েই এগিয়ে রয়েছেন এমপি মোতাহার হোসেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হওয়ায় তার মনোনয়ন চূড়ান্ত- এমনটাই মনে করছেন ভোটার ও সমর্থকরা। জামায়াত আত্মগোপন করায় বিএনপি একাই চালাচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা। তবে জামায়াতের অনেক নেতাই এখন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। লালমনিরহাট-১ আসনে সর্বত্র চলছে নির্বাচনী আমেজ। দিন যত ঘনিয়ে আসছে তত নির্বাচনী হাওয়া জটিল হয়ে উঠছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট-১ আসনে। প্রার্থীরাও কৌশল পাল্টিয়ে চালাচ্ছেন প্রচারণা। গত নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন জয়লাভ করেন। সাধারণ ভোটারদের মন জয় করায় এমপি মোতাহার হোসেন রয়েছেন সুবিধাজনক অবস্থানে। অগোছালো বিএনপিকে সাজাচ্ছেন নতুন আঙ্গিকে ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান। দিন-রাত চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা। লালমনিরহাট-১ আসনের দুই উপজেলা পাটগ্রাম-হাতিবান্ধার প্রায় ১২ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলায় দিয়ে কোণঠাসা করে রাখা হয়। ব্যারিস্টার হাসান রাজিব ওই নেতাকর্মীদের আইনের মাধ্যমে বের করে তাদের কাছে জনপ্রিয় হয়েছেন। নেতাকর্মীরা এক যোগে হাসান রাজিব প্রধানের সঙ্গে গোচাচ্ছেন বিএনপি। করছেন সুসংগঠিত। তাদের নিয়ে এলাকায় চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। এ আসন হাতিবান্ধা-পাটগ্রাম উপজেলা নিয়ে গঠিত হলেও চারদিকে রয়েছে সীমান্ত। লালমনিরহাট জেলার ৩টি আসনের মধ্যে লালমনিরহাট-১ আসনটি ভিআইপি আসন। আলোচিত তিন বিঘা করিডোর, বুড়িমারী স্থলবন্দর, তিস্তা ব্যারেজ ও সীমান্ত পয়েন্ট রয়েছে এ আসনে। সব দলের টার্গেট এ আসনটি। এ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন। গত নির্বাচনে জাপা চেয়ারম্যান হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে ১ লাখ ৭৭ হাজার ভোটে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। এবারো সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে নাম শোনা যাচ্ছে মোতাহার হোসেনের। জাপার সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম শোনা যাচ্ছে মেজর (অব.) খালিদ ও হাতিবান্ধা উপজেলা জাপার সভাপতি এমজি মোস্তফার নাম। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছে ছয়জন। তারা হলেন ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান, হাতিবান্ধা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন, হাতিবান্ধা উপজেলায় যুবদল সাধারণ সম্পাদক ও হাতিবান্ধা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান এএসএম শামসুজ্জামান সেলিম। এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় জাকের পার্টির অন্যতম সদস্য অধ্যক্ষ আলহাজ নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড শওকত হোসেন আহম্মেদ। হাতিবান্ধা-পাটগ্রাম উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনের সবর্ত্র চলছে নির্বাচনী আমেজ। চলছে উঠান বৈঠক। ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ২ হাজার ৭০০ দুজন। তার মধ্যে পাটগ্রাম উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৪৪ হাজার ১২৮ জন। হাতিবান্ধা উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৭৯ জন। গত সংসদ নির্বাচনে মোতাহার হোসেন জয়লাভ করে এলাকায় করেছেন ব্যাপক উন্নয়ন। তার আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে মোতাহার হোসেন প্রায় ২৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। নির্বাচনী এলাকায় স্কুল- কলেজ ভবন নির্মাণ করে শিক্ষাক্ষেত্রে করেছেন আধুনিকায়ন। ন্যাশনাল সার্ভিস মাধ্যমে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, ধরলা সেতু নির্মাণ করে সাধারণ ভোটারদের কাছে নিজেকে জনপ্রিয় করে তুলেন। প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে সারা দেশে পিএসপি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা তার অবদান। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে এবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি করেছেন। বিগত দিনে বিএনপির প্রার্থী সংকট থাকায় ৪ দলীয় জোট তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি। জামায়াতের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জটিলতা থাকায় আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে বেশি। ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান বলেন, সরকারের দায়েরকৃত অসংখ্য মামলা মাথায় নিয়ে নেতাকর্মীরা হয়রানির শিকার হন। দুঃসময়ে আমি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। দল মনোনয়ন দিলে নিশ্চিত জয় উপহার দেবো দেশনেত্রীকে। জাতীয় পার্টি সম্ভাব্য প্রার্থী মেজর (অব.) খালেদ জানান, এ আসন জাপার ছিল। এ আসন পুনরায় উদ্ধার করে জনগণের দাবি পূরণ করবো। ওদিকে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন জানান, মহাজোট সরকারের সময়ে এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আধুনিক সড়ক ব্যবস্থা করা হয়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বয়ষ্কভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এলাকার উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। তবে আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আবারো মনোনয়ন দিলে আমি বাকি কাজ সম্পন্ন করবো।