ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্ধুবর রিজভী, ভুল পথে আর কতকাল হাঁটবেন ঃ মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০১৭
  • ৩৬০ বার

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা একজন জলজ্যান্ত জীবিত মানুষ। তিনি দিব্যি ঘুরে ফিরে চলছেন। তিনি ( এস কে সিনহার ভাষ্যমত) স্বাস্থ্যগত কারণে একমাস ছুটি চেয়েছেন এবং সরকার যথারীতি ছুটি দিয়েছে এবং ছুটিকালীন উনার পদে আরেকজন সম্মানীয় বিচারপতিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দিয়েছেন যা গ্রহণ করে মাননীয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি যথারীতি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণ এবং বিচারকার্য শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে সিনহা সাহেবকে জোর করে বা ছুটির দরখাস্ত জাল করে ছুটি দেয়ার প্রশ্ন এখন আর উঠে না। যদি ঘটনাটির কোনো সত্যতা দেখেও থাকে তাহলেও সরকার যে দক্ষতা এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে সে প্রসঙ্গ ধামাচাপা দিতে পেরেছে তাতে কারও কোনো সন্দেহ নাই।

তাছাড়াও সব চেয়ে বড় বিষয় হলো প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা একজন দক্ষ, বিবেকবান, সাহসী এবং জ্ঞ্যানী বিচারক। তিনি সত্য প্রকাশে কখনই ভীত ছিলেন না। বিচারক হিসেবে জাতি তাহাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। এমন একজন বিজ্ঞ সাহসী বিচারককে সরকার জোর করে ছুটি দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন তা কিন্তু সিনহা সাহেব একবারও বলেননি, এমন কি আকারে ইঙ্গিতেও বলেননি। তাহলে রিজভী কী করে জানলেন যে প্রধান বিচারপতি সিনহাকে ‘বল প্রয়োগ করে এক মাসের ছুটি দেওয়ার ঘটনার পর এখন প্রধান বিচারপতিকে দেশ ত্যাগের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।’

এখন যদি রিজভীকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করায়ে তার বক্তব্যের প্রমাণ চাওয়া হয় তাহলে সিনহা সাহেব কি রিজভীকে বাঁচানোর জন্য রিজভীর পক্ষে দাঁড়াবেন? তাছাডা আরেকটি প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের যদি দেখা করতে দেয়া হয় তাহলে সিনহা সাহেব কি তাদের কাছে বলবেন যে সিনহাকে জোর করে ছুটি দিয়ে এখন বিদেশে চলে যেতে চাপ সৃষ্টি করছে? আমি শত ভাগ নিশ্চিত যে সিনহা সাহেব তা কখনই বলবেন না। জনাব রিজভী দয়া করে ভুলে যাবেন না, সিনহা তাদের লোক, আপনার নয়। সিনহা পাগল হলেও বোঝে তার ঘর কোথায়!

রাজনীতি ব্যক্তি তুষ্টির জায়গা নয়। পদধারী নেতা আর রাজনৈতিক নেতা এক নয়। রাজনীতিকে এত সহজ সরল সমীকরণে ফেলবেন না। বার কাউন্সিলের নেতা আর দলের নেতা এক নয়। বার কাউন্সিল পেশাজীবী সংগঠন যাদের পেশাগত অনেক স্বার্থ রাজনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেহেতু আপনি দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তাই কিছু বলার আগে নিশ্চিত হতে হবে আপনার বক্তব্য দলের নীতি ও সিদ্ধান্তের আলোকে কি না।

দয়া করে বক্তব্য সর্বস্ব ও ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের রাজনীতি নামের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে মাঠে ময়দানে বা রাজপথে আসেন। জানি তার জন্য জেল জুলুম নির্যাতন ভোগ করতে হবে যার জন্য সাহস দরকার। আপনি অতীতে আমাদের চেয়ে বেশি সাহসী ছিলেন বলেই এত বড় পদ পেয়েছেন এবং আগামীতে রাজপথে থাকলে আরো বড় পদ পাবেন।

পরিশেষে বিনয়ের সঙ্গে বলবো সামনে সুদিন। যদি ভালভাবে এবং সময়ের চাহিদা পূরণের রাজনীতি মাঠে ময়দানে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে সামনে আরো বড় বড় জাতীয় পদ অপেক্ষা করছে। দয়া করে সব বিষয়ে বিজ্ঞ জাহির করার জন্য অহেতুক বক্তব্য দেয়ার অভ্যাস পরিহার করে ধানের শীষের রাজনীতি সমগ্র দেশব্যাপী শুরু করেন। জয় হবেই হবে।

লেখক: সাবেক সংসদ সদস্য

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বন্ধুবর রিজভী, ভুল পথে আর কতকাল হাঁটবেন ঃ মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান

আপডেট টাইম : ১০:২৩:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ অক্টোবর ২০১৭

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা একজন জলজ্যান্ত জীবিত মানুষ। তিনি দিব্যি ঘুরে ফিরে চলছেন। তিনি ( এস কে সিনহার ভাষ্যমত) স্বাস্থ্যগত কারণে একমাস ছুটি চেয়েছেন এবং সরকার যথারীতি ছুটি দিয়েছে এবং ছুটিকালীন উনার পদে আরেকজন সম্মানীয় বিচারপতিকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দিয়েছেন যা গ্রহণ করে মাননীয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি যথারীতি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণ এবং বিচারকার্য শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে সিনহা সাহেবকে জোর করে বা ছুটির দরখাস্ত জাল করে ছুটি দেয়ার প্রশ্ন এখন আর উঠে না। যদি ঘটনাটির কোনো সত্যতা দেখেও থাকে তাহলেও সরকার যে দক্ষতা এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে সে প্রসঙ্গ ধামাচাপা দিতে পেরেছে তাতে কারও কোনো সন্দেহ নাই।

তাছাড়াও সব চেয়ে বড় বিষয় হলো প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা একজন দক্ষ, বিবেকবান, সাহসী এবং জ্ঞ্যানী বিচারক। তিনি সত্য প্রকাশে কখনই ভীত ছিলেন না। বিচারক হিসেবে জাতি তাহাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। এমন একজন বিজ্ঞ সাহসী বিচারককে সরকার জোর করে ছুটি দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন তা কিন্তু সিনহা সাহেব একবারও বলেননি, এমন কি আকারে ইঙ্গিতেও বলেননি। তাহলে রিজভী কী করে জানলেন যে প্রধান বিচারপতি সিনহাকে ‘বল প্রয়োগ করে এক মাসের ছুটি দেওয়ার ঘটনার পর এখন প্রধান বিচারপতিকে দেশ ত্যাগের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।’

এখন যদি রিজভীকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করায়ে তার বক্তব্যের প্রমাণ চাওয়া হয় তাহলে সিনহা সাহেব কি রিজভীকে বাঁচানোর জন্য রিজভীর পক্ষে দাঁড়াবেন? তাছাডা আরেকটি প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের যদি দেখা করতে দেয়া হয় তাহলে সিনহা সাহেব কি তাদের কাছে বলবেন যে সিনহাকে জোর করে ছুটি দিয়ে এখন বিদেশে চলে যেতে চাপ সৃষ্টি করছে? আমি শত ভাগ নিশ্চিত যে সিনহা সাহেব তা কখনই বলবেন না। জনাব রিজভী দয়া করে ভুলে যাবেন না, সিনহা তাদের লোক, আপনার নয়। সিনহা পাগল হলেও বোঝে তার ঘর কোথায়!

রাজনীতি ব্যক্তি তুষ্টির জায়গা নয়। পদধারী নেতা আর রাজনৈতিক নেতা এক নয়। রাজনীতিকে এত সহজ সরল সমীকরণে ফেলবেন না। বার কাউন্সিলের নেতা আর দলের নেতা এক নয়। বার কাউন্সিল পেশাজীবী সংগঠন যাদের পেশাগত অনেক স্বার্থ রাজনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেহেতু আপনি দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তাই কিছু বলার আগে নিশ্চিত হতে হবে আপনার বক্তব্য দলের নীতি ও সিদ্ধান্তের আলোকে কি না।

দয়া করে বক্তব্য সর্বস্ব ও ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের রাজনীতি নামের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে মাঠে ময়দানে বা রাজপথে আসেন। জানি তার জন্য জেল জুলুম নির্যাতন ভোগ করতে হবে যার জন্য সাহস দরকার। আপনি অতীতে আমাদের চেয়ে বেশি সাহসী ছিলেন বলেই এত বড় পদ পেয়েছেন এবং আগামীতে রাজপথে থাকলে আরো বড় পদ পাবেন।

পরিশেষে বিনয়ের সঙ্গে বলবো সামনে সুদিন। যদি ভালভাবে এবং সময়ের চাহিদা পূরণের রাজনীতি মাঠে ময়দানে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে সামনে আরো বড় বড় জাতীয় পদ অপেক্ষা করছে। দয়া করে সব বিষয়ে বিজ্ঞ জাহির করার জন্য অহেতুক বক্তব্য দেয়ার অভ্যাস পরিহার করে ধানের শীষের রাজনীতি সমগ্র দেশব্যাপী শুরু করেন। জয় হবেই হবে।

লেখক: সাবেক সংসদ সদস্য