ঢাকা ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আরো ৫০ হাজার টন চাল আসছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২৫:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৪৩০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে আরো ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এজন্য ব্যয় হবে ১৮১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। তবে খাদ্য সচিব জানিয়েছেন, সরকার আগামী নভেম্বরের মধ্যে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে মোট নয় লাখ টন চাল ও গম আমদানি করবে।

বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

চলতি বছর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার কারণে ফসলি জমি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ায় সরকারের ধান, চাল ও গম সংগ্রহ ব্যর্থ হয়। একই সঙ্গে বন্যা কবলিত মানুষের ত্রাণ সহায়তার জন্য খাদ্য ঘাটতি বেড়ে যায়।

এই বাস্তবতায় খাদ্য ঘাটতি মেটাতে সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হতে ২০ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ১৫ লাখ টন চাল এবং ৫ লাখ টন গম।

বৈঠক শেষে খাদ্য সচিব মো. কায়কোবাদ হোসাইন বলেন, এ পর্যন্ত সরকার থেকে সরকার (জি টু জি) পদ্ধতিতে মোট ৯ লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখ টন চাল এসেছে। দেড় লাখ টন চাল দেশে আসার পথে আছে। বাকি সাড়ে ৫ লাখ টন চাল ১২ নভেম্বরের মধ্যে আসবে বলে আশা করছি।

জি টু জি পদ্ধতিতে আমদানি হলে দাম বেশি হয় কিন্তু আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে চাল আসলে দাম কম হয় কেন-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক টেন্ডারে অনেক সময় বিভিন্ন কোম্পানি চাল আমদানি করে দেওয়ার চুক্তিভুক্ত হলেও পরে আমদানি করে না। তাই সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু জি টু জি-তে চুক্তি হলে আমদানি কনফার্ম এবং অবশ্যই চালের মান ভালো হয়।

অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে প্যাকেজ-৪ এর আওতায় ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির একটি ক্রয় প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এ চাল আমদানি করা হবে।

থাইল্যান্ডভিত্তিক মেসার্স সিয়াম ট্রেডিং এ চাল সরবরাহ করবে। প্রতি টনের দাম ৪৩৮ ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১৮১ কাটি ৭৭ লাখ টাকা। এলসি খোলার ৪০দিনের মধ্যে এ চাল দেশে আসবে।

তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলার বাঁকখালি নদী বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিস্কাশন, সেচ ও ড্রেজিং (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাঁধ নির্মাণ, নদী খনন, বাঁধ সুরক্ষা, খাল পুনঃখননসহ বিভিন্ন কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এজন্য ব্যয় হবে ১৫০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

বৈঠকে ময়মনসিংহে বেসরকারি খাতে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, হাইস্পিড ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ১৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম পড়বে ৮ দশমিক ৪১৬৬ টাকা। এ হিসেবে ১৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ ক্রয়ে সরকারের ব্যয় হবে ১৭ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড কোম্পানি।

তিনি বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২৩ হাজার ২১১টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ১৭০ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আরো ৫০ হাজার টন চাল আসছে

আপডেট টাইম : ০৭:২৫:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে আরো ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এজন্য ব্যয় হবে ১৮১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। তবে খাদ্য সচিব জানিয়েছেন, সরকার আগামী নভেম্বরের মধ্যে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে মোট নয় লাখ টন চাল ও গম আমদানি করবে।

বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

চলতি বছর উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার কারণে ফসলি জমি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ায় সরকারের ধান, চাল ও গম সংগ্রহ ব্যর্থ হয়। একই সঙ্গে বন্যা কবলিত মানুষের ত্রাণ সহায়তার জন্য খাদ্য ঘাটতি বেড়ে যায়।

এই বাস্তবতায় খাদ্য ঘাটতি মেটাতে সরকার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হতে ২০ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ১৫ লাখ টন চাল এবং ৫ লাখ টন গম।

বৈঠক শেষে খাদ্য সচিব মো. কায়কোবাদ হোসাইন বলেন, এ পর্যন্ত সরকার থেকে সরকার (জি টু জি) পদ্ধতিতে মোট ৯ লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখ টন চাল এসেছে। দেড় লাখ টন চাল দেশে আসার পথে আছে। বাকি সাড়ে ৫ লাখ টন চাল ১২ নভেম্বরের মধ্যে আসবে বলে আশা করছি।

জি টু জি পদ্ধতিতে আমদানি হলে দাম বেশি হয় কিন্তু আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে চাল আসলে দাম কম হয় কেন-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক টেন্ডারে অনেক সময় বিভিন্ন কোম্পানি চাল আমদানি করে দেওয়ার চুক্তিভুক্ত হলেও পরে আমদানি করে না। তাই সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু জি টু জি-তে চুক্তি হলে আমদানি কনফার্ম এবং অবশ্যই চালের মান ভালো হয়।

অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে প্যাকেজ-৪ এর আওতায় ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির একটি ক্রয় প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এ চাল আমদানি করা হবে।

থাইল্যান্ডভিত্তিক মেসার্স সিয়াম ট্রেডিং এ চাল সরবরাহ করবে। প্রতি টনের দাম ৪৩৮ ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১৮১ কাটি ৭৭ লাখ টাকা। এলসি খোলার ৪০দিনের মধ্যে এ চাল দেশে আসবে।

তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলার বাঁকখালি নদী বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিস্কাশন, সেচ ও ড্রেজিং (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাঁধ নির্মাণ, নদী খনন, বাঁধ সুরক্ষা, খাল পুনঃখননসহ বিভিন্ন কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এজন্য ব্যয় হবে ১৫০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

বৈঠকে ময়মনসিংহে বেসরকারি খাতে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি বলেন, হাইস্পিড ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ১৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম পড়বে ৮ দশমিক ৪১৬৬ টাকা। এ হিসেবে ১৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ ক্রয়ে সরকারের ব্যয় হবে ১৭ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড কোম্পানি।

তিনি বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২৩ হাজার ২১১টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ১৭০ কোটি ২৪ লাখ টাকা।