ঢাকা ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাজের চোখে যৌথ প্রযোজনার নীতিমালার অসঙ্গতি সমূহ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ৩৪৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে। এই বিষয়ে চলচ্চিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে আন্দোলনও করা হয়েছে। সেই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত স্থগিত রয়েছে যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণ। এরপর থেকে সরকার যৌথ প্রযোজনার খসড়া নীতিমালার কাজ দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেয়। ফলস্বরুপ তথ্যমন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই নীতিমালার খসড়া সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের নীতিমালাকে ভিত্তি ধরে নতুন নীতিমালাটি করা হয়েছে। এদিকে দেশীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ যৌথ প্রযোজনায় বেশকিছু সিনেমা নির্মাণ করেছে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ যৌথ প্রযোজনার নীতিমালার অসঙ্গতি সমূহ নিয়ে কথা বলেছেন। জাজ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক  পেইজে সেটি পোস্ট করেছে। সেখানে লেখা হয়েছে – যৌথ প্রযোজনার নীতিমালার অসঙ্গতি সমূহঃ  যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের নীতিমালা – ২০১৭ (প্রস্তাবিত)ঃ গ. (০২) যেকোনো ব্যবসায় ব্যবসায়ী তার কিছু গোপনীয়তা রাখবে। তাই বিনিয়োগের পরিমাণ জানানো একজন প্রযোজকের জন্য অবশ্যই অস্বস্তিকর। তাছাড়া সিনেমা সম্পূর্ণ ভাবে শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক বাজেট করা  কোন ভাবেই সম্ভব নয়। যেমন, বৃষ্টি বা শিল্পীর অসুস্থতার কারণে শুটিং ৩ দিন বেড়ে গেলে, সিনেমার খরচ ১০ লক্ষ টাকা বেড়ে যায় । যা কখনই পূর্বে অনুমান করা সম্ভব নয়। (০৪) যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রের বিদেশি প্রযোজকের প্রদত্ত অনুমতি / ছাড়পত্র / এন্ডোরসমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। এবং তা প্রিভিউ কমিটিকে সিনেমা দেখানোর সময় তা দাখিল করতে হবে। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন দ্বারা সত্যায়িত করা, যৌথ প্রযোজনার প্রক্রিয়াকে জটিল করবে। (০৬) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য চলচ্চিত্রের পরীক্ষা ও পর্যালোচনার কমিটিতে অবশ্যই শিল্পী সমিতির প্রতিনিধি থাকবে। কারণ চলচ্চিত্রে একজন শিল্পী শুধুমাত্র পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করে। তাই শিল্পী সমিতির প্রতিনিধিত্ব এই প্রক্রিয়ার শুধু জটিলতাই বাড়াবে। (০৭) চলচ্চিত্রের প্রযোজক অথবা তার মনোনীত প্রতিনিধিকে বাছাই কমিটির সভায় উপস্থিত থাকতে দেওয়া বাঞ্চনীয়। (০৯) যৌথ প্রযোজনায় নির্মাণের জন্য আবেদন পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে বিএফডিসি তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে এবং মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। (১০) বিএফডিসির সিদ্ধান্ত পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে, মন্ত্রণালয় তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বাধ্য থাকবে। (১১) আবার কেন ফাইল বিএফডিসি  তে আসবে? এর কোন প্রয়োজন নেই, এতে শুধুই সময় ক্ষেপণ মাত্র। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনই চূড়ান্ত অনুমোদন বলে বিবেচনা করতে হবে। (ঙ) (০১) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রের কাহিনী মৌলিক হতে হবে, কিন্তু যদি কোন সিনেমার অবলম্বনে বানানো হয়, তবে সেই ক্ষেত্রে কপি রাইট এর পত্র দাখিল করতে হবে। (০২) চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নিয়োজিত পরিচালক, মুখ্য অভিনয়শিল্পী এবং কলাকুশলীর সংখ্যা, যৌথ প্রযোজক গণ যৌথ প্রযোজনা চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন। চলচ্চিত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যে কোন একজন পরিচালক হলেই হবে। তবে শিল্পী ও কলাকুশলী সমানুপাতিক হারে হবে। (০৪) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রের শুটিং এর লোকেশন কাহিনী ও চিত্রনাট্য এর প্রয়োজন অনুসারে হবে। (০৫) এই পয়েন্টে সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে। অনেক সময় অনুমোদন পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় । কিন্তু ব্যস্ত আর্টিস্টের শিডিউল চলে যাবে বলে প্রযোজক শুটিং করতে বাধ্য হন। (০৬) যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার ৪৫ দিন অতিক্রান্ত না হলে চলচ্চিত্র প্রিভিউ এর জন্য জমা দেয়া যাবে না। (১০) যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বিদেশি নির্মাতাগণের সাথে ক্যামেরা ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা ও ফেরত নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সহজিকরণের জন্য বিদেশী যন্ত্রপাতি আনা ও নেওয়ার জন্য বিএফডিসি এর অনুমোদনই যথেষ্ট। (যেখানে বড় বড় গার্মেন্টস ও অন্যান্য আমদানি রপ্তানিতে অভিজ্ঞ ফ্যাক্টরি হিমসিম খায় ও দীর্ঘ সময় লাগে, সেখানে আমদানি রপ্তানিতে অনভিজ্ঞ চলচ্চিত্র প্রযোজকগণ কিভাবে এত সব অফিসের সম্মুখীন হবে?)

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

জাজের চোখে যৌথ প্রযোজনার নীতিমালার অসঙ্গতি সমূহ

আপডেট টাইম : ০৭:৫১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে। এই বিষয়ে চলচ্চিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে আন্দোলনও করা হয়েছে। সেই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আপাতত স্থগিত রয়েছে যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণ। এরপর থেকে সরকার যৌথ প্রযোজনার খসড়া নীতিমালার কাজ দ্রুত শেষ করার উদ্যোগ নেয়। ফলস্বরুপ তথ্যমন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই নীতিমালার খসড়া সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের নীতিমালাকে ভিত্তি ধরে নতুন নীতিমালাটি করা হয়েছে। এদিকে দেশীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ যৌথ প্রযোজনায় বেশকিছু সিনেমা নির্মাণ করেছে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ যৌথ প্রযোজনার নীতিমালার অসঙ্গতি সমূহ নিয়ে কথা বলেছেন। জাজ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক  পেইজে সেটি পোস্ট করেছে। সেখানে লেখা হয়েছে – যৌথ প্রযোজনার নীতিমালার অসঙ্গতি সমূহঃ  যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের নীতিমালা – ২০১৭ (প্রস্তাবিত)ঃ গ. (০২) যেকোনো ব্যবসায় ব্যবসায়ী তার কিছু গোপনীয়তা রাখবে। তাই বিনিয়োগের পরিমাণ জানানো একজন প্রযোজকের জন্য অবশ্যই অস্বস্তিকর। তাছাড়া সিনেমা সম্পূর্ণ ভাবে শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক বাজেট করা  কোন ভাবেই সম্ভব নয়। যেমন, বৃষ্টি বা শিল্পীর অসুস্থতার কারণে শুটিং ৩ দিন বেড়ে গেলে, সিনেমার খরচ ১০ লক্ষ টাকা বেড়ে যায় । যা কখনই পূর্বে অনুমান করা সম্ভব নয়। (০৪) যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্রের বিদেশি প্রযোজকের প্রদত্ত অনুমতি / ছাড়পত্র / এন্ডোরসমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। এবং তা প্রিভিউ কমিটিকে সিনেমা দেখানোর সময় তা দাখিল করতে হবে। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন দ্বারা সত্যায়িত করা, যৌথ প্রযোজনার প্রক্রিয়াকে জটিল করবে। (০৬) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য চলচ্চিত্রের পরীক্ষা ও পর্যালোচনার কমিটিতে অবশ্যই শিল্পী সমিতির প্রতিনিধি থাকবে। কারণ চলচ্চিত্রে একজন শিল্পী শুধুমাত্র পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করে। তাই শিল্পী সমিতির প্রতিনিধিত্ব এই প্রক্রিয়ার শুধু জটিলতাই বাড়াবে। (০৭) চলচ্চিত্রের প্রযোজক অথবা তার মনোনীত প্রতিনিধিকে বাছাই কমিটির সভায় উপস্থিত থাকতে দেওয়া বাঞ্চনীয়। (০৯) যৌথ প্রযোজনায় নির্মাণের জন্য আবেদন পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে বিএফডিসি তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে এবং মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। (১০) বিএফডিসির সিদ্ধান্ত পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে, মন্ত্রণালয় তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বাধ্য থাকবে। (১১) আবার কেন ফাইল বিএফডিসি  তে আসবে? এর কোন প্রয়োজন নেই, এতে শুধুই সময় ক্ষেপণ মাত্র। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনই চূড়ান্ত অনুমোদন বলে বিবেচনা করতে হবে। (ঙ) (০১) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রের কাহিনী মৌলিক হতে হবে, কিন্তু যদি কোন সিনেমার অবলম্বনে বানানো হয়, তবে সেই ক্ষেত্রে কপি রাইট এর পত্র দাখিল করতে হবে। (০২) চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য নিয়োজিত পরিচালক, মুখ্য অভিনয়শিল্পী এবং কলাকুশলীর সংখ্যা, যৌথ প্রযোজক গণ যৌথ প্রযোজনা চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারণ করবেন। চলচ্চিত্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যে কোন একজন পরিচালক হলেই হবে। তবে শিল্পী ও কলাকুশলী সমানুপাতিক হারে হবে। (০৪) যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্রের শুটিং এর লোকেশন কাহিনী ও চিত্রনাট্য এর প্রয়োজন অনুসারে হবে। (০৫) এই পয়েন্টে সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে। অনেক সময় অনুমোদন পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় । কিন্তু ব্যস্ত আর্টিস্টের শিডিউল চলে যাবে বলে প্রযোজক শুটিং করতে বাধ্য হন। (০৬) যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার ৪৫ দিন অতিক্রান্ত না হলে চলচ্চিত্র প্রিভিউ এর জন্য জমা দেয়া যাবে না। (১০) যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বিদেশি নির্মাতাগণের সাথে ক্যামেরা ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা ও ফেরত নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সহজিকরণের জন্য বিদেশী যন্ত্রপাতি আনা ও নেওয়ার জন্য বিএফডিসি এর অনুমোদনই যথেষ্ট। (যেখানে বড় বড় গার্মেন্টস ও অন্যান্য আমদানি রপ্তানিতে অভিজ্ঞ ফ্যাক্টরি হিমসিম খায় ও দীর্ঘ সময় লাগে, সেখানে আমদানি রপ্তানিতে অনভিজ্ঞ চলচ্চিত্র প্রযোজকগণ কিভাবে এত সব অফিসের সম্মুখীন হবে?)