ঢাকা ০৮:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যা: বাংলাদেশ, ভারত, নেপালে মৃত ৬০০, আক্রান্ত ২ কোটি মানুষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২৯:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৭৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ, ভারত, নেপালে ভয়াবহ বন্যাকবলিত কমপক্ষে ২ কোটি মানুষ। তিনটি দেশে সব মিলিয়ে বন্যায় মারা গেছে কমপক্ষে ৬০০ মানুষ। শুধু ভারতের বিহার রাজ্যেই এক কোটির বেশি মানুষ দুর্ভোগে। জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, মৌসুমি ভারি বর্ষণ তীব্র হয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। এতে আসাম, উত্তর প্রদেশ ও বিহার রাজ্যে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অন্যদিকে এ সপ্তাহে বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যায়। টানা ৬ দিনের ভারি বর্ষণে গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে। কূল উপচে তা দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে নিমজ্জিত করছে। বন্যায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে গৃহহারা হয়েছে কমপক্ষে ২২ লাখ মানুষ। এরমধ্যে কমপক্ষে ৬ লাখই শিশু। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বন্যায় মারা গেছে ৩৭ জন। ২০টি জেলায় শত শত স্কুল বন্ধ রয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। ৩ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমির ফসল মারাত্মকভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। বাংলাদেশে সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্ক পিয়ার্স বলেন, গত বছর বাংলাদেশে বন্যা কঠিনভাবে আঘাত করেছিল। কিন্তু এবারের বন্যা মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে তার চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহ। বন্যাদুর্গত পরিবারগুলো হন্যে হয়ে খুঁজছে একটু আশ্রয়, খাদ্য, পানি ও মৌলিক চাহিদাগুলো। অনেক পরিবার পানির মারাত্মক সংকটে রয়েছে। এটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি আরো বলেন, পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা জানি দীর্ঘমেয়াদে এসব মানুষকে সাপোর্ট দিতে হবে। দুর্গত এসব মানুষকে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে। এরমধ্যে রয়েছে শিশুদের স্কুল খুলে দেয়া, সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ক্লাসরুমে নিয়ম ফেরানো ও কৃষকদের তাদের পায়ের ওপর দাঁড় করতে সহায়তা করা। সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, জুলাই থেকে ভারতে সৃষ্ট বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে কমপক্ষে এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ। এরমধ্যে গত কয়েক দিনে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়েছে দ্রুততায়। ভারতে সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থমাস চ্যান্ডি বলেন, সেখানে কমপক্ষে ৬৮ লাখ শিশু বন্যায় আক্রান্ত। এমন অবস্থায় সব সময়ই শিশুরা মানবিক সংকটে পড়ে। এ বিষয়টিতে অবিলম্বে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। ভারতে সেভ দ্য চিলড্রেনের মানবিকতা বিষয়ক অপারেশন ম্যানেজার মুরালি কুন্ডুরু বলেন, যদিও আমরা জানি প্রতি বছরই এমন বৃষ্টিপাত হয়, কিন্তু এ বছরের বৃষ্টি ছিল অতিবর্ষণ। বিহারে এমনও নদী আছে যেখানে কয়েক দশক ধরে বৃষ্টির পানি জমা হয়নি। কিন্তু এবার বৃষ্টিপাতের ফলে সেখানে আধা মিটারের বেশি পানি উপচে পড়েছে। যেসব শিশু খুব বেশি বন্যায় আক্রান্ত তাদের সহায়তা দিতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে সেভ দ্য চিলড্রেন। ওদিকে নেপালে বেশির ভাগ এলাকায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে তাতে দ্বিতীয় পর্যায়ে জরুরি মাত্রায় একটি ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। সেভ দ্য চিলড্রেন সতর্কতা দিয়েছে। বলেছে, যে ময়লা পানি, তার সঙ্গে বিভিন্ন রকম ময়লা, চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাতে নানা রকম রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেপালে সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর বেলাইলাহ বোরজা বলেন, ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে চেষ্টা করা হচ্ছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বন্যা: বাংলাদেশ, ভারত, নেপালে মৃত ৬০০, আক্রান্ত ২ কোটি মানুষ

আপডেট টাইম : ০২:২৯:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ, ভারত, নেপালে ভয়াবহ বন্যাকবলিত কমপক্ষে ২ কোটি মানুষ। তিনটি দেশে সব মিলিয়ে বন্যায় মারা গেছে কমপক্ষে ৬০০ মানুষ। শুধু ভারতের বিহার রাজ্যেই এক কোটির বেশি মানুষ দুর্ভোগে। জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, মৌসুমি ভারি বর্ষণ তীব্র হয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। এতে আসাম, উত্তর প্রদেশ ও বিহার রাজ্যে পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। অন্যদিকে এ সপ্তাহে বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যায়। টানা ৬ দিনের ভারি বর্ষণে গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে। কূল উপচে তা দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে নিমজ্জিত করছে। বন্যায় বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে গৃহহারা হয়েছে কমপক্ষে ২২ লাখ মানুষ। এরমধ্যে কমপক্ষে ৬ লাখই শিশু। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বন্যায় মারা গেছে ৩৭ জন। ২০টি জেলায় শত শত স্কুল বন্ধ রয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। ৩ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমির ফসল মারাত্মকভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। বাংলাদেশে সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্ক পিয়ার্স বলেন, গত বছর বাংলাদেশে বন্যা কঠিনভাবে আঘাত করেছিল। কিন্তু এবারের বন্যা মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে তার চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহ। বন্যাদুর্গত পরিবারগুলো হন্যে হয়ে খুঁজছে একটু আশ্রয়, খাদ্য, পানি ও মৌলিক চাহিদাগুলো। অনেক পরিবার পানির মারাত্মক সংকটে রয়েছে। এটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি আরো বলেন, পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা জানি দীর্ঘমেয়াদে এসব মানুষকে সাপোর্ট দিতে হবে। দুর্গত এসব মানুষকে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে। এরমধ্যে রয়েছে শিশুদের স্কুল খুলে দেয়া, সেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ক্লাসরুমে নিয়ম ফেরানো ও কৃষকদের তাদের পায়ের ওপর দাঁড় করতে সহায়তা করা। সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, জুলাই থেকে ভারতে সৃষ্ট বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে কমপক্ষে এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ। এরমধ্যে গত কয়েক দিনে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়েছে দ্রুততায়। ভারতে সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থমাস চ্যান্ডি বলেন, সেখানে কমপক্ষে ৬৮ লাখ শিশু বন্যায় আক্রান্ত। এমন অবস্থায় সব সময়ই শিশুরা মানবিক সংকটে পড়ে। এ বিষয়টিতে অবিলম্বে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। ভারতে সেভ দ্য চিলড্রেনের মানবিকতা বিষয়ক অপারেশন ম্যানেজার মুরালি কুন্ডুরু বলেন, যদিও আমরা জানি প্রতি বছরই এমন বৃষ্টিপাত হয়, কিন্তু এ বছরের বৃষ্টি ছিল অতিবর্ষণ। বিহারে এমনও নদী আছে যেখানে কয়েক দশক ধরে বৃষ্টির পানি জমা হয়নি। কিন্তু এবার বৃষ্টিপাতের ফলে সেখানে আধা মিটারের বেশি পানি উপচে পড়েছে। যেসব শিশু খুব বেশি বন্যায় আক্রান্ত তাদের সহায়তা দিতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে সেভ দ্য চিলড্রেন। ওদিকে নেপালে বেশির ভাগ এলাকায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে তাতে দ্বিতীয় পর্যায়ে জরুরি মাত্রায় একটি ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। সেভ দ্য চিলড্রেন সতর্কতা দিয়েছে। বলেছে, যে ময়লা পানি, তার সঙ্গে বিভিন্ন রকম ময়লা, চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাতে নানা রকম রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নেপালে সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর বেলাইলাহ বোরজা বলেন, ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে চেষ্টা করা হচ্ছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।