ঢাকা ১০:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ত্রাণের অপেক্ষায় বানভাসিরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৫৫:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৩৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চিলমারীতে বন্যার পানি যেন খেলায় উঠেছে মেতে। কোনো দিকে বাড়ে আবারো কোনো দিকে কমায় শুরু হয়েছে দুর্ভোগের ওপর দুর্ভোগ। দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানি নেমে না যাওয়ায় কুড়িগ্রামের চিলমারীর বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যার পানিতে ভাসছে উপজেলা পরিষদসহ সদর এলাকা সেই সঙ্গে কষ্টের পরিধিও বাড়ছে বানভাসিদের। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনো বিপদসীমার ৬৪ (বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা) সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল আর সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে তিস্তার ধেয়ে আসা পানি। বন্যার পানিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয়, বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। তাদের বসবাস এখন আশ্রয় কেন্দ্র, ওয়াপদা বাঁধ ও কেচি সড়কের উপর খোলা আকাশের নিচে। বেশ কিছুদিন ধরে পানিবন্দি থাকায় দুর্ভোগ চরমে উঠেছে বানভাসি মানুষজনের। দুর্গত এলাকায় ত্রাণের জন্য চলছে হা-হাকার। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ বানভাসি মানুষের মাঝে জোটেনি একমুঠো ত্রাণের চাল। নৌকার শব্দ শুনলেই ত্রাণের জন্য ছোটা ছুটি শুরু করেন তারা। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে অনেক পরিবারের। এসব ঘর ছাড়া মানুষগুলোর হাতে প্রায় ১ মাস থেকে কাজ না থাকায় খেয়ে না খেয়ে কেউ মাচা পেতে, কেউ রাস্তার উপর খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ঘরে খাবার না থাকায় বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষজন। পাশাপাশি গো-খাদ্যের সংকট এবং বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়ায় গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছে বানভাসি মানুষগুলো। পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার বড়জা-কশিম বাজার সড়কে হাঁস খাওয়া ব্রিজ এলাকায় দুটি স্থান ধসে যাওয়ায় চিলমারী উপজেলার মাছাবান্দা, ফকিরপাড়া, থানাহাট সদও, সবুজপাড়া, উপজেলা পরিষদ, থানাসহ উপজেলার সদর এলাকা ভাসছে বন্যা পানিতে। ফলে নতুন নতুন এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ায় উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দি। বেশি বিপাকে পড়েছেন শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা এছাড়াও এদের অলাদা করে দেখার বা খবর নেয়ারও কেউ নেই। চরম বিপাকে পড়ছেন নিম্নাঞ্চলের লোকজন। সরকারি পর্যায়ে সীমিত ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও বিপুলসংখ্যক বানভাসির ভাগ্যে জুটছে না তা। গয়নাল পটলের মতিন, পাত্রখাতার হামিদা, রমনা ঘাটের ফেরজাসহ অনেকে জানান, আমরা মেলা দিন থেকে পানিবন্দি হয়ে আছি কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো সাহায্য পায়নি। এদিকে সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ শুরু হলেও বেসরকারি কোনো সংস্থা বা এনজিওদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বানভাসি মানুষের মাঝে কোনো সাহায্য পৌঁছানি বলে তারা জানান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা বলেন, বানভাসি মানুষের মাঝে পর্যায়ক্রমে সরকারের দেয়া বরাদ্দকৃত ত্রাণের চাল ও শুকনা খাবার পৌঁছানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৬ ইউনিয়নে ৮৮ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও মজুদ আছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং ৪ শত প্যাকেট শুকনা খাবার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ত্রাণের অপেক্ষায় বানভাসিরা

আপডেট টাইম : ০৪:৫৫:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চিলমারীতে বন্যার পানি যেন খেলায় উঠেছে মেতে। কোনো দিকে বাড়ে আবারো কোনো দিকে কমায় শুরু হয়েছে দুর্ভোগের ওপর দুর্ভোগ। দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানি নেমে না যাওয়ায় কুড়িগ্রামের চিলমারীর বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যার পানিতে ভাসছে উপজেলা পরিষদসহ সদর এলাকা সেই সঙ্গে কষ্টের পরিধিও বাড়ছে বানভাসিদের। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি এখনো বিপদসীমার ৬৪ (বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা) সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল আর সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে তিস্তার ধেয়ে আসা পানি। বন্যার পানিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ৮৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছেন। শুধু তাই নয়, বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। তাদের বসবাস এখন আশ্রয় কেন্দ্র, ওয়াপদা বাঁধ ও কেচি সড়কের উপর খোলা আকাশের নিচে। বেশ কিছুদিন ধরে পানিবন্দি থাকায় দুর্ভোগ চরমে উঠেছে বানভাসি মানুষজনের। দুর্গত এলাকায় ত্রাণের জন্য চলছে হা-হাকার। এখন পর্যন্ত বেশিরভাগ বানভাসি মানুষের মাঝে জোটেনি একমুঠো ত্রাণের চাল। নৌকার শব্দ শুনলেই ত্রাণের জন্য ছোটা ছুটি শুরু করেন তারা। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে অনেক পরিবারের। এসব ঘর ছাড়া মানুষগুলোর হাতে প্রায় ১ মাস থেকে কাজ না থাকায় খেয়ে না খেয়ে কেউ মাচা পেতে, কেউ রাস্তার উপর খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ঘরে খাবার না থাকায় বিশেষ করে বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষজন। পাশাপাশি গো-খাদ্যের সংকট এবং বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়ায় গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছে বানভাসি মানুষগুলো। পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার বড়জা-কশিম বাজার সড়কে হাঁস খাওয়া ব্রিজ এলাকায় দুটি স্থান ধসে যাওয়ায় চিলমারী উপজেলার মাছাবান্দা, ফকিরপাড়া, থানাহাট সদও, সবুজপাড়া, উপজেলা পরিষদ, থানাসহ উপজেলার সদর এলাকা ভাসছে বন্যা পানিতে। ফলে নতুন নতুন এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ায় উপজেলার প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দি। বেশি বিপাকে পড়েছেন শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা এছাড়াও এদের অলাদা করে দেখার বা খবর নেয়ারও কেউ নেই। চরম বিপাকে পড়ছেন নিম্নাঞ্চলের লোকজন। সরকারি পর্যায়ে সীমিত ত্রাণ তৎপরতা শুরু হলেও বিপুলসংখ্যক বানভাসির ভাগ্যে জুটছে না তা। গয়নাল পটলের মতিন, পাত্রখাতার হামিদা, রমনা ঘাটের ফেরজাসহ অনেকে জানান, আমরা মেলা দিন থেকে পানিবন্দি হয়ে আছি কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো সাহায্য পায়নি। এদিকে সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ শুরু হলেও বেসরকারি কোনো সংস্থা বা এনজিওদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বানভাসি মানুষের মাঝে কোনো সাহায্য পৌঁছানি বলে তারা জানান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদ্দৌলা বলেন, বানভাসি মানুষের মাঝে পর্যায়ক্রমে সরকারের দেয়া বরাদ্দকৃত ত্রাণের চাল ও শুকনা খাবার পৌঁছানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৬ ইউনিয়নে ৮৮ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও মজুদ আছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং ৪ শত প্যাকেট শুকনা খাবার।