ঢাকা ০১:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদের আগেই মসলার বাজার চড়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:২৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৭
  • ২৫৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঈদুল আজহার ২০ দিন বাকি থাকতেই রাজধানীর বাজারগুলোতে মসলার দাম চড়া হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে দারুচিনি, এলাচের দাম বেশি বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর কোরবানির ঈদের আগে বেড়ে যায় মসলার দাম। চিরাচরিত এই নিয়ম এবারও কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেটে মসলা আমদানির শুল্ক বাড়ানোর ফলে জিরা, গোলমরিচ, এলাচিসহ বেশ কিছু মসলার দাম বেড়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দর বৃদ্ধি ও ঈদে চাহিদা বেশি থাকায় দাম কিছুটা বাড়তি। তবে ঈদে বাড়তি চাহিদা থাকায় পাইকাররা বিভিন্ন অজুহাতে কৌশলে দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের। কিন্তু পাইকাররা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে মসলার দাম কিছুটা বাড়লেও চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দামে তেমন প্রভাব পড়বে না। দাম স্বাভাবিক থাকবে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঈদের রান্নায় ব্যবহৃত মসলার পাশাপাশি অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় মসলা বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মসলার পাইকারি বাজারে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি জিরা ৩০ থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫৫ থেকে ৩৯০ টাকায়, দারুচিনি ১০ থেকে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা ও এলাচি কেজিতে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০ টাকা থেকে ১৬৮০ টাকায়। এছাড়া তেজপাতা ৯০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়, সাদা গোল মরিচ ৯৮০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়, জয়ফল ৬৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায়, কিসমিস ২৬৫ টাকা থেকে ২৭৫ টাকা, আলু বোখারা ৪৬০ টাকা থেকে ৪৯০ টাকা, কাঠবাদাম ৬১০ টাকা থেকে ৭১০ টাকা, পোস্তাদানা ৭৮০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বাজারের মসলার দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, দারুচিনি ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা ও এলাচি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজর ৭০০ টাকায়, তেজপাতা ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ সাড়ে ৯৮০ থেকে ১ হাজার টাকা, কালো গোল মরিচ ৮০০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায়।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে দেখা গেছে, এক বছরে দারুচিনির দাম বেড়েছে ৭.৯৪ শতাংশ। গত বছর আগস্ট মাসে প্রতি কেজি দাম ছিল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। এখন ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি। এক বছরে এলাচের দাম বেড়েছে ৩.৭০ শতাংশ। গত বছর প্রতি কেজি দাম ছিল ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এছাড়া এক বছরে আদার দাম বেড়েছে ২৯.৪১ শতাংশ। পেয়াজ বেড়েছে ৬৪.২৯ শতাংশ।
জানা গেছে, স্বাভাবিকভাবে কোরবানি ঈদে জিরা, এলাচি ও দারুচিনিসহ এসব মসলার চাহিদা বেশি থাকে। আর ব্যবসায়ীরাও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নেয় অতিরিক্ত দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। চাল ও পেয়াজের পর এখন মসলার দামও বাড়ছে। এরপরও সরকারি কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে বাজারে।
ক্রেতা রফিক বলেন, পেয়াজ আদা, জিরা, এলাচ সব কিছুরই দাম বেড়েছে। ঈদের বাকি আরো ২০ দিন। কিন্তু এখনই দাম বাড়িয়েছে।
বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ঈদকে ঘিরে অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাইকাররা দাম বাড়াচ্ছেন। গুটিকয়েক আমদানিকারকের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তাদের ওপর নির্ভর করছে বাজারে মসলার দাম। আরেক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন বাজেটে বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে, এ কারণে মসলার দাম বাড়ছে। তিনি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে বেশকিছু মসলার দাম বেড়েছে। ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ দাম বেড়েছে। এর জন্য পাইকাররা দায়ী।
মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী এনায়েতুল্লাহ বলেন, মসলা আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা একটু বেশি থাকায় দাম কিছুটা বাড়ে। তবে সংকট হওয়ার কথা নয়। বাজার স্বাভাবিক থাকবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঈদের আগেই মসলার বাজার চড়া

আপডেট টাইম : ০৩:২৮:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঈদুল আজহার ২০ দিন বাকি থাকতেই রাজধানীর বাজারগুলোতে মসলার দাম চড়া হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে দারুচিনি, এলাচের দাম বেশি বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর কোরবানির ঈদের আগে বেড়ে যায় মসলার দাম। চিরাচরিত এই নিয়ম এবারও কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজেটে মসলা আমদানির শুল্ক বাড়ানোর ফলে জিরা, গোলমরিচ, এলাচিসহ বেশ কিছু মসলার দাম বেড়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দর বৃদ্ধি ও ঈদে চাহিদা বেশি থাকায় দাম কিছুটা বাড়তি। তবে ঈদে বাড়তি চাহিদা থাকায় পাইকাররা বিভিন্ন অজুহাতে কৌশলে দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের। কিন্তু পাইকাররা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে মসলার দাম কিছুটা বাড়লেও চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দামে তেমন প্রভাব পড়বে না। দাম স্বাভাবিক থাকবে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঈদের রান্নায় ব্যবহৃত মসলার পাশাপাশি অন্য নিত্য প্রয়োজনীয় মসলা বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মসলার পাইকারি বাজারে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি জিরা ৩০ থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫৫ থেকে ৩৯০ টাকায়, দারুচিনি ১০ থেকে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা ও এলাচি কেজিতে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০ টাকা থেকে ১৬৮০ টাকায়। এছাড়া তেজপাতা ৯০ টাকা থেকে ১৩০ টাকায়, সাদা গোল মরিচ ৯৮০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা, কালো গোল মরিচ ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকায়, জয়ফল ৬৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকায়, কিসমিস ২৬৫ টাকা থেকে ২৭৫ টাকা, আলু বোখারা ৪৬০ টাকা থেকে ৪৯০ টাকা, কাঠবাদাম ৬১০ টাকা থেকে ৭১০ টাকা, পোস্তাদানা ৭৮০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বাজারের মসলার দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, দারুচিনি ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা ও এলাচি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজর ৭০০ টাকায়, তেজপাতা ১৫০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ সাড়ে ৯৮০ থেকে ১ হাজার টাকা, কালো গোল মরিচ ৮০০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকায়।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে দেখা গেছে, এক বছরে দারুচিনির দাম বেড়েছে ৭.৯৪ শতাংশ। গত বছর আগস্ট মাসে প্রতি কেজি দাম ছিল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। এখন ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি। এক বছরে এলাচের দাম বেড়েছে ৩.৭০ শতাংশ। গত বছর প্রতি কেজি দাম ছিল ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এছাড়া এক বছরে আদার দাম বেড়েছে ২৯.৪১ শতাংশ। পেয়াজ বেড়েছে ৬৪.২৯ শতাংশ।
জানা গেছে, স্বাভাবিকভাবে কোরবানি ঈদে জিরা, এলাচি ও দারুচিনিসহ এসব মসলার চাহিদা বেশি থাকে। আর ব্যবসায়ীরাও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নেয় অতিরিক্ত দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। চাল ও পেয়াজের পর এখন মসলার দামও বাড়ছে। এরপরও সরকারি কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে বাজারে।
ক্রেতা রফিক বলেন, পেয়াজ আদা, জিরা, এলাচ সব কিছুরই দাম বেড়েছে। ঈদের বাকি আরো ২০ দিন। কিন্তু এখনই দাম বাড়িয়েছে।
বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ঈদকে ঘিরে অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাইকাররা দাম বাড়াচ্ছেন। গুটিকয়েক আমদানিকারকের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তাদের ওপর নির্ভর করছে বাজারে মসলার দাম। আরেক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন বাজেটে বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে, এ কারণে মসলার দাম বাড়ছে। তিনি বলেন, গত কয়েক সপ্তাহে বেশকিছু মসলার দাম বেড়েছে। ঈদের আগে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ দাম বেড়েছে। এর জন্য পাইকাররা দায়ী।
মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী এনায়েতুল্লাহ বলেন, মসলা আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া কোরবানির ঈদে মসলার চাহিদা একটু বেশি থাকায় দাম কিছুটা বাড়ে। তবে সংকট হওয়ার কথা নয়। বাজার স্বাভাবিক থাকবে।