তরুণ প্রভাষকের আলমিরাতে পিএইচডি গবেষণার বইপত্র কিংবা স্টাইলিশ জামা-কাপড় নয়, মিলল নিজ বিভাগের এক বিবস্ত্র ছাত্রী। এমনটাই ঘটেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক আবদুল হালিমের বাসায়। ছাত্রী সাবিরা সুলতানা পুতুল একই বিভাগের। এদিকে শিক্ষকের বাসার আলমিরা থেকে ছাত্রী উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যেমন চলছে তোলপাড়, তেমনি এনিয়ে সর্বমহলে চলছে ক্ষোভ আর ধিক্কার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের সিটি কলেজের সামনে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক আবদুল হালিমের বাসায় একই বিভাগের ছাত্রী সাবিরা সুলতানা পুতুল প্রবেশ করে।
এর কিছুক্ষণ পর স্থানীয় যুবকদের একটি গ্রুপ ওই বাসার দরজায় কড়া নাড়ে। দীর্ঘক্ষণ দরজায় শব্দ করার পর শিক্ষক আবদুল হালিম দরজা খুলে দেন। এ সময় তারা বাসায় যে মেয়েটি প্রবেশ করেছে সে কোথায় তা জানতে চায়। কিন্তু আবদুল হালিম বাসায় কোনো মেয়ে থাকার কথা অস্বীকার করে। এ সময় বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ার একপর্যায়ে আলমিরাতে কিছু একটা নড়ে ওঠে।7
ওই যুবকরা তালাবদ্ধ আলমিরাতে আঘাত করলে ভেতর থেকে নারী কন্ঠের আর্তনাদ ভেসে আসে। পরবর্তীতে তালা খোলা হলে আলমিরা থেকে প্রায় বিবস্র পুতুল বের হয়ে আসে। এ সময় স্থানীয় যুবকরা শিক্ষক আবদুল হালিম ও পুতুলকে চড়-থাপ্পড় দেয়। এর কিছুক্ষণ পর পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ড. সাজ্জাদ হোসেন ও ভিসির একন্ত সহকারী মনিরুল ইসলামসহ কয়েকজন শিক্ষক কর্মকর্তা গিয়ে স্থানীয় যুবকদের নিবৃত করে ওই ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দেন। স্থানীয় যুবক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ওই ছাত্রী আবদুল হালিমের ব্যাচেলর বাসায় যাতায়াত করতো। প্রায়ই আমরা তাকে দেখতাম।
’ তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবারও ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নেমে বিকেল ৫টার দিকে ওই বাসায় প্রবেশ করতে দেখে আমরা তাকে অনুসরণ করি। প্রায় আধাঘণ্টা পর আমরা ওই বাসায় গিয়ে অপ্রীতিকর অবস্থায় আলমিরা থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করি।’ জানতে চাইলে সাবিরা সুলতানা পুতুল বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার ঝিনাইদহ শহরে যাইনি।
তাছাড়া এই ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’ তবে তথ্য-প্রমাণসহ এই বিষয়ে কথা বললে চুপ হয়ে যান তিনি।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক ও ছাত্রীকে অপ্রীতিকর অবস্থায় আটককারী স্থানীয় যুবকরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ওই শিক্ষকও আওয়ামীপন্থী হওয়ায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুর নির্দেশে স্থানীয় যুবকরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল হালিমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।