হাওর বার্তা ডেস্কঃ এখন সব স্মার্টফোন ইউজাররা ফোন কেনার সময় হাইফাই ফিচারের ফোন কিনতে চাই। তাই তারা সব থেকে ভালো ফিচারের ফোনটি বাজার থেকে কেনে। এই ইউজারদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সব সংস্থা ফোন তৈরি করে। এরকমই হাইফাই ফিচারের কিছু ফোন আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বাজারে আসতে চলেছে। এসব স্মার্টফোনগুলো বাজারে সাড়া ফেলবে বলে ধারণা টেক এক্সপার্টদের। ফিচার ও আধুনিক সুবিধার কথা চিন্তা করে নতুন স্মার্টফোনগুলো কেনার ব্যাপারে ইউজার দারুণ উৎসাহী হবেন বলে মনে করেছেন সকলে। যেসব স্মার্টফোনগুলো বাজারে ব্যাপক সাড়া ফেলবে মনে করা হচ্ছে স্যামসাং এর নোট এইট ও এস নাইন, আইফোন এইট, নকিয়া এইট, হাইড্রোজেন ওয়ান ও মেট টেন। চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক স্মার্টফোনগুলোর ফিচার:
নোট এইট:
বাজারে আসার আগে প্রায় সব স্মার্টফোনের তথ্য অনলাইনে ফাঁস হতে দেখা যায়। নোট এইট ও এর ব্যতিক্রম নয়। অনুমান করা হচ্ছে, ২৩ আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে নোট এইট-এর ঘোষণা হতে পারে। স্যামসাংয়ের নোট সিরিজের স্মার্টফোনগুলো বরাবরই উচ্চ কর্মদক্ষতায় ব্যবহারের জন্য জনপ্রিয়। ডিজিটাল কলম বা ‘এস পেন’-এর জন্য জনপ্রিয় গ্যালাক্সি নোট। নোট সেভেন স্মার্টফোনের ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর স্যামসাং বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে নতুন নোট এইট-এ। বিশেষ করে এর ব্যাটারির দিকে। এবার নতুন স্মার্টফোনটিতে আঙুলের ছাপ নেওয়ার সেন্সর থাকছে এর পর্দার নিচেই। স্মার্টফোনের সামনে ও পেছনে ডুয়াল ক্যামেরা থাকবে। নতুন নোট এইট-এর সঙ্গে থাকবে উন্নত বিক্সবি ডিজিটাল সফটওয়্যার। নোট এইট-এর পর্দা ৬.৪ ইঞ্চির হতে পারে। এ ছাড়া এতে থাকছে স্ন্যাপড্রাগন ৮৩৫ প্রসেসর, ৬ গিগাবাইট র্যাম, ৬৪ গিগাবাইট রম এবং ৩৩০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি। নোট এইট ফোনের দাম ৯০০ মার্কিন ডলার থেকে শুরু হতে পারে।
আইফোন এইট:
আইফোন এইট বাজারে ছাড়া নিয়ে অনেক গুঞ্জন ছড়িয়েছে। তবে সবার ধারণা, আগামী সেপ্টেম্বরে আসবে নতুন আইফোন। বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, আইফোন এইট-এর আকার আইফোন সেভেন-এর চেয়ে বড় হবে। স্যামসাংয়ের থেকে এগিয়ে থাকতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে আইফোন এইট তৈরিতে উঠেপড়ে লেগেছে অ্যাপল। আইফোন এইট-এ ফিচার হিসেবে উন্নত রেটিনা ডিসপ্লে থাকবে। এবারের আইফোন হতে পারে বেজেলবিহীন। এতে ফেস অথেনটিকেশন থাকবে। এ ছাড়া আইফোন এইট-এ যুক্ত হতে পারে অগমেন্টেড রিয়্যালিটি। ডুয়াল ক্যামেরাযুক্ত ফোনটির নকশাতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে অ্যাপল। এতে যুক্ত হবে ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি। বাজার গবেষকেরা বলছেন, আইফোন এইট-এর দাম তুলনামূলকভাবে কম রাখবে অ্যাপল। বিশ্লেষকেদের মতে, এ বছরের নতুন আইফোন ঘিরে দামের পরিকল্পনা ভিন্নভাবে করছে অ্যাপল। ওএলইডি ডিসপ্লেযুক্ত হাই-অ্যান্ড বা ফ্ল্যাগশিপ আইফোনের মডেলটির দাম এক হাজার মার্কিন ডলারের বেশি হবে—এমন গুঞ্জন রয়েছে। তবে ৬৪ জিবি মডেলের মূল আইফোনটির দাম কিছুটা কম রাখতে পারে।
নোকিয়া এইট:
অ্যান্ড্রয়েড ৮.০-চালিত নোকিয়া ব্র্যান্ডের নতুন একটি স্মার্টফোন বাজারে আনতে পারে ফিনল্যান্ডের সংস্থা এইচএমডি গ্লোবাল। নকিয়া এইট হচ্ছে হাই-এন্ড স্মার্টফোন। অনুমান করা হচ্ছে, স্মার্টফোনটিতে কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৩৫ প্রসেসর, চার জিবি র্যাম, ডুয়াল সিম, ৬৪ জিবি ইন্টারনাল মেমোরি থাকবে। এতে কোয়াড এইচডি (১৪৪০ বাই ২৫৬০ পিক্সেল) ডিসপ্লে থাকবে। ডিসপ্লের মাপ হবে ৫ দশমিক ৩ ইঞ্চি। এতে জেইস ব্র্যান্ডের ক্যামেরা থাকবে। চারটি রঙে বাজারে আসবে নোকিয়া। আগামী বছরের জুলাইয়ের শেষ নাগাদ ইউরোপের বাজারে ফোনটি আসবে। পরে অন্যান্য দেশের বাজারে এটি ছাড়তে পারে এইচএমডি গ্লোবাল। এর দাম হতে পারে ৬০০ মার্কিন ডলার।
এস নাইন:
গ্যালাক্সি এস সিরিজে নতুন আরেকটি স্মার্টফোন আনতে পারে দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা স্যামসাং। গত এপ্রিলে বাজারে আসা এস এইট-এর সফলতার পর এবারে এ ফোনটি তৈরির কথা ভাবছে সংস্থাটি। গত দু মাসে দু’কোটি ইউনিটের বেশি এস এইট বিক্রি হয়েছে। সম্প্রতি এস নাইন ঘিরে প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন ছড়িয়েছে। এস নাইন-এর একটি কনসেপ্ট অনলাইনে বেড়িয়েছে। এতে চারটি ক্যামেরা ও ফোরকে ডিসপ্লে থাকার বিষয়টি দেখানো হয়েছে। ৫ দশমিক ৭ ইঞ্চি মাপের ফোনটিতে সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে থাকতে পারে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ ফোন বাজারে আসতে পারে। এর দাম হতে পারে ৮০০ মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।
হাইড্রোজেন ওয়ান:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেমা ক্যামেরা নির্মাতা রেড এক হাজার ২০০ মার্কিন ডলার দামের হলোগ্রাফিক ডিসপ্লেযুক্ত হাইড্রোজেন ওয়ান স্মার্টফোন আনছে। সম্প্রতি ফোনটির প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে সংস্থাটি। অ্যাপলের আইফোন এইট-এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি মাপের অ্যান্ড্রয়েড-চালিত ফোনটি বাজারে ছাড়তে পারে রেড। রেডের প্রতিষ্ঠাতা জিম জ্যানার্ড এক ফোরাম পোস্টে লিখেছেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা দেখতে না পারছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এটার ভালো বর্ণনা করার উপায় নেই। আমাদের ডিসপ্লে এমন প্রযুক্তির, যা আগে আপনারা দেখেননি। এটা লেনসের মতো উভ-উত্তল (লেন্টিকুলার) নয়। অনেকে এ ডিসপ্লে তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে।’ রেড কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, তারা এমন অ্যালগরিদম ব্যবহার করবে, যা স্টেরিও শব্দকে মাল্টিডাইমেনশনার অডিওতে রূপান্তর করতে পারবে। ফোনটির বিশেষত্ব হবে মডুলার প্রযুক্তি। অর্থাৎ এতে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সংযুক্ত করার সুবিধা থাকবে। ফোনটির সঙ্গে রেডের ডিজিটাল সিনেমা ক্যামেরা যুক্ত করে কাজ করা যাবে। ২০১৮ সাল নাগাদ হাইড্রোজেন ওয়ান স্মার্টফোন বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা করছে রেড। বর্তমানে তাদের ওয়েবসাইটে এর অয়াডভান্স বুকিং নিচ্ছে। অ্যালুমিনিয়াম কাঠামোর ফোনটির দাম শুরু হয়েছে ১ হাজার ১৯৫ মার্কিন ডলার থেকে। টাইটানিয়াম কাঠামোর ফোনের দাম ১ হাজার ৫৯৫ মার্কিন ডলার।
মেট টেন:
অ্যাপলকে টেক্কা দিতে পরিকল্পনা করছে হুয়াওয়ে। এ বছর শেষ হওয়ার আগে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স স্মার্টফোনের প্রসেসর আনতে পারে সংস্থাটি। এটি হবে বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমান প্রসেসর। অ্যাপলের আইফোন এইট যখন বাজারে আসবে, তখন এই প্রসেসরচালিত ফোন বাজারে ছাড়বে হুয়াওয়ে। সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ হুয়াওয়ে নতুন স্মার্টফোন আনার পরিকল্পনা করছে। হুয়াওয়ের সম্ভাব্য ফোনটির নাম হতে পারে ‘মেট টেন’। হুয়াওয়ের দাবি, নতুন ফোনটিতে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি আর উন্নত ক্যামেরা থাকবে।