র্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় ওরফে নিলয় নীলের কথিত স্ত্রী আশামনির পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিলয়ের পরিবার বলছে, আশামনি নামে তারা কাউকে চেনে না। নিলয়ের সাথে তার বিয়ের কথাও ঠিক নয়। খিলগাঁওয়ের পূর্ব গোড়ানের ভাড়া বাসায় শুক্রবার দুপুরে ব্লগার নিলয়কে চার যুবক কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় সেখানে আশামনি ও তার বোন (নিলয়ের কথিত শ্যালিকা) তন্বী নামের দুজন নারী ছিলেন।
নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী আশামনির এখন কি হবে? তার স্বামীর পরিবারের সদস্যরা তাকে স্ত্রী হিসেবে কোনোভাবেই স্বীকার করতে রাজি নন। আশামনি মুসলিম হওয়ায় সমস্যাটির তৈরি হয়েছে। তাকে মরদেহের সঙ্গে পিরোজপুরেও যেতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু, নীলাদ্রির পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, নীলাদ্রির খুনের পেছনে আশামনির হাত রয়েছে! নিলয়ের স্বনজরাও আশামনির সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। রবিবারও নিলয়ের চাচা বিমল চট্টপাধ্যায় বলেছেন, তারা এ বিয়ে বিশ্বাস করেন না। স্ত্রী দাবিদার আশামনিকে তারা চেনেন না। তিনি বলেন, ঈদের সময়ও তাদের কিছু জানায়নি নিলয়। ঘটনার পরদিন শনিবার ঢাকা মেডিকেল মর্গে তার একাধিক বন্ধুর কাছেও এ বিষয়ে খোঁজ নিলে তারা বিমলকে জানিয়েছেন, তারাও জানেন না বিয়ের ঘটনা।
এদিকে, রবিবার আশামনি বলেছিলেন, তাদের বিয়ের বিষয়টা কাউকে জানানো হয়নি। দু’বছর আগে বিয়ে করেন তারা। সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তারা জানাননি বিষয়টি। আমি কোর্টে বিয়ে করেছি, ধর্মীয় নিয়ম মেনেই এ বিয়ে হয়েছে। নিলয় আমার স্বামী। এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা বিয়ের পর একসঙ্গে বসবাস শুরু করি। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব সুন্দর করে সংসার জীবন শুরু করি। খিলগাঁওয়ের গোড়ানের ৮ নম্বর রোডের ১৬৭ নম্বর বাসার পাঁচতলায় দু’বছর তিনমাস আগে আমরা উঠি। তখন আমার মা, বোন তন্নী এবং ভাই সাজুও এ বাসায় আসেন। বাসার মালিক শামসুল হক ও তার স্ত্রী শাহানাজ এ বিষয়ে সব তথ্য জানেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে আশামনি বলেন, ‘আমি তার (নিলয়) স্ত্রী। আমার কাছে তার প্রমাণ তো আছেই।’
এক পর্যায়ে আশামনি বলেন, ‘আমি এখন শারীরিকভাবে অসুস্থ। এর বেশি আর কোনো কথা বলতে পারব না।’ এদিকে গোড়ানের ওই বাড়ির মালিক শামসুল হক বলেন, ‘আশামনি ও নিলয়কে আমরা মুসলমান বলেই জানতাম।’ একইভাবে তার স্ত্রী শাহানাজ আক্তারও বলেন, ‘আমিও তো তাইই জানতাম। পরে শুক্রবার শুনলাম যে নিলয় হিন্দু।’ তিনি বলেন, বাসা ভাড়া নেয়ার সময় আশামনি ও নিলয় স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দেন। এ সময় আশামনির মা, তার বোন তন্নী ও ভাই সাজু ছিলেন। এ বিষয়ে সাজু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘হ্যাঁ আমি সেদিন গিয়েছিলাম। মাঝে মধ্যে আমাদের পরিবারের সদস্যরা আশামনির খোঁজ নিতে ওই বাসায় যেতেন।’ গোড়ানের ওই বাড়ির প্রতিবেশী শামীম ও শিরিন দম্পতি জানান, ‘আশামনি ও নিলয় স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ছিলেন। তারা তাদের মুসলিম বলেই জানতেন।