জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায় অবস্থিত ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের ছোঁয়ায় নির্মিত অন্যতম এক মসজিদ ‘হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ’। জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে ১৫ কিমি দূরে ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা গ্রামে অবস্থিত এই মসজিদ। মসজিদের অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য স্থানীয়দের কাছে তো বটেই, পর্যটকের কাছেও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। প্রতি শুক্রবার জেলা ও জেলার বাইরে থেকে মুসল্লিরা নামাজ আদায়ের জন্য ছুটে আসেন এই মসজিদে।
জানা যায়, বাংলা ১৩৬৫ সালে বাগমারী পীর হিসেবে পরিচিত চিশতিয়া তরিকার অন্যতম পীর হজরত আবদল গফুর চিশতির (রহ.) নির্দেশে মাওলানা আবদুল খালেক চিশতির তত্ত্বাবধানে মসজিদটি নির্মিত হয়। নকশা ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হজরত আবদুল কাদের ।
মসজিদটির বড় বৈশিষ্ট্য এর অবকাঠামোগত নির্মাণ কৌশলী। মসজিদের বাইরের দেয়ালে রয়েছে পোড়ামাটি, কাঁচ ও চীনামাটির টুকরার সমন্বয়ে বিভিন্ন নকশা খোদাই করা। দিনে যখন সূর্যের আলো মসজিদের দেয়ালে পড়ে, তখন ফুটে ওঠে এর প্রকৃত সৌন্দর্য। সূর্যের আলোয় ঝলমল করে ওঠা মসজিদের নজরকাড়া রূপ মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। মসজিদের কক্ষের দৈর্ঘ্য ৪৯.৫০ ফুট ও প্রস্থ ২২.৫০ ফুট।
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের কথা চিন্তা করে মসজিদে তৈরি করা হয়েছে পাঁচটি গম্বুজ। এর মধ্যে বড় একটি ও চারপাশে চারটি ছোট গম্বুজ। রড ছাড়াই এগুলো তৈরি করা হয়েছে। মসজিদের উত্তর পাশে রয়েছে ৪০ ফুট লম্বা মিনার। মিনারটির নিচে একটি ছোট কক্ষ রয়েছে যেখান থেকে আজান দেওয়া হয়। মসজিদটিতে অনুসরণ করা হয়েছে মুঘল স্থাপত্যরীতি।
হজরত শাহ সুলতান বলখির চারজন শিষ্য, যারা ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে এসেছিলেন, তাদের মাজার রয়েছে মসজিদের পূর্বপাশে। চারটি মাজারের মধ্যে দুটির পরিচয় জানা গেলেও বাকি দুটি অজানা। পরিচয় জানা মাজার দুটির একটি শাহ কালামজি এবং অন্যটি শাহ এলেমজির। সাধারণ কবর থেকে এ কবরগুলো অনেক লম্বা। প্রতি শুক্রবার তো বটেই, সপ্তাহের অন্যান্য দিনেও ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও দর্শনার্থীর আগমন ঘটে মসজিদ প্রাঙ্গণে।