ঢাকা ০৪:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নড়াইলে পাটের বাম্পার ফলন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১৮:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০১৭
  • ৩৯৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  চলতি মৌসুমে নড়াইলের ৩ উপজেলায় সোনালী আঁশ পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সোনালি আঁশের রঙিন স্বপ্নে বিভোর হাজারো কৃষাণ-কৃষাণী। পাটচাষিরা এখন ক্ষেত থেকে পাট কেটে তা পানিতে জাগ (পাট পচানো) দেয়া এবং পাট পচানো ও বাছাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর নড়াইলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় ২৩ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষাবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে। মোট ১১০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। আবাদ হওয়া এসব জমিতে ২ লাখ ১৯ হাজার ৬শ’ ৯৩ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাটের উৎপাদন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। সোনালি আঁশে রঙিন স্বপ্ন দেখছেন তারা। পাটের পাশাপশি পাটকাঠি বিক্রি করে চাষি এবং পাট বাছাইকাজে নিয়োজিত দিমুজুরেরাও লাভবান হচ্ছেন। জ্বালানি কাজ, পানের বরজ, বেড়াসহ পাটকাঠির ব্যবহার হচ্ছে নানা কাজে।

লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামের আব্দুল হান্নান সরদার জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই নড়াইলে পাটকাটা ও জাগ দেয়া শুরু হয়েছে। এখন তা পুরোদমে চলছে। মাঠ-ঘাট, গ্রামীণ পথ থেকে শুরু করে সর্বত্রই এখন সোনালি আঁশের গন্ধ। পাট গাছ থেকে আঁশ ছড়িয়ে পাট প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত পাটচাষিরা। এ বছর পাটের ফলন খুব ভালো হয়েছে। দামও ভালো। প্রতিমণ পাট ১৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকেরা জানান, এ বছর পাটের উৎপাদন ভালো হওয়ায় তারা খুশি। পাটের বাজার দরটা যেন ভালো থাকে সেটা প্রত্যাশা করেছেন কৃষকেরা।

মাইজপাড়া বাজারের পাট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, বতর্মানে প্রতিমণ পাট এক হাজার ৬০০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে। পরবর্তীতে দাম কমতেও পারে, আবার বাড়তেও পারে।

পাট বিক্রির পাশাপাশি পাটকাঠিরও কদর রয়েছে। নড়াইল পৌর এলাকার ডুমুরতলার খালেদা বেগম বলেন, পাটকাঠি দিয়ে জ্বালানির পাশাপাশি গোবরের লাকড়ি তৈরি করি। এছাড়া ঘরের বেড়া, তরকারির মাঁচাসহ পানের বরজে পাটকাঠি ব্যবহৃত হয়।

সদর উপজেলার টাবরা গ্রামের ভবতোষ রায় জানান, এক কাহন পাটকাঠি (এক হাজার ২৮০ পিস পাটকাঠি) ২শ’ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নড়াইলের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শেখ আমিনুল হক বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত তদারকি এবং কৃষকদের আগ্রহে প্রতিবছর এ জেলায় পাটের চাষ বাড়ছে। তাছাড়া এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের উপযোগী। এক্ষেত্রে নড়াইলকে পাট চাষের আদর্শ জেলা বলা যায়। পাট পচনের (জাগ) ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক ডোবা, নালা, খাল, বিল ও জলাশয়। এ বছর আগাম বৃষ্টি হওয়ায় পাট পচনের ক্ষেত্রে পানির কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। এছাড়া পাটের ফলন যেমন ভালো হয়েছে। কৃষকেরা দামও ভালো পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নড়াইলে পাটের বাম্পার ফলন

আপডেট টাইম : ০৭:১৮:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  চলতি মৌসুমে নড়াইলের ৩ উপজেলায় সোনালী আঁশ পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সোনালি আঁশের রঙিন স্বপ্নে বিভোর হাজারো কৃষাণ-কৃষাণী। পাটচাষিরা এখন ক্ষেত থেকে পাট কেটে তা পানিতে জাগ (পাট পচানো) দেয়া এবং পাট পচানো ও বাছাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর নড়াইলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাশাপাশি ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় ২৩ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষাবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে। মোট ১১০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। আবাদ হওয়া এসব জমিতে ২ লাখ ১৯ হাজার ৬শ’ ৯৩ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাটের উৎপাদন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। সোনালি আঁশে রঙিন স্বপ্ন দেখছেন তারা। পাটের পাশাপশি পাটকাঠি বিক্রি করে চাষি এবং পাট বাছাইকাজে নিয়োজিত দিমুজুরেরাও লাভবান হচ্ছেন। জ্বালানি কাজ, পানের বরজ, বেড়াসহ পাটকাঠির ব্যবহার হচ্ছে নানা কাজে।

লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামের আব্দুল হান্নান সরদার জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই নড়াইলে পাটকাটা ও জাগ দেয়া শুরু হয়েছে। এখন তা পুরোদমে চলছে। মাঠ-ঘাট, গ্রামীণ পথ থেকে শুরু করে সর্বত্রই এখন সোনালি আঁশের গন্ধ। পাট গাছ থেকে আঁশ ছড়িয়ে পাট প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত পাটচাষিরা। এ বছর পাটের ফলন খুব ভালো হয়েছে। দামও ভালো। প্রতিমণ পাট ১৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকেরা জানান, এ বছর পাটের উৎপাদন ভালো হওয়ায় তারা খুশি। পাটের বাজার দরটা যেন ভালো থাকে সেটা প্রত্যাশা করেছেন কৃষকেরা।

মাইজপাড়া বাজারের পাট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, বতর্মানে প্রতিমণ পাট এক হাজার ৬০০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে। পরবর্তীতে দাম কমতেও পারে, আবার বাড়তেও পারে।

পাট বিক্রির পাশাপাশি পাটকাঠিরও কদর রয়েছে। নড়াইল পৌর এলাকার ডুমুরতলার খালেদা বেগম বলেন, পাটকাঠি দিয়ে জ্বালানির পাশাপাশি গোবরের লাকড়ি তৈরি করি। এছাড়া ঘরের বেড়া, তরকারির মাঁচাসহ পানের বরজে পাটকাঠি ব্যবহৃত হয়।

সদর উপজেলার টাবরা গ্রামের ভবতোষ রায় জানান, এক কাহন পাটকাঠি (এক হাজার ২৮০ পিস পাটকাঠি) ২শ’ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নড়াইলের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শেখ আমিনুল হক বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত তদারকি এবং কৃষকদের আগ্রহে প্রতিবছর এ জেলায় পাটের চাষ বাড়ছে। তাছাড়া এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের উপযোগী। এক্ষেত্রে নড়াইলকে পাট চাষের আদর্শ জেলা বলা যায়। পাট পচনের (জাগ) ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক ডোবা, নালা, খাল, বিল ও জলাশয়। এ বছর আগাম বৃষ্টি হওয়ায় পাট পচনের ক্ষেত্রে পানির কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। এছাড়া পাটের ফলন যেমন ভালো হয়েছে। কৃষকেরা দামও ভালো পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।