ঢাকা ০৭:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার কবরের পাশে দিন-রাত বসে থাকি, ছেলে ফিরে আসে না সংস্কার না করলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে অন্যায় করা হবে : উপদেষ্টা সাখাওয়াত কাকে ‘ননসেন্স’ বললেন বুবলী ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের সচিবালয়ে প্রবেশে অস্থায়ী পাসের ব্যাপারে বিশেষ সেল গঠন জর্জিনাকে ‘স্ত্রী’ সম্বোধন, তবে কি বিয়েটা সেরেই ফেলেছেন রোনালদো ৩১ ডিসেম্বর আসছে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা মহাখালীতে আবাসিক ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২ ইউনিট ভোটার হওয়ার ন্যূনতম বয়সসীমা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আপত্তি বিএনপি মহাসচিবের

১৪ বছর ধরে প্রতিদিন বিনামূল্যে খিচুড়ি বিতরণ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:২২:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০১৭
  • ২৫৬ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের বিলাশবহুল টোকিও স্কয়ার। এর বিপরীতে সুপরিচিত প্রিন্স বাজার। মাগরিবের আযান হতেই প্রিন্স বাজার ভবনটির উত্তর ও পূর্ব দিকে জড়ো হতে থাকে রিক্সা। একটা দুটো নয় শতাধিক। উদ্দেশ্য বিনামূল্যে খিচুড়ি খাওয়া। কেবল রিক্সাচালক নয়, পথচারী ও স্থানীয় শিশু-বয়স্কদের সংখ্যা চোখে পড়ার মত। চিত্রটি একদিনের নয়। ২০০৩ সাল থেকে প্রিন্স বাজার ভবনটির মালিক সবার জন্য বিতরণ করছে বিনামূল্যে খিচুড়ি।

কেউ ভালবাসে খেতে, কেউবা খাওয়াতে। বাড়িতে অতিথি আসলে খাবারের আয়োজনটা আকাশচুম্বী। অতিথি আপ্যায়নের আনন্দ তারাই জানেন, যারা নিজে খাওয়ার চাইতে অন্যকে খাওয়াতে ভালবাসেন। তেমনই একজন প্রিন্স বাজার ভবনটির মালিক ও ‘আল-হেরা কলেজ’ এর প্রিন্সিপাল চৌধুরী মুগিস উদ্দিন মাহমুদ। তবে, বাড়িতে আগত অতিথিদের নয়, গরিব, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিতদের খাওয়ান তিনি। গত ১৪ বছর ধরে একইভাবে বিতরণ করছেন খিচুড়ি। প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের পর তিনশ লোকের জন্য খিচুড়ির আয়োজন করা করা হয়।

দিনের আলো নিভে গেলেই জমায়েত হতে থাকে আশপাশের রিক্সাচালক, পথচারী ও পাশের বিহারি ক্যাম্পের শিশুরা। একটু আগেভাগে এসেই নিজের জায়গাটা ধরে রাখে ফারুক। সে পাশের বিহারি ক্যাম্পে থাকে। ফারুক জানায়, ‘আমরা প্রতিদিনই আহি। আগে না আইলে যদি জাগা না পাই! এর লাইগা আগেই আহি। খিচুড়িডা মজা লাগে।’

প্রতিদিনের খাবার বিতরণের দায়িত্বে আছেন ছয় জন। নেই কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা। যারা খেতে আসেন, তাদের প্রায় সবাই এখানে নিয়মিত। লোকের সংখ্যা কমছে না বরং প্রতিদিন নতুন করে কেউ না কেউ যুক্ত হচ্ছে। খিচুড়ি বিতরণের দায়িত্বে থাকা মনির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের স্যার খিচুড়ি খাওয়ায় সেই ২০০৩ সাল থেকে। নিজের বাবা-মায়ের নামেই খাওয়ায়। স্যারের ভাল লাগে। স্যার যতদিন আছে খাওয়াইব।’

প্রতিদিন ভবনটির ভেতরে কাঠের চুলায় খুবই যত্ন সহকারে রান্না করা হয়। রান্নার হাড়ি ও পরিবেশনের প্লেট-গ্লাসের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দেখে বলার অপেক্ষা রাখে না, এ খাবার স্বাস্থ্যঝুঁকিমুক্ত। এখানে যে কেবল গরিব ও না খেতে পারা মানুষ আসে তেমনটি নয়। স্থানীয় বেশকিছু বাড়ি মালিক, নামজাদা লোকও মাঝে মাঝে এসে খেয়ে যায় এই বিনামূল্যের খিচুড়ি। চৌধুরী মুগিস উদ্দিন মাহমুদ মাঝে মধ্যে দেশের বাহিরে থাকলেও, থেমে থাকনি তার এই উদ্যোগ।

আল-হেরা কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মারুফ হাসান হাওর বার্তাকে বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ। দেশের একটি বিরাট সংখ্যক জনগোষ্ঠী অর্ধাহারে দিন যাপন করে। প্রতিদিন দুই তিনশ মানুষকে খাওয়ানো সহজ বিষয় নয়। যদি এরকম আরো কয়েকজন উদ্যোগী থাকে তবে, খাবারের জন্য কেউ চুরি-ছিনতাই করবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভারতে ১৩ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার

১৪ বছর ধরে প্রতিদিন বিনামূল্যে খিচুড়ি বিতরণ

আপডেট টাইম : ১২:২২:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের বিলাশবহুল টোকিও স্কয়ার। এর বিপরীতে সুপরিচিত প্রিন্স বাজার। মাগরিবের আযান হতেই প্রিন্স বাজার ভবনটির উত্তর ও পূর্ব দিকে জড়ো হতে থাকে রিক্সা। একটা দুটো নয় শতাধিক। উদ্দেশ্য বিনামূল্যে খিচুড়ি খাওয়া। কেবল রিক্সাচালক নয়, পথচারী ও স্থানীয় শিশু-বয়স্কদের সংখ্যা চোখে পড়ার মত। চিত্রটি একদিনের নয়। ২০০৩ সাল থেকে প্রিন্স বাজার ভবনটির মালিক সবার জন্য বিতরণ করছে বিনামূল্যে খিচুড়ি।

কেউ ভালবাসে খেতে, কেউবা খাওয়াতে। বাড়িতে অতিথি আসলে খাবারের আয়োজনটা আকাশচুম্বী। অতিথি আপ্যায়নের আনন্দ তারাই জানেন, যারা নিজে খাওয়ার চাইতে অন্যকে খাওয়াতে ভালবাসেন। তেমনই একজন প্রিন্স বাজার ভবনটির মালিক ও ‘আল-হেরা কলেজ’ এর প্রিন্সিপাল চৌধুরী মুগিস উদ্দিন মাহমুদ। তবে, বাড়িতে আগত অতিথিদের নয়, গরিব, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিতদের খাওয়ান তিনি। গত ১৪ বছর ধরে একইভাবে বিতরণ করছেন খিচুড়ি। প্রতিদিন মাগরিবের নামাজের পর তিনশ লোকের জন্য খিচুড়ির আয়োজন করা করা হয়।

দিনের আলো নিভে গেলেই জমায়েত হতে থাকে আশপাশের রিক্সাচালক, পথচারী ও পাশের বিহারি ক্যাম্পের শিশুরা। একটু আগেভাগে এসেই নিজের জায়গাটা ধরে রাখে ফারুক। সে পাশের বিহারি ক্যাম্পে থাকে। ফারুক জানায়, ‘আমরা প্রতিদিনই আহি। আগে না আইলে যদি জাগা না পাই! এর লাইগা আগেই আহি। খিচুড়িডা মজা লাগে।’

প্রতিদিনের খাবার বিতরণের দায়িত্বে আছেন ছয় জন। নেই কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা। যারা খেতে আসেন, তাদের প্রায় সবাই এখানে নিয়মিত। লোকের সংখ্যা কমছে না বরং প্রতিদিন নতুন করে কেউ না কেউ যুক্ত হচ্ছে। খিচুড়ি বিতরণের দায়িত্বে থাকা মনির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের স্যার খিচুড়ি খাওয়ায় সেই ২০০৩ সাল থেকে। নিজের বাবা-মায়ের নামেই খাওয়ায়। স্যারের ভাল লাগে। স্যার যতদিন আছে খাওয়াইব।’

প্রতিদিন ভবনটির ভেতরে কাঠের চুলায় খুবই যত্ন সহকারে রান্না করা হয়। রান্নার হাড়ি ও পরিবেশনের প্লেট-গ্লাসের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দেখে বলার অপেক্ষা রাখে না, এ খাবার স্বাস্থ্যঝুঁকিমুক্ত। এখানে যে কেবল গরিব ও না খেতে পারা মানুষ আসে তেমনটি নয়। স্থানীয় বেশকিছু বাড়ি মালিক, নামজাদা লোকও মাঝে মাঝে এসে খেয়ে যায় এই বিনামূল্যের খিচুড়ি। চৌধুরী মুগিস উদ্দিন মাহমুদ মাঝে মধ্যে দেশের বাহিরে থাকলেও, থেমে থাকনি তার এই উদ্যোগ।

আল-হেরা কলেজের প্রাক্তন ছাত্র মারুফ হাসান হাওর বার্তাকে বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ। দেশের একটি বিরাট সংখ্যক জনগোষ্ঠী অর্ধাহারে দিন যাপন করে। প্রতিদিন দুই তিনশ মানুষকে খাওয়ানো সহজ বিষয় নয়। যদি এরকম আরো কয়েকজন উদ্যোগী থাকে তবে, খাবারের জন্য কেউ চুরি-ছিনতাই করবে না।