ঢাকা ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, বসতবাড়ি ও ফসলের মাঠ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩০:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০১৭
  • ২৯০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের বেশ কয়েকটি জেলার নিম্নাঞ্চলে পানি জমে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে মাছের ঘের, ফসলের মাঠ ও বসতবাড়ি। একটানা বৃষ্টি ও অমাবস্যার প্রভাবে পানির তীব্র স্রোতে বেড়িবাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও যশোরের মনিরামপুরে। বৃষ্টি ও ঝড়ে আবহাওয়ার কারণে মাওয়া ও পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। আবহাওয়া কিছুটা উন্নতি হলে গতকাল তা আবার চালু হয়। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সঙ্কেত বহাল রয়েছে। আমাদের শিবচর সংবাদদাতা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরিসহ সব নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে উভয় ঘাটে যানবাহন আটকে পড়ে দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে পাঁচটি ফেরি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। এ রুটে চলাচলকারী সব লঞ্চ ও স্পিডবোটে ধারণ ক্ষমতার কম যানবাহন নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ী ঘাট পরিবহন পরিদর্শক এবিএস মাহমুদ বলেন, বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে পদ্মায় প্রচণ্ড ঢেউ রয়েছে। লঞ্চ ও স্পিডবোটগুলোতে ধারণ ক্ষমতার কম যাত্রী দিয়ে ছাড়া হচ্ছে। আর নৌযানগুলোতে পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম মজুদ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, প্রায় ২০ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর গতকাল সকাল ৮টায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। নাগরপুর সংবাদদাতা জানান, ভারি ও টানা বর্ষণের ফলে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দুয়াজানী সেতুর অ্যাপ্রোচ ধসে পড়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় দিনব্যাপী ভারি বর্ষণে উপজেলা সদর বাজারের প্রবেশ মুখে দুয়াজানী সেতুর দুই পাশের অ্যাপ্রোচ ধসে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে সব ধরনের যানবাহন চলচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। কোম্পানীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ ঘণ্টা টানা বৃষ্টির কারণে ছোট ফেনী নদী ও বামনী নদীর তীরবর্তী এলাকায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলীয় সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকা চরফকিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটন জানান, অবিরাম বর্ষণ ও ছোট ফেনী এবং বামনী নদী ভাঙনের ফলে ৬, ৮, ৯নং ওয়ার্ডের হাট-বাজারসহ অনেক জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে চরফকিরা ইউনিয়নের আয়তন ছোট হয়ে আসছে। মনিরামপুর সংবাদদাতা জানান, গত ছয় দিনের ভারি বৃষ্টিপাতে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে শ্যামকুড়, হরিহরনগর, মনোহরপুর, চালুয়াহাটী, কুলটিয়া, ঝাপা, নেহালপুর, খানপুর ও দুর্বাডাংগা ইউনিয়নের গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। অতি বর্ষণের ফলে নদী, খাল, মাছের ঘের, ফসলের ক্ষেত একাকার হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছে। বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, টানা বর্ষণে বাগেরহাটে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমনের বীজতলা, সবজি ক্ষেতসহ পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে পাঁচশতাধিক মত্স্য ঘের। প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন মাছ চাষিরা। টানা বর্ষণে বাগেরহাট পৌর শহরসহ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাট, মাছের ঘের ও আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে। মোরেলগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টি ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় উপজেলা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের নদী ও খালে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা ৪-৫ ফুট বেড়ে গেছে। এতে পৌরসভাসহ নদীর তীরবর্তী আটটি ইউনিয়নের শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পৌরসভার ফেরিঘাট এলাকায় জাইকা নির্মিত একটি পিচ ঢালাই সড়কসহ তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি কাঁচা-পাকা সড়কের অংশবিশেষ নদীগর্ভে চলে গছে। তলিয়ে গেছে ছয় শতাধিক মত্স্য ঘের ও ৫০ হেক্টর আমন বীজতলা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপম রায় জানান, কমপক্ষে ৫০ হেক্টর আমন বীজতলা ডুবে রয়েছে। বরগুনা প্রতিনিধি জানান, অমাবস্যার প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও টানা ভারি বর্ষণে স্থবির হয়ে পড়েছে উপকূলীয় বরগুনার আমতলী উপজেলার জনজীবন। নষ্ট হয়ে গেছে আমনের অধিকাংশ বীজতলা। অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। প্লাবিত হয়েছে পৌরশহরের আমুয়ার চরসহ ৩০টি গ্রাম ও চর। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব চর ও গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়েছে। পেকুয়া সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। একাধিক স্থানে আবারও বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে নতুন এলাকা। এলাকাবাসী তাদের গবাদিপশু নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। চার দিনের টানা বৃষ্টিতে এ প্লাবনের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার আরও অধিকাংশ গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও তত্সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে মাছের ঘের, বসতবাড়ি ও ফসলের মাঠ

আপডেট টাইম : ১২:৩০:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে দেশের বেশ কয়েকটি জেলার নিম্নাঞ্চলে পানি জমে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে মাছের ঘের, ফসলের মাঠ ও বসতবাড়ি। একটানা বৃষ্টি ও অমাবস্যার প্রভাবে পানির তীব্র স্রোতে বেড়িবাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও যশোরের মনিরামপুরে। বৃষ্টি ও ঝড়ে আবহাওয়ার কারণে মাওয়া ও পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। আবহাওয়া কিছুটা উন্নতি হলে গতকাল তা আবার চালু হয়। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সঙ্কেত বহাল রয়েছে। আমাদের শিবচর সংবাদদাতা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ফেরিসহ সব নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে উভয় ঘাটে যানবাহন আটকে পড়ে দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে পাঁচটি ফেরি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। এ রুটে চলাচলকারী সব লঞ্চ ও স্পিডবোটে ধারণ ক্ষমতার কম যানবাহন নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে পদ্মা নদী পাড়ি দিচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ কাঁঠালবাড়ী ঘাট পরিবহন পরিদর্শক এবিএস মাহমুদ বলেন, বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে পদ্মায় প্রচণ্ড ঢেউ রয়েছে। লঞ্চ ও স্পিডবোটগুলোতে ধারণ ক্ষমতার কম যাত্রী দিয়ে ছাড়া হচ্ছে। আর নৌযানগুলোতে পর্যাপ্ত জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম মজুদ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, প্রায় ২০ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর গতকাল সকাল ৮টায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু করেছে। নাগরপুর সংবাদদাতা জানান, ভারি ও টানা বর্ষণের ফলে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দুয়াজানী সেতুর অ্যাপ্রোচ ধসে পড়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় দিনব্যাপী ভারি বর্ষণে উপজেলা সদর বাজারের প্রবেশ মুখে দুয়াজানী সেতুর দুই পাশের অ্যাপ্রোচ ধসে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে সব ধরনের যানবাহন চলচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। কোম্পানীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গত ২৪ ঘণ্টা টানা বৃষ্টির কারণে ছোট ফেনী নদী ও বামনী নদীর তীরবর্তী এলাকায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলীয় সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যান চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকা চরফকিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটন জানান, অবিরাম বর্ষণ ও ছোট ফেনী এবং বামনী নদী ভাঙনের ফলে ৬, ৮, ৯নং ওয়ার্ডের হাট-বাজারসহ অনেক জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে চরফকিরা ইউনিয়নের আয়তন ছোট হয়ে আসছে। মনিরামপুর সংবাদদাতা জানান, গত ছয় দিনের ভারি বৃষ্টিপাতে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে শ্যামকুড়, হরিহরনগর, মনোহরপুর, চালুয়াহাটী, কুলটিয়া, ঝাপা, নেহালপুর, খানপুর ও দুর্বাডাংগা ইউনিয়নের গ্রামগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। অতি বর্ষণের ফলে নদী, খাল, মাছের ঘের, ফসলের ক্ষেত একাকার হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার তাদের বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছে। বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, টানা বর্ষণে বাগেরহাটে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমনের বীজতলা, সবজি ক্ষেতসহ পানের বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে পাঁচশতাধিক মত্স্য ঘের। প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন মাছ চাষিরা। টানা বর্ষণে বাগেরহাট পৌর শহরসহ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় রাস্তাঘাট, মাছের ঘের ও আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে। মোরেলগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টি ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় উপজেলা বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের নদী ও খালে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা ৪-৫ ফুট বেড়ে গেছে। এতে পৌরসভাসহ নদীর তীরবর্তী আটটি ইউনিয়নের শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পৌরসভার ফেরিঘাট এলাকায় জাইকা নির্মিত একটি পিচ ঢালাই সড়কসহ তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি কাঁচা-পাকা সড়কের অংশবিশেষ নদীগর্ভে চলে গছে। তলিয়ে গেছে ছয় শতাধিক মত্স্য ঘের ও ৫০ হেক্টর আমন বীজতলা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনুপম রায় জানান, কমপক্ষে ৫০ হেক্টর আমন বীজতলা ডুবে রয়েছে। বরগুনা প্রতিনিধি জানান, অমাবস্যার প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও টানা ভারি বর্ষণে স্থবির হয়ে পড়েছে উপকূলীয় বরগুনার আমতলী উপজেলার জনজীবন। নষ্ট হয়ে গেছে আমনের অধিকাংশ বীজতলা। অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। প্লাবিত হয়েছে পৌরশহরের আমুয়ার চরসহ ৩০টি গ্রাম ও চর। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এসব চর ও গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়েছে। পেকুয়া সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। একাধিক স্থানে আবারও বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে নতুন এলাকা। এলাকাবাসী তাদের গবাদিপশু নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। চার দিনের টানা বৃষ্টিতে এ প্লাবনের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার আরও অধিকাংশ গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ও তত্সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তত্সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।