হাওর বার্তা ডেস্কঃমাদারগঞ্জের সিঁধুলি ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ কালিবাড়ী বাজারে ময়লা-আবর্জনার পাশে ছোট্ট একটি চালাঘর। সেখানে রাতদিন একাই থাকেন শত বছর বয়সী একজন প্রতিবন্ধি নারী। কেউ তার নাম জানে না। অনেকেই তাকে পাগলি বলে ডাকেন। তবে তাকে কেউ কখনো পাগলের আচরণ করতে দেখেনি।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবন্ধি নারীটির বয়স একশ’ বছর পেরিয়েছে। তিনি অন্ততঃ ২০ বছর ধরে হাটা চলা করতে পারেন না। কথাও বলতে পারেন না। তার কোন ওয়ারিশ নেই। তিনি বর্তমানে যেখানে থাকেন সেখানেই শুয়ে বসে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেন। স্থানীয়রা আরও জানান, সিঁধুলি ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে অসংখ্যবার ওই প্রতিবন্ধি বৃদ্ধাকে দু’মুঠো খাবারের নিশ্চয়তা দিতে অনুরোধ করেও কাজ হয়নি। এ জন্য শতবছর পেরিয়েও ওই বৃদ্ধা
প্রতিবন্ধি নারীটি ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে প্রতিবন্ধি ভাতা, ভিজিডি কার্ড ও ভিজিএফ কার্ড পাননি। তাই শ্যামগঞ্জ কালিবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে নারীটির ভরণপোষণ করা হচ্ছে।
শ্যামগঞ্জ কালিবাড়ি বাজারের হোমিও চিকিত্সক আতাউর রহমান (তারা) জানান, বাপ-দাদার কাছে যা শুনেছি তাতে প্রতিবন্ধি নারীটি প্রায় ৬০ বছর যাবৎ এই বাজারেই অবস্থান করছেন। কয়েক বছর আগে নারীটিকে এই বাজারে অসুস্থ অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে তাকে তখন চিকিত্সা প্রদানসহ পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়। ওইদিনই তিনি স্থানীয় মাতাব্বর সন্তোষ মন্ডল এবং কাইনছে মন্ডলের সহায়তায় বাজারের পাশেই চার হাত প্রশস্তের একটি চালাঘর তুলে সেখানেই তাকে থাকতে দেয়া হয়। তখন থেকেই এ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে নারীটির জন্য খাবার সংগ্রহ করে দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও সিঁধুলি ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের আয়েশা বেগম নামের অপর একজন নারীকে মাসিক দুই হাজার টাকা বেতনের বিনিময়ে ওই প্রতিবন্ধি মহিলাটির সেবা যত্নের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে আয়েশা বেগমের বেতন ও নারীটির খাবার সংগ্রহে সমস্যা হওয়ায় শতবছর বয়সী প্রতিবন্ধি নারীকে মাঝে মধ্যেই না খেয়ে কান্নাকাটি করতে হয়।
মাদারগঞ্জের সিঁধুলি ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মিরন সরকার জানান, শ্যামগঞ্জ কালিবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে প্রতিবন্ধি বৃদ্ধ নারীটির ভরণপোষণ করা হয়। নারীটি কথা বলতে পারে না এবং তার কোনো ভোটার আইডি কার্ড না থাকায় তাকে প্রতিবন্ধি ভাতা এবং ভিজিডি কার্ড ও ভিজিএফ কার্ড দেয়া সম্ভব হয়নি।-কালের কণ্ঠ