হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবিবাহিত তাছলিমা খানমের বিধবা ভাতা কোটালীপাড়া পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর আকলিমা বেগম অত্মসাৎ করেছেন। এ ব্যাপারে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কোটালীপাড়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জহুরুল ইসলাম পৌরসভার মেয়রকে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, কোটালীপাড়া পৌর সভার ১,২ ও ৩ নং সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর আকলিমা বেগমের সুপারিশে বিগত ২০১৪ সালের জুলাই মাস থেকে ৩নং ওয়ার্ডের শিমুলবাড়ি গ্রামের মৃত করিম খলিফার মেয়ে তাছলিমা খানম বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তা দুঃস্থ মহিলা ভাতা পাচ্ছেন। টাকার বিনিময়ে তাছলিমাকে বিধবা ভাতা পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন আকলিমা। ২০১৪ সাল থেকেই ভাতার টাকা আকলিমা গ্রহণ করেছেন। গত ২৭ এপ্রিল ওই কাউন্সিলর তাছলিমা খানমকে কোটালীপাড়া পৌরসভার প্রতিবন্ধীর তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করেন।
তাকে (তাছলিমা) প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের সুপারিশ করেন। তাছলিমা খানম অবিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে বিধবা ও স্বামী পরিত্যাক্তা দুঃস্থ মহিলা ভাতা পওয়ার সুপারিশ প্রাপ্ত হলো ?
বিষয়টি জানা জরুরি বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কাউন্সিলর আকলিমা বেগম সমাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৯টি ভুয়া এনআইডি প্রদর্শন করে বয়স্ক ভাতা প্রদানের সুপারিশ করেন। বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানে সঠিক ব্যক্তিকে বাছাই না করে ভুয়া ব্যক্তিকে বাছাই করে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ওই কাউন্সিলর মারত্মকভাবে ব্যহত করছেন।
এ অবস্থায় কোটালীপাড়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কাউন্সিলর আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোটালীপাড়া পৌরসভার মেয়রকে ১৭ জুলাই চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছেন। অবিবাহিত তাছলিমা খানম অভিযোগ করে বলেন, এখনও আমার বিয়ে হয়নি। এমনকি আমি প্রতিবন্ধীও নই। টাকার বিনিময়ে কাউন্সিলর আকলিমা বেগম আমাকে বিধবা ভাতার কার্ড পাইয়ে দেয়। ভাতার টাকা ব্যাংক থেকে আমি উত্তোলন করি। পরে সব টাকাই আকলিমা বেগম গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছেন। তিনি আমাকে কোন টাকা দেননি।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জহুরুল ইসলাম বলেন, আমি ১ বছর এখানে কর্মরত। বিধবা ভাতা প্রাপ্ত তাছলিমাকে প্রতিবন্ধীর তালিকাভুক্ত করার পর বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। তদন্তে নেমে দেখা যায়, টাকার বিনমিয়ে বিধবা ভাতা দিয়ে কউন্সিলার আত্মসাৎ করছে। এছাড়া আকলিমা ৯ জনকে বয়স্ক ভাতা দেয়ার জন্য সুপারিশ করে ভুয়া আইডি কার্ড প্রদর্শন করেছেন।
নির্বাচন অফিসে যাচাই বাছাইয়ে দেখা যায়, সেখানে বয়স্ক ভাতার আবেদনকারীদের বয়স বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ সব ব্যাপারে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি চিঠি দিয়ে মেয়রকে অনুরোধ করেছি। অভিযুক্ত কাউন্সিলর আকলিমা বেগম বলেন, তাছলিমা অসহায় ও দুঃস্থ। সে অবিবাহিত তারপরও তাকে আমি সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করে একটি বিধবা কার্ড পাইয়ে দিয়েছি।
সে প্রতিমাসে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিত। আমি কখনো তার টাকা গ্রহণ করিনি। সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা আত্মসাতের অভিযোগ করেছে। কার্ড পাওয়ার পর সে সমাজসেবা অফিসে আমার মাধ্যমে ১ হাজার টাকা দিয়ে ছিল। তাকে প্রতিবন্ধী তালিকা অর্ন্তভুক্তকরা আমার ভুল হয়েছে। এলাকার বয়স্কদের ভাতা দেয়ার জন্য আমি সুপারিশ করেছিলাম। ভাতা পেতে আবেদনকারীরা আইডি কার্ডে তাদের বয়স বাড়িয়ে দিয়েছে।
কোটালীপাড়া পৌরসভার মেয়র এইচএম অহিদুল ইসলাম বলেন, আমি পৌরসভার সীমানা জটিলতা নিয়ে দায়েরকৃত মমলা সংক্রান্ত কাজে ঢাকা অবস্থান করছি। এ কারণে সমাজসেবার চিঠি আমি হাতে পাইনি। তবে আকলিমা বেগম ঝামেলায় পড়েছেন বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে কাউন্সিলরদের বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি।