ঢাকা ০৪:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ে পাঁচটি কটেজ নির্মাণ করা হবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০১৭
  • ২৬২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে রামসার সাইট অর্ন্তভুক্ত সুনামগঞ্জের  টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের উপস্থিতি ও তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ে কিছুদিনের মধ্যেই পাঁচটি কটেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এসব কটেজ নির্মাণ করবে। এছাড়া পর্যটন কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে হাওর দেখতে আসা পর্যটকদের সুবিধার জন্য ১২ জন ট্যুরিস্ট গাইড নিয়োগ করা হবে।

গত বুধবার দুপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা যাচাই ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক আলোচনা সভায় এসব বিষয় তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের যুগ্ম-সচিব মিজানুর রহমান।

তাহিরপুর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সভা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের যুগ্ম-সচিব মিজানুর রহমান বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে সকল জীববৈচিত্র্য রক্ষা হোক- সেটাই আমরা চাই। যেখানে পর্যটন হবে এবং এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আপাতত ১২ জন ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবে নিয়োগ করা হবে। কটেজ ব্যবস্থাপনা কীভাবে করতে হয়, সে বিষয়েও তাদের তিন দিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এক বছরের মধ্যে ১০০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে কমপক্ষে এসএসসি। কুকের শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে পঞ্চম শ্রেণি পাস। যাদের চাকরি হবে তাদের বাড়ি অবশ্যই তাহিরপুর উপজেলায় হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা হচ্ছে শিল্প-সংস্কৃতির দিক দিয়ে দেশের অন্যতম একটি জেলা। তাই সরকার টাঙ্গুয়ার হাওরকে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম বলেন, আমিও একজন ভ্রমণপিপাসুষ। তাহিরপুর উপজেলায় অনেক দর্শনীয়স্থান রয়েছে, প্রতিটি স্থানেই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার মতো। পর্যটনকেন্দ্রের নামে আমরা যেন হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস না করি।

সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, তাহিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল- তাহিরপুরের দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার। টাঙ্গুয়া হাওরে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণে তাহিরপুরবাসী আনন্দিত।

বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এবং আইইউসিএন বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় টাঙ্গুয়ার হাওরবিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর  কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা সেলিনা সুলতানা।

রামসার সাইট টাঙ্গুয়া হাওর, ট্যাকেরঘাট খনিজ প্রকল্প, লাকমা ছড়া, বারেক টিলা, এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান, হাওলি জমিদার বাড়িসহ অসংখ্য দর্শনীয়স্থান রয়েছে সুনামগঞ্জ জেলার হাওরবেষ্টিত মেঘালয় সীমান্ত উপজেলা তাহিরপুরে।

’৯০ দশকের শুরুতে হাতেগুনা যত সামান্য ভ্রমণপিপাসু মানুষের পদচারণা পড়ে তাহিরপুরের এসব দর্শনীয় স্থানগুলোতে। পরবর্তীতে ২০০০ সালের শুরু থেকেই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেড়ে যায় দর্শনার্থীদের পদচারণা। আর এ থেকেই বিভিন্ন সময়ে তাহিরপুরবাসীর পক্ষ থেকে দাবি উঠে তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে টাঙ্গুয়া হাওরসহ তাহিরপুরের দর্শনীয়স্থানগুলো পরিদর্শন করে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

কান্ট্রিট্যুরিজম বাংলাদেশ এডমিন রাসেল ভুইয়া জানান, তাহিরপুর উপজেলার প্রতিটি দর্শনীয়স্থানেই পর্যটনকেন্দ্র করার মত। টাঙ্গুয়া হাওরে আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় ভ্রমণকালে রাতের বেলা পর্যটকরা নৌকায় থাকেন, কটেজ নির্মিত হলে সে সমস্যা কিছুটা কমবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ে পাঁচটি কটেজ নির্মাণ করা হবে

আপডেট টাইম : ১১:৩৮:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে রামসার সাইট অর্ন্তভুক্ত সুনামগঞ্জের  টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকদের উপস্থিতি ও তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ে কিছুদিনের মধ্যেই পাঁচটি কটেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এসব কটেজ নির্মাণ করবে। এছাড়া পর্যটন কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে হাওর দেখতে আসা পর্যটকদের সুবিধার জন্য ১২ জন ট্যুরিস্ট গাইড নিয়োগ করা হবে।

গত বুধবার দুপুরে টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্যের বর্তমান অবস্থা যাচাই ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক আলোচনা সভায় এসব বিষয় তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের যুগ্ম-সচিব মিজানুর রহমান।

তাহিরপুর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সভা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের যুগ্ম-সচিব মিজানুর রহমান বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরে সকল জীববৈচিত্র্য রক্ষা হোক- সেটাই আমরা চাই। যেখানে পর্যটন হবে এবং এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আপাতত ১২ জন ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবে নিয়োগ করা হবে। কটেজ ব্যবস্থাপনা কীভাবে করতে হয়, সে বিষয়েও তাদের তিন দিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এক বছরের মধ্যে ১০০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে কমপক্ষে এসএসসি। কুকের শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে পঞ্চম শ্রেণি পাস। যাদের চাকরি হবে তাদের বাড়ি অবশ্যই তাহিরপুর উপজেলায় হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা হচ্ছে শিল্প-সংস্কৃতির দিক দিয়ে দেশের অন্যতম একটি জেলা। তাই সরকার টাঙ্গুয়ার হাওরকে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক সাবিরুল ইসলাম বলেন, আমিও একজন ভ্রমণপিপাসুষ। তাহিরপুর উপজেলায় অনেক দর্শনীয়স্থান রয়েছে, প্রতিটি স্থানেই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার মতো। পর্যটনকেন্দ্রের নামে আমরা যেন হাওরের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস না করি।

সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, তাহিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল- তাহিরপুরের দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার। টাঙ্গুয়া হাওরে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণে তাহিরপুরবাসী আনন্দিত।

বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এবং আইইউসিএন বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় টাঙ্গুয়ার হাওরবিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর  কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা সেলিনা সুলতানা।

রামসার সাইট টাঙ্গুয়া হাওর, ট্যাকেরঘাট খনিজ প্রকল্প, লাকমা ছড়া, বারেক টিলা, এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান, হাওলি জমিদার বাড়িসহ অসংখ্য দর্শনীয়স্থান রয়েছে সুনামগঞ্জ জেলার হাওরবেষ্টিত মেঘালয় সীমান্ত উপজেলা তাহিরপুরে।

’৯০ দশকের শুরুতে হাতেগুনা যত সামান্য ভ্রমণপিপাসু মানুষের পদচারণা পড়ে তাহিরপুরের এসব দর্শনীয় স্থানগুলোতে। পরবর্তীতে ২০০০ সালের শুরু থেকেই অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেড়ে যায় দর্শনার্থীদের পদচারণা। আর এ থেকেই বিভিন্ন সময়ে তাহিরপুরবাসীর পক্ষ থেকে দাবি উঠে তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে টাঙ্গুয়া হাওরসহ তাহিরপুরের দর্শনীয়স্থানগুলো পরিদর্শন করে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

কান্ট্রিট্যুরিজম বাংলাদেশ এডমিন রাসেল ভুইয়া জানান, তাহিরপুর উপজেলার প্রতিটি দর্শনীয়স্থানেই পর্যটনকেন্দ্র করার মত। টাঙ্গুয়া হাওরে আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় ভ্রমণকালে রাতের বেলা পর্যটকরা নৌকায় থাকেন, কটেজ নির্মিত হলে সে সমস্যা কিছুটা কমবে।