বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার ও যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীরসহ ৩১ নেতাকে পুলিশ হত্যা মামলায় অব্যাহতি দেয়া হয়েছে- সকালে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লেও মঙ্গলবার বিকালে আদালতের লিখিত আদেশে বলা হয়েছে- তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়নি। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে।
জানা যায়, রমনা থানার ওই মামলায় মঙ্গলবার ৩১ আসামির অব্যাহতির শুনানি এবং সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল।
ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল হক সকালে অব্যাহতির আবেদন মঞ্জুর করে অপর সাতজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট আমলে নেন।
সূত্র জানায়, তাৎক্ষণিকভাবে মিডিয়ায় এই সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর অজ্ঞাত কারণে বিকালে আদেশ পরিবর্তন হয়ে পুনরায় আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অব্যাহতির আবেদন ও চার্জশিট গ্রহণের ওপর শুনানি দিন ঠিক করা হয়।
এ ব্যাপারে বিএনপির নেতাদের অন্যতম আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদিন মেজবাহ তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এভাবে আদালতের আদেশ পরিবর্তন স্বাভাবিক নয়। সরকারের চাপে মূলত এটি পরিবর্তন করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী আদালতের বিচারক কোনো আদেশ দিলে তা পরিবর্তন করতে পারেন না।’
বিএনপির নেতাদের এই আইনজীবী জানান, এসব মামলায় আদালতে কোনো পক্ষের শুনানি হয় না। শুধু বিচারক পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্রটি আমলে নিলে আসামিরা আইনগতভাবে অব্যাহতি পেয়ে যান।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে গোয়েন্দা পুলিশ ডিবির এসআই দিপক কুমার দাস মামলাটিতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিএনপির ৩১ নেতার অব্যাহতি এবং সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত সাতজন হলেন, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিবুন নবী খান সোহল, আনোয়ার হোসেন টিপু, মোহাম্মাদ হোসেন, আব্দুস সত্তর, মো. রফিক আকন্দ, আলফাজ ওরফে আব্বাস ও মো. শাহ আলম।
অব্যাহতি চাওয়া অপর বিএনপি নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, এম কে আনোয়ার, রহুল কবির রিজভী, আমান উল্লাহ আমান, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আজিজুল বারী হেলাল, রুহুল কবির তালুকদার দুলু, বরকতউল্লাহ বুলু, মিজানুর রহমান মিনু, আব্দুস সালাম, মীর শরাফাত আলী সফু প্রমুখ।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ১৭ জানুয়ারি বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের টানা ১২তম দিনের অবরোধ চলাকালে রাত পৌনে ৯টার দিকে মৎস্য ভবন এলাকায় ৩০/৪০ জন পুলিশ সদস্যবাহী একটি বাসে দুর্বৃত্তরা পেট্রলবোমায় নিক্ষেপ করেন।
এই ঘটনায় কনস্টেবল শামীম, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, কনস্টেবল শিপন, মোরশেদ, বদিয়ারসহ পুলিশের ১৩ সদস্য আহত হন। পরে কনস্টেবল শামীম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।
ওই ঘটনার পর মোহাম্মাদ হোসেন, আব্দুস সত্তর, মো. রফিক আকন্দ ও আলফাজ ওরফে আব্বাস আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। স্বীকারোক্তিতে তারা হাবিবুন নবী খান সোহলের নির্দেশে এই পেট্টলবোমা হামলা চালায় বলে উল্লেখ করেন।