হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি অনন্য নাম দিলদার। এক নামেই যিনি কোটি দর্শকের কাছে পরিচিত, তার সম্পর্কে বাড়িয়ে বলার প্রয়োজন হয় না। তার মত নন্দিত কৌতুক অভিনেতার দর্শন এদেশের দর্শক আর পায়নি। এমনকি তার প্রয়াণের দীর্ঘ ১৪ বছর পরও তার মতো জনপ্রিয়তা কেউ অর্জন করতে পারেনি।
দিলদারের অভিনয়ে দর্শকরা আরাম খুঁজে পেতো। তার কৌতুকে ভাঁড়ামি ছিলো না, ছিলো সাবলিল অভিনয়। আর এই অভিনয়েই মানুষ হাসতো। তার অঙ্গভঙ্গিমা আর হাস্যরসাত্মকভাবে বলা সংলাপ মানুষের মুখে মুখে ঘুরতো। এমনকি শেষ দৃশ্যে দিলদারের সংলাপ দিয়ে ছবির ইতি টানা যেন আলাদা আকর্ষণে পরিণত হয়েছিলো। দর্শকরাও দিলদারের মুখে শেষ সংলাপটি শোনার জন্য অপেক্ষা করতো।
তুমুল জনপ্রিয় এই অভিনেতা পরপারের বাসিন্দা হয়ে গেছেন সেই ২০০৩ সালে। সে বছরের ১৩ জুলাই ৫৮ বছর বয়সে চিরবিদায় নেন দিলদার। এর মাঝে পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ১৪টি বছর। তার স্মরণে তেমন কোনো আয়োজনও চোখে পড়ে না। অথচ খ্যাতিমান এই অভিনেতা চলচ্চিত্রের জন্য কত অবদান রেখে গেছেন।
দিলদারের জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৩ জানুয়ারি চাঁদপুরে। রূপালি পর্দায় তার অভিষেক হয় ১৯৭২ সালে ‘কেন এমন হয়’ নামের চলচ্চিত্র দিয়ে। প্রথম ছবিতেই তার অভিনয় দর্শকমহলে দারুণভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়। তার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি দিলদারকে। একে একে অভিনয় করেছেন ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ‘বিক্ষোভ’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘কন্যাদান’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘সুন্দর আলীর জীবন সংসার’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘শান্ত কেন মাস্তান’সহ অসংখ্য দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে।
অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ দিলদার ২০০৩ সালে ‘তুমি শুধু আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
এদেশের চলচ্চিত্রে এখনো কৌতুক অভিনেতা রয়েছেন। তাদের কাছে রীতিমত আদর্শ হিসেবে বেঁচে আছেন দিলদার। অগণিত দর্শকের হৃদয়েও তার অবস্থানটি কেউ দখল করতে পারেননি। দিলদার বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য একজনই ছিলেন। আর অভিনয়ের মাধ্যমে যে আলো ছড়িয়ে গেছেন, সেই আলোতে বেঁচে থাকবেন চিরকাল।