হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন মুক্তামনির তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেনকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ সম্পর্কিত নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসায় ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করার কথা রয়েছে।
ডা. সামন্ত লাল বলেন, ‘মুক্তার চিকিৎসার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. জুলফিকার লেনিন আমাকে ফোন করে একথা জানিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার খবর শুনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মুক্তামনির বাবা মো. ইব্রাহীম হোসেন বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।’
শিশু মুক্তামনির বাবা জানান, মঙ্গলবার সকালে তিনি তার মেয়েকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছেন। সকাল ৯টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সে ৬০৮ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।
জন্মের দেড় বছর পর ১২ বছরের শিশু মুক্তামনির দেহে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। তার আক্রান্ত ডানহাত এখন ছোট আকারের গাছের গুড়ির রুপ নিয়ে প্রচণ্ড ভারী হয়ে উঠেছে। এতে পঁচনও ধরেছে। পোকাও জন্মেছে। দিন রাত চুলকানি ও যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকে মুক্তামনি। আক্রান্ত স্থান থেকে বিকট গন্ধ ছুটছে। এ রোগ তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। এসব কারণে তাদের বাড়িতে আত্মীয় স্বজন ও পড়শিদের যাতায়াতও এক রকম বন্ধ হয়ে গেছে।
ঢাকায় অবস্থানরত শিশু মুক্তার বাবা-মা জানিয়েছেন, বর্তমানে তার রক্তশূন্য দেহে রক্ত দেয়া হচ্ছে। এছাড়া উন্নত মানের খাবার খাইয়ে তাকে সুস্থ করে তুলবার পর মূল চিকিৎসা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক ডা. শামন্ত লাল সেন জানান, তিনি এবং বার্ন ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রাথমিকভাবে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন।
বুধবার মুক্তামনির চিকিৎসার বিষয়ে একটি বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।