ঢাকা ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নয়ন জুড়ানো নাগলিঙ্গম

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ জুলাই ২০১৭
  • ৩০৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুফতি মোহাম্মদ আলী মসজিদের ঠিক সামনেই দুটি বড় আকৃতির নাগলিঙ্গম গাছ রয়েছে। গাছে লাল রক্তের মতোই ফুটে আছে অসংখ্য নাগলিঙ্গম ফুল। থোকায় থোকায় ঝুলছে এর গোলাকার ফল। মানুষের কাছে খুব একটা পরিচিতি না থাকলেও এর রূপ-সৌন্দর্যে বিমোহিত হয় পথিক। খানিক ফিরে তাকায় গাছের পানে। গাছের গোড়া ফুঁড়ে বের হওয়া লম্বা লতার মতো শাখায় ছোট ছোট হাজারো কুঁড়ি। এক সময় কুঁড়ি থেকে টুকটুকে লাল পলাশ কিংবা শিমুলের মতো ফুল মুখ বের করে আকাশের পানে। নাগলিঙ্গম ফুলের পাপড়ি, রেণু, ফুলের গঠন আরও মোহনীয়। পাপড়ির মাথায় অসংখ্য ছোট ছোট সাপের মতো ফণা তোলা! তাই বোধহয় নাম হয়েছে নাগলিঙ্গম। নাগলিঙ্গম আমাদের দেশে বিরল প্রকৃতির গাছ। এই ফুল সচরাচর দেখা যায় না। বেশিরভাগ মানুষের কাছে এটি অপরিচিত। পৃথিবীর অনেক দেশে নাগলিঙ্গম দেখা যায়। তবে এর আদি নিবাস মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার গভীর বনাঞ্চলে। গাছটি থাইল্যান্ড ও ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে দেখা মেলে। ভারতের শান্তিনিকেতনেও বেশ কিছু বড় আকৃতির নাগলিঙ্গম গাছ আছে। ভারতে এটি দেখা যাচ্ছে অন্তত চার হাজার বছর ধরে। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে বেশ কিছু নাগলিঙ্গম চোখে পড়ে। জানা গেছে, নাগলিঙ্গমের বৈজ্ঞানিক নাম । ইংরেজি নাম । এটি খবপুঃযরফধপবধব গোত্রের। নাগলিঙ্গম গাছ সাধারণত ১০ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর গোড়ায় বেলের মতো শত শত ফল হয়। এটি একটি ঔষধি বৃক্ষ। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, এটি লিগুসিমেনি গোত্র। এটি নাগেশ্বর জাতীয় একটি গাছ। এর মনকাড়া সৌন্দর্য বিমোহিত করে। এর ফুল, ফল ও গাছের পাতা আলাদা বৈশিষ্ট্যের। নাগলিঙ্গম গাছ সাধারণত অন্যান্য কাঠবৃক্ষের মতো হলেও অন্যান্য জাতের গাছের মতো এর শাখায় নয়, বরং ফুল ফোটে গুঁড়িতে ও কাণ্ডে। নয়নকাড়া ফুল আর বিচিত্র গোলাকার ফলের জন্য নাগলিঙ্গম সবার কাছে বাড়তি আকর্ষণের। সাধারণত মার্চ থেকে ডিসেম্বরে নাগলিঙ্গমে ফুল ফোটে। ফুলের রঙ উজ্জ্বল গোলাপি। ফুলের পরাগ কেশর অনেকটা সাপের ফণার মতো। নাগলিঙ্গম গাছের রয়েছে ব্যাপক ঔষধি গুণ। বেলের মতো ফলের রঙ গাঢ় বাদামি। শাঁস প্রায় সাদা, নরম ও বহুবীজী। তবে ফল খাওয়া যায় না। এটি বিষাক্ত। পাকা ফলগুলো হাতির প্রিয় খাবার। পাকার পর ফল থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এর বাকল, ফুল আর ফল থেকে অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করা হয়। ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসেবেও এর পাতা ব্যবহার হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

নয়ন জুড়ানো নাগলিঙ্গম

আপডেট টাইম : ১১:৩৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুফতি মোহাম্মদ আলী মসজিদের ঠিক সামনেই দুটি বড় আকৃতির নাগলিঙ্গম গাছ রয়েছে। গাছে লাল রক্তের মতোই ফুটে আছে অসংখ্য নাগলিঙ্গম ফুল। থোকায় থোকায় ঝুলছে এর গোলাকার ফল। মানুষের কাছে খুব একটা পরিচিতি না থাকলেও এর রূপ-সৌন্দর্যে বিমোহিত হয় পথিক। খানিক ফিরে তাকায় গাছের পানে। গাছের গোড়া ফুঁড়ে বের হওয়া লম্বা লতার মতো শাখায় ছোট ছোট হাজারো কুঁড়ি। এক সময় কুঁড়ি থেকে টুকটুকে লাল পলাশ কিংবা শিমুলের মতো ফুল মুখ বের করে আকাশের পানে। নাগলিঙ্গম ফুলের পাপড়ি, রেণু, ফুলের গঠন আরও মোহনীয়। পাপড়ির মাথায় অসংখ্য ছোট ছোট সাপের মতো ফণা তোলা! তাই বোধহয় নাম হয়েছে নাগলিঙ্গম। নাগলিঙ্গম আমাদের দেশে বিরল প্রকৃতির গাছ। এই ফুল সচরাচর দেখা যায় না। বেশিরভাগ মানুষের কাছে এটি অপরিচিত। পৃথিবীর অনেক দেশে নাগলিঙ্গম দেখা যায়। তবে এর আদি নিবাস মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার গভীর বনাঞ্চলে। গাছটি থাইল্যান্ড ও ভারতের বিভিন্ন মন্দিরে দেখা মেলে। ভারতের শান্তিনিকেতনেও বেশ কিছু বড় আকৃতির নাগলিঙ্গম গাছ আছে। ভারতে এটি দেখা যাচ্ছে অন্তত চার হাজার বছর ধরে। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে বেশ কিছু নাগলিঙ্গম চোখে পড়ে। জানা গেছে, নাগলিঙ্গমের বৈজ্ঞানিক নাম । ইংরেজি নাম । এটি খবপুঃযরফধপবধব গোত্রের। নাগলিঙ্গম গাছ সাধারণত ১০ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর গোড়ায় বেলের মতো শত শত ফল হয়। এটি একটি ঔষধি বৃক্ষ। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, এটি লিগুসিমেনি গোত্র। এটি নাগেশ্বর জাতীয় একটি গাছ। এর মনকাড়া সৌন্দর্য বিমোহিত করে। এর ফুল, ফল ও গাছের পাতা আলাদা বৈশিষ্ট্যের। নাগলিঙ্গম গাছ সাধারণত অন্যান্য কাঠবৃক্ষের মতো হলেও অন্যান্য জাতের গাছের মতো এর শাখায় নয়, বরং ফুল ফোটে গুঁড়িতে ও কাণ্ডে। নয়নকাড়া ফুল আর বিচিত্র গোলাকার ফলের জন্য নাগলিঙ্গম সবার কাছে বাড়তি আকর্ষণের। সাধারণত মার্চ থেকে ডিসেম্বরে নাগলিঙ্গমে ফুল ফোটে। ফুলের রঙ উজ্জ্বল গোলাপি। ফুলের পরাগ কেশর অনেকটা সাপের ফণার মতো। নাগলিঙ্গম গাছের রয়েছে ব্যাপক ঔষধি গুণ। বেলের মতো ফলের রঙ গাঢ় বাদামি। শাঁস প্রায় সাদা, নরম ও বহুবীজী। তবে ফল খাওয়া যায় না। এটি বিষাক্ত। পাকা ফলগুলো হাতির প্রিয় খাবার। পাকার পর ফল থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এর বাকল, ফুল আর ফল থেকে অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধ তৈরি করা হয়। ম্যালেরিয়ার ওষুধ হিসেবেও এর পাতা ব্যবহার হয়।