ঢাকা ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাচা পদ্ধতিতে কুমড়া চাষে লাভ তিনগুণ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৪৪:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০১৭
  • ৫৬৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  মাচা পদ্ধতিতে কুমড়া চাষে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে যশোরের কেশবপুর উপজেলার দুই গ্রামের ২ শতাধিক কৃষক লাভবান হয়েছেন। চলতি খরিপ-১ মৌসুমে এ দুই গ্রামে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কুমড়া জাতীয় ফসলের মাছি পোকা দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রতি বিঘা জমিতে কুমড়া চাষে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। আর কৃষকরা ফলন পেয়েছেন ৬০ থেকে ৭০ মণ। যার মূল্য ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। খরচের তুলনায় প্রায় তিনগুণ লাভ পেয়েছেন তারা। সম্প্রতি এর ওপর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক মাচা পদ্ধতির কুমড়া ক্ষেত পরিদর্শন করেন।
কৃষি অফিস জানায়, কেশবপুরের মজিদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বেগুন, কুমড়া, শিম, বরবটিসহ নানা ধরনের সবজি আবাদ হয়ে আসছে। কিন্তু এসব সবজিতে উচ্চমূল্যের কীটনাশক ব্যবহারের পরও খরচের টাকা উঠতো না বলে কৃষক জানিয়েছেন। এ অবস্থায় উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ওই দুই গ্রামের ২ শতাধিক কৃষক ১৭০ বিঘা জমিতে নিজ উদ্যোগে মাচা পদ্ধতির কুমড়া চাষে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে লাভবান হয়েছেন।
বাগদা গ্রামের কৃষক মশিয়ার গাজী ও সাঈদ মোড়ল জানান, তারা ৪ বছর ধরে মাচা পদ্ধতিতে কুমড়ার আবাদ করে আসছেন। এ পদ্ধতির আবাদ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু কুমড়া ক্ষেতে উচ্চমূল্যের কীটনাশক ব্যবহারের পরও ক্ষতিকর পোকা দমনে ব্যর্থ হয়ে তারা এ ফসল আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। এমতাবস্থায় তারা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে কুমড়া ক্ষেতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে বিঘা প্রতি (৩৩ শতাংশ) ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করে ৬০ থেকে ৭০ মণ ফলন পেয়েছেন। যার মূল্য ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারের ওপর মাঠ দিবসের উদ্দেশ্য হলো মাচা পদ্ধতির কুমড়ার আবাদ সম্প্রসারণ, কৃষকের আগ্রহ সৃষ্টি, উন্নত জাতের সঙ্গে পরিচয় ঘটানোসহ নতুন প্রযুক্তি চাষির মাধ্যমে মাঠে বাস্তবায়ন করা। সাধারণত কুমড়ার চারা রোপণের ৪৫ দিনেই ফুল আসা শুরু হয় এবং ৯০ দিনেই ফলন কৃষকের ঘরে ওঠে। তিনি জানান, মাচা পদ্ধতিতে কুমড়া চাষে খরচ কম, ফলন বেশি পাওয়া যায়। আর সেক্স ফেরোমন ফাঁদ হলো স্ত্রী মাছি পোকার গায়ের গন্ধের অনুরূপ জৈবিক পদার্থ দিয়ে তৈরি একটি টোপ (লিয়র)। এতে যৌন মিলনের জন্য পুরুষ পোকা আকৃষ্ট হয়ে ফাঁদের সাবান মিশ্রিত পানিতে পড়ে মারা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আয়োজনে মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ওই মাঠ দিবসে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজী হাবিবুর রহমান। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুবকর আবু, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল মান্নান। অন্যদের মধ্যে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস, নজরুল ইসলাম, দ্বিপজয় বিশ্বাস, কৃষক মানিক দত্ত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মাচা পদ্ধতিতে কুমড়া চাষে লাভ তিনগুণ

আপডেট টাইম : ০১:৪৪:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  মাচা পদ্ধতিতে কুমড়া চাষে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে যশোরের কেশবপুর উপজেলার দুই গ্রামের ২ শতাধিক কৃষক লাভবান হয়েছেন। চলতি খরিপ-১ মৌসুমে এ দুই গ্রামে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কুমড়া জাতীয় ফসলের মাছি পোকা দমনে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রতি বিঘা জমিতে কুমড়া চাষে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। আর কৃষকরা ফলন পেয়েছেন ৬০ থেকে ৭০ মণ। যার মূল্য ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। খরচের তুলনায় প্রায় তিনগুণ লাভ পেয়েছেন তারা। সম্প্রতি এর ওপর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক মাচা পদ্ধতির কুমড়া ক্ষেত পরিদর্শন করেন।
কৃষি অফিস জানায়, কেশবপুরের মজিদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বেগুন, কুমড়া, শিম, বরবটিসহ নানা ধরনের সবজি আবাদ হয়ে আসছে। কিন্তু এসব সবজিতে উচ্চমূল্যের কীটনাশক ব্যবহারের পরও খরচের টাকা উঠতো না বলে কৃষক জানিয়েছেন। এ অবস্থায় উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ওই দুই গ্রামের ২ শতাধিক কৃষক ১৭০ বিঘা জমিতে নিজ উদ্যোগে মাচা পদ্ধতির কুমড়া চাষে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে লাভবান হয়েছেন।
বাগদা গ্রামের কৃষক মশিয়ার গাজী ও সাঈদ মোড়ল জানান, তারা ৪ বছর ধরে মাচা পদ্ধতিতে কুমড়ার আবাদ করে আসছেন। এ পদ্ধতির আবাদ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিন্তু কুমড়া ক্ষেতে উচ্চমূল্যের কীটনাশক ব্যবহারের পরও ক্ষতিকর পোকা দমনে ব্যর্থ হয়ে তারা এ ফসল আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। এমতাবস্থায় তারা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে কুমড়া ক্ষেতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে বিঘা প্রতি (৩৩ শতাংশ) ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ করে ৬০ থেকে ৭০ মণ ফলন পেয়েছেন। যার মূল্য ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারের ওপর মাঠ দিবসের উদ্দেশ্য হলো মাচা পদ্ধতির কুমড়ার আবাদ সম্প্রসারণ, কৃষকের আগ্রহ সৃষ্টি, উন্নত জাতের সঙ্গে পরিচয় ঘটানোসহ নতুন প্রযুক্তি চাষির মাধ্যমে মাঠে বাস্তবায়ন করা। সাধারণত কুমড়ার চারা রোপণের ৪৫ দিনেই ফুল আসা শুরু হয় এবং ৯০ দিনেই ফলন কৃষকের ঘরে ওঠে। তিনি জানান, মাচা পদ্ধতিতে কুমড়া চাষে খরচ কম, ফলন বেশি পাওয়া যায়। আর সেক্স ফেরোমন ফাঁদ হলো স্ত্রী মাছি পোকার গায়ের গন্ধের অনুরূপ জৈবিক পদার্থ দিয়ে তৈরি একটি টোপ (লিয়র)। এতে যৌন মিলনের জন্য পুরুষ পোকা আকৃষ্ট হয়ে ফাঁদের সাবান মিশ্রিত পানিতে পড়ে মারা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আয়োজনে মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ওই মাঠ দিবসে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজী হাবিবুর রহমান। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মজিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুবকর আবু, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুল মান্নান। অন্যদের মধ্যে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অনাথ বন্ধু দাস, নজরুল ইসলাম, দ্বিপজয় বিশ্বাস, কৃষক মানিক দত্ত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।