ঢাকা ০৬:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবগারি শুল্ক বাড়ানো হবে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০১৭
  • ৩০১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক আমানতে বাড়তি আবগারি শুল্ক থেকে সরকার কত পাবে? আয় আসবে ২০০ কোটি টাকার মত। এর জন্য বিপুল লোকের আয় কমিয়ে দেব? রবীন্দ্রনাথের সেই দাদুর কথা মনে পড়ছে। যে নিজের নাতিকে খুন করে যক্ষ বানিয়ে ধন পাহারা দিয়েছিল। অর্থমন্ত্রী কি আমাদের যক্ষের ধন পাহারাদার বানাচ্ছেন? ব্যাংকের সুদ নিম্ন পর্যায়ে, ব্যাংক সার্ভিস চার্জ কাটে। এর মধ্যে এই আবগাড়ি শুল্ক হবে মরার উপর খাঁড়ার ঘা। এটাতো মহারানী ভিক্টোরিয়ার আমলের টাকা না, যে ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালাব।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ সালের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পুরো প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিলে ক্ষতি হবে ৩৫৫ কোটি টাকা। এটা তো অর্থমন্ত্রীর জন্য কিছুই না। তারপরও এ খাতে কেন হাত দেয়া হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না।

বাজেট আলোচনায় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর বিরোধিতা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, সঞ্চয়পত্রের ওপর সুদ কমানো ঠিক হবে না। ১০ শতাংশ সুদ ধরলে হয়ত হবে এক হাজার কোটি টাকা। এর সুবিধা পাবে লক্ষ লক্ষ লোক। যাদের জন্য কোনো সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প নাই। তারা ট্রাকের সামনে দাঁড়াতে পারেন না, হাত পাততে পারেন না। এদের অনেকে সিনিয়র সিটিজেন। নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। আমরা অনেক শ্রেণির মানুষকে ভর্তুকি দেই, যার প্রাপ্য নয়। তারচেয়ে বড় কথা, ঋণ খেলাপিদের বিশাল বোঝা নিতে পারলে আমরা কেন মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তের সামান্য বোঝা নেব না। প্রব্লেম একটাই, এদের প্রেসার গ্রুপ নাই, থাকলে লেজ গুটায়ে মেনে নেয়া হত। ব্যাংকের কাছ থেকে বা বিদেশি ঋণের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের ঋণ ভালো ও সহজ।

চালের দাম বাড়ার বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, মোটা চালের দাম বাড়লে কৃষক দাম পাবে। আমরা কৃষককে বাধ্য করতে পারি না। আবার চালের দাম রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর বিষয়। তাই ঝুঁকি নিয়ে ব্যালেন্স করে আগাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিদেশী ঋণ যখন তখন নেয়া ঠিক না। নানা শর্ত থাকে। বিদেশী ঋণ অত্যন্ত জটিল ও ভয়াবহ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সঞ্চয়পত্রে সুদ কমানোর ফতোয়া দিচ্ছে। এরা কারা? তারা সেই প্রতিষ্ঠান যারা পদ্মা সেতুতে বাধা দিয়েছে। সারের এবং কৃষি পণ্যে ভর্তুকি দিতে বাধা দিয়েছে। আমরা নিজস্ব চেষ্টায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল মন্ত্রই হচ্ছে উন্নয়ন। এবারের বাজেটে তা প্রতিফলিত হয়েছে। এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে অনেকে বলছেন। আমরা বলবো- শেষ বিচারে এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য। অতীতে তাদের এ ধরণের অবিবেচক বক্তব্য ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এবারও তা ভুল বলে প্রমাণ করতে পারবো।

তিনি বলেন, বাজেটের সমালোচক বিএনপি অতীতে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। শেষ পর্যন্ত তারা লেজ গুটিয়ে নিয়েছে। শত শত মানুষকে তারা পেট্রলবোমা মেরে হতাহত করেছে। এসব কাজ বেগম খালেদা জিয়া করেছেন এয়ার কন্ডিশন রুমে বসে। এতে তার মেকআপের কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত পরিবার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আবগারি শুল্ক বাড়ানো হবে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’

আপডেট টাইম : ১১:৩৭:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুন ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক আমানতে বাড়তি আবগারি শুল্ক থেকে সরকার কত পাবে? আয় আসবে ২০০ কোটি টাকার মত। এর জন্য বিপুল লোকের আয় কমিয়ে দেব? রবীন্দ্রনাথের সেই দাদুর কথা মনে পড়ছে। যে নিজের নাতিকে খুন করে যক্ষ বানিয়ে ধন পাহারা দিয়েছিল। অর্থমন্ত্রী কি আমাদের যক্ষের ধন পাহারাদার বানাচ্ছেন? ব্যাংকের সুদ নিম্ন পর্যায়ে, ব্যাংক সার্ভিস চার্জ কাটে। এর মধ্যে এই আবগাড়ি শুল্ক হবে মরার উপর খাঁড়ার ঘা। এটাতো মহারানী ভিক্টোরিয়ার আমলের টাকা না, যে ঘি দিয়ে প্রদীপ জ্বালাব।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ সালের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, পুরো প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিলে ক্ষতি হবে ৩৫৫ কোটি টাকা। এটা তো অর্থমন্ত্রীর জন্য কিছুই না। তারপরও এ খাতে কেন হাত দেয়া হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না।

বাজেট আলোচনায় সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানোর বিরোধিতা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, সঞ্চয়পত্রের ওপর সুদ কমানো ঠিক হবে না। ১০ শতাংশ সুদ ধরলে হয়ত হবে এক হাজার কোটি টাকা। এর সুবিধা পাবে লক্ষ লক্ষ লোক। যাদের জন্য কোনো সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প নাই। তারা ট্রাকের সামনে দাঁড়াতে পারেন না, হাত পাততে পারেন না। এদের অনেকে সিনিয়র সিটিজেন। নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। আমরা অনেক শ্রেণির মানুষকে ভর্তুকি দেই, যার প্রাপ্য নয়। তারচেয়ে বড় কথা, ঋণ খেলাপিদের বিশাল বোঝা নিতে পারলে আমরা কেন মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তের সামান্য বোঝা নেব না। প্রব্লেম একটাই, এদের প্রেসার গ্রুপ নাই, থাকলে লেজ গুটায়ে মেনে নেয়া হত। ব্যাংকের কাছ থেকে বা বিদেশি ঋণের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের ঋণ ভালো ও সহজ।

চালের দাম বাড়ার বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, মোটা চালের দাম বাড়লে কৃষক দাম পাবে। আমরা কৃষককে বাধ্য করতে পারি না। আবার চালের দাম রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর বিষয়। তাই ঝুঁকি নিয়ে ব্যালেন্স করে আগাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিদেশী ঋণ যখন তখন নেয়া ঠিক না। নানা শর্ত থাকে। বিদেশী ঋণ অত্যন্ত জটিল ও ভয়াবহ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সঞ্চয়পত্রে সুদ কমানোর ফতোয়া দিচ্ছে। এরা কারা? তারা সেই প্রতিষ্ঠান যারা পদ্মা সেতুতে বাধা দিয়েছে। সারের এবং কৃষি পণ্যে ভর্তুকি দিতে বাধা দিয়েছে। আমরা নিজস্ব চেষ্টায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মূল মন্ত্রই হচ্ছে উন্নয়ন। এবারের বাজেটে তা প্রতিফলিত হয়েছে। এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে অনেকে বলছেন। আমরা বলবো- শেষ বিচারে এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য। অতীতে তাদের এ ধরণের অবিবেচক বক্তব্য ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এবারও তা ভুল বলে প্রমাণ করতে পারবো।

তিনি বলেন, বাজেটের সমালোচক বিএনপি অতীতে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। শেষ পর্যন্ত তারা লেজ গুটিয়ে নিয়েছে। শত শত মানুষকে তারা পেট্রলবোমা মেরে হতাহত করেছে। এসব কাজ বেগম খালেদা জিয়া করেছেন এয়ার কন্ডিশন রুমে বসে। এতে তার মেকআপের কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত পরিবার।