আপন জুয়েলার্সের সোনা আটকের ঘটনায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কোনো স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে না বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) বৈঠকে এ আশ্বাস দেন মো. নজিবুর রহমান।
এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মু’মেন বিষয়টি জানিয়েছেন।
বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুমে শুল্ক গোয়েন্দার অভিযানে প্রায় ১৫.১৩ মণ সোনা জব্দ করা হয়েছে। এটাকে কেন্দ্র করে সাধারণ ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকে সততা ও সুনামের সাথে ব্যবসা করছেন। এনবিআর সব সময় এসব ব্যবসায়ীর পাশে থাকবে। সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ এবং অনুসন্ধানে প্রাপ্ত পর্যাপ্ত তথ্য ও প্রমাণ ছাড়া কোনো স্বর্ণ ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হবে না। এ অবস্থাকে কেন্দ্র করে অন্য কেউ যেন অযথা হয়রানি না করে সেজন্য এনবিআর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ক বিভাগের সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, লুৎফর রহমান, পারভেজ ইকবাল এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সভাপতি গঙ্গা চরণ মালাকার, সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীন প্রমুখ।
সভায় স্বর্ণ ব্যবসার বর্তমান সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, চোরাচালানের দায়ে শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃক আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শোরুম থেকে প্রায় ১৫.১৩ মণ সোনা আটকের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন পর্যায়ে ভুল বার্তা যাওয়ায় সাধারণ স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফলে স্বর্ণ ব্যবসা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআর স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে একযোগে কাজ করছে। স্বর্ণ ব্যবসা এ দেশে একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা। এনবিআর এবং সরকারের পক্ষ থেকে এই ক্ষেত্রকে আরো যুগোপযোগী ও অগ্রসর করার জন্য যাবতীয় ইতিবাচক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যে অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে যুগোপযোগী স্বর্ণ নীতিমালা প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন। অচিরে এই নীতিমালা বাস্তব রূপ লাভ করবে।
অন্যদিকে, নতুন ভ্যাট আইনে ১৫% ভ্যাট আরোপের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্তমানে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা ৫% হারে ভ্যাট প্রদান করছেন। কিন্তু ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইনে ১৫% ভ্যাট আরোপের ফলে সোনার দাম বেড়ে যাবে। ফলে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এবং পার্শ্ববর্তী দেশে এই শিল্প স্থানান্তর হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নজিবুর রহমান বলেন, নতুন ভ্যাট আইনে এই সেক্টরে দাম যেন না বাড়ে এবং একই সঙ্গে এই ভ্যাট আরোপের ফলে দাম বাড়ানোর জন্য শতবর্ষের এই শিল্পের কোনো ক্ষতি না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখা হবে। এই শিল্পের প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সরকারের সহানুভূতিশীল দৃষ্টি রয়েছে।