এবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি হবে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মামলার। মানবতাবিরোধী অপরাধের পঞ্চম আপিল মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর চূড়ান্ত রায় দেওয়া হয়েছে বুধবার। সিরিয়াল অনুযায়ী এরপর আসে নিজামীর মামলা।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সর্বোচ্চ এ নেতাকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। ২৩ নভেম্বর ফাঁসির আদেশ বাতিল করে খালাস চেয়ে এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন নিজামী।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত এখন পর্যন্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি আপিল মামলার রায় ঘোষণা করেছেন। প্রথমটি ছিল জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার। আপিল বিভাগের রায় অনুসারে তার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলায় দলটির নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাবাসের রায় দেন আপিল বিভাগ। তৃতীয় মামলায় একই দলের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তার ফাঁসির দণ্ডও কার্যকর করেছে সরকার।
চতুর্থ ও পঞ্চম মামলায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায় বহাল রাখা হয়েছে। এখন এ দু’টি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বের হলে নিয়ম অনুসারে তারা রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করবেন। রিভিউ খারিজ হলে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারে রায় কার্যকর হবে।
নিজামীর আপিল মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তার আইনজীবী শিশির মনির জানান, আদালতের আদেশ অনুসারে আপিল মামলার সারসংক্ষেপ দাখিল করা হয়েছে।
এবার নিজামীর আপিল মামলার শুনানি শুরু হবে কি-না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরই ট্রাইব্যুনালে নিজামী সাহেবের রায় দেওয়া হয়েছে। এখন সর্বোচ্চ আদালতই নির্ধারণ করবেন, কোন মামলা আপিল শুনানিতে আসবে।
এবিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ক্রমিক অনুসারে সালাউদ্দিন কাদেরের পর জামায়াতের আমির নিজামীর মামলা আপিল শুনানিতে আসতে পারে।
চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এর রায়ে নিজামীর বিরুদ্ধে আনা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর- এ চার অভিযোগে বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করার অপরাধে রায়ে তাকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়। বাকি চারটি ১, ৩, ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে আটক, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সংঘটনে সহযোগিতার দায়ে তাকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
বাকি আটটি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ওইসব অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয় নিজামীকে।