ঢাকা ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালো সেতু ভেঙে নতুন নির্মাণের চেষ্টা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ মে ২০১৭
  • ৪৭০ বার

ঝালকাঠির নলছিটিতে একটি পুরনো সেতু অন্যত্র সরিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি জনগুরুত্বহীন স্থানে স্থাপনের বিরুদ্ধে সোচ্চার এলাকাবাসীর পক্ষ নিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মগড় ইউনিয়নের ষাটপাকিয়া ফেরিঘাট সংলগ্ন পূর্ব দিকের খালের ওপরের পুরনো সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী তথা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে ষাটপাকিয়া ফেরিঘাট থেকে মগড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) পর্যন্ত তিন হাজার ৬৪০ মিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়কের পাশের কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর উদ্যোগে ঢাকা এলজিইডি ঝালকাঠি-এসএন্ড নলছিটি উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ষাটপাকিয়া ফেরিঘাট সংলগ্ন খালের ওপর এক কোটি ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯৯ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে। টেন্ডার কমিটির গত ১ মার্চের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঝালকাঠি শহরের পালবাড়ি সড়কের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমটি বিল্ডার্স নতুন সেতু নির্মাণের কাজ পায়। গত ২৯ মার্চ ঝালকাঠি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম সরকার ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৮৩ দিনের মধ্যে (৪ এপ্রিল-২৫ জুন) কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়ে কার্যাদেশ দেন। এদিকে সম্প্রতি প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে পাশের ইউনিয়নে জনগুরুত্বহীন এলাকায় একটি ভালো সেতু ভেঙে সেখানে এ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এতে এলাকাবাসী চরম আপত্তি তোলে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক আবদুল মালেক সরকার তাতে কর্ণপাত করেননি। এলাকাবাসীর আপত্তির পরও গত ১৯ মে থেকে তড়িঘড়ি করে তিন-চার দিনের মধ্যে সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়।

কাঠিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস মিয়া, আলী আকবর, মগড় ইউপি সদস্য ফেরদৌস ফকিরসহ শতাধিক নারী-পুরুষ অভিযোগ করে বলে, এলাকাবাসীর শত আপত্তি সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালী অবসরপ্রাপ্ত এক আমলার ইশারায় তাঁর বাড়িসংলগ্ন এলাকায় সেতুটি নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। এ জন্য টেন্ডার শিডিউলের নির্ধারিত স্থান পরিবর্তন করে, এমনকি ইউনিয়ন সীমানার বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনে তড়িঘড়ি করে ভালো একটি সেতু ভেঙে সেখানে নতুন সেতুটি নির্মাণের চেষ্টা চলছে। আমরা এ ব্যাপারে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব। প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণের সুপারিশ করেছেন নলছিটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইউনুস লস্কর, নলছিটির পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরী, মগড় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহিন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসান হাবিব।

মগড় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহিন এলাকাবাসীর অভিযোগ সঠিক উল্লেখ করে তাদের দাবি করা স্থানে সেতু নির্মাণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. কামাল শরীফ বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাকে যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে সে অনুযায়ীই কাজ করা হচ্ছে। ’

এ ব্যাপারে জানতে ঢাকা এলজিইডির ঝালকাঠি-এসএন্ড নলছিটি উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুল মালেক সরকার ও ঝালকাঠি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম সরকারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা করা হলেও তাঁরা রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে ওই দুই কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে পরে তাঁদের সেলফোনে এসএমএস পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভালো সেতু ভেঙে নতুন নির্মাণের চেষ্টা

আপডেট টাইম : ১১:৫৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ মে ২০১৭

ঝালকাঠির নলছিটিতে একটি পুরনো সেতু অন্যত্র সরিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি জনগুরুত্বহীন স্থানে স্থাপনের বিরুদ্ধে সোচ্চার এলাকাবাসীর পক্ষ নিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মগড় ইউনিয়নের ষাটপাকিয়া ফেরিঘাট সংলগ্ন পূর্ব দিকের খালের ওপরের পুরনো সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী তথা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে ষাটপাকিয়া ফেরিঘাট থেকে মগড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) পর্যন্ত তিন হাজার ৬৪০ মিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়কের পাশের কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর উদ্যোগে ঢাকা এলজিইডি ঝালকাঠি-এসএন্ড নলছিটি উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ষাটপাকিয়া ফেরিঘাট সংলগ্ন খালের ওপর এক কোটি ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯৯ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে। টেন্ডার কমিটির গত ১ মার্চের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঝালকাঠি শহরের পালবাড়ি সড়কের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমটি বিল্ডার্স নতুন সেতু নির্মাণের কাজ পায়। গত ২৯ মার্চ ঝালকাঠি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম সরকার ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৮৩ দিনের মধ্যে (৪ এপ্রিল-২৫ জুন) কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়ে কার্যাদেশ দেন। এদিকে সম্প্রতি প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে পাশের ইউনিয়নে জনগুরুত্বহীন এলাকায় একটি ভালো সেতু ভেঙে সেখানে এ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এতে এলাকাবাসী চরম আপত্তি তোলে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক আবদুল মালেক সরকার তাতে কর্ণপাত করেননি। এলাকাবাসীর আপত্তির পরও গত ১৯ মে থেকে তড়িঘড়ি করে তিন-চার দিনের মধ্যে সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়।

কাঠিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস মিয়া, আলী আকবর, মগড় ইউপি সদস্য ফেরদৌস ফকিরসহ শতাধিক নারী-পুরুষ অভিযোগ করে বলে, এলাকাবাসীর শত আপত্তি সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালী অবসরপ্রাপ্ত এক আমলার ইশারায় তাঁর বাড়িসংলগ্ন এলাকায় সেতুটি নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। এ জন্য টেন্ডার শিডিউলের নির্ধারিত স্থান পরিবর্তন করে, এমনকি ইউনিয়ন সীমানার বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনে তড়িঘড়ি করে ভালো একটি সেতু ভেঙে সেখানে নতুন সেতুটি নির্মাণের চেষ্টা চলছে। আমরা এ ব্যাপারে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব। প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।

এদিকে এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণের সুপারিশ করেছেন নলছিটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইউনুস লস্কর, নলছিটির পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তছলিম উদ্দিন চৌধুরী, মগড় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহিন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসান হাবিব।

মগড় ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহিন এলাকাবাসীর অভিযোগ সঠিক উল্লেখ করে তাদের দাবি করা স্থানে সেতু নির্মাণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. কামাল শরীফ বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাকে যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে সে অনুযায়ীই কাজ করা হচ্ছে। ’

এ ব্যাপারে জানতে ঢাকা এলজিইডির ঝালকাঠি-এসএন্ড নলছিটি উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুল মালেক সরকার ও ঝালকাঠি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সেলিম সরকারের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা করা হলেও তাঁরা রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে ওই দুই কর্মকর্তার বক্তব্য জানতে পরে তাঁদের সেলফোনে এসএমএস পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।