সেকালের বাংলা সিনেমায় নায়ক-নায়িকা উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেনের বাইরে বেড়ানোর দৃশ্য। অভিসারের সেকেলে দিনগুলো যদি একালে ফিরে আসে! প্রেয়সীকে অভিসারে আমন্ত্রণ জানাতে কয়েক দিন আগেই তার সঙ্গে কথা বলে দিনক্ষণ ঠিক করা। কদিন ধরে দুজনের প্রস্তুতি। তারপর কাঙ্ক্ষিত সন্ধ্যায় পোশাকে-আশাকে ফিটফাট হয়ে হাতে ফুল কিংবা ছোট্ট কোনো উপহারের বাক্স হাতে তার বাড়ির দরজায় কড়া নাড়া! অতঃপর সিনেমা দেখতে যাওয়া এবং কোনো নামী রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ। পুরোনো দিনের সিনেমায় দেখা অভিসারের সেসব রীতিনীতি একালে ফিরে এলে কী হতে পারে তা নিয়েই এ প্রতিবেদন।
প্রেয়সীর দুয়ারে কড়া নাড়া
শেষ মুহূর্তের তাড়াহুড়োয় মোবাইল ফোনে ‘টেক্সটিং’ বা ফোন করে বলা, ‘আমি বাইরে বেরিয়ে গেছি, আসছি’ আর প্রয়োজন নেই। বরং সত্যিই বাইরে বেরিয়ে সোজা প্রেয়সীর বাড়ির দরজায় হাজির হতে হবে। আর কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই আপনাদের দুনিয়া পাল্টে যাবে! এটা অভিসারের সন্ধ্যা, প্রথম অভিসারের এই সন্ধ্যাটাই জীবনের সবচেয়ে সেরা, তাই সবকিছুই বিশেষ, সবই সেরা!
ফুল কিংবা ছোট্ট কোনো উপহার
এই রীতিটাও কিন্তু দারুণ। ভালোবাসার সুন্দর ও মার্জিত বহিঃপ্রকাশ। প্রেয়সীর সামনে ফুল হাতে হাজির হওয়া। অভিসারের সন্ধ্যায় ফুল তো অবশ্যই নিতে হবে, সঙ্গে থাকতে পারে আরও কিছু। ছোট্ট একটা শুভেচ্ছা-কার্ড হতে পারে, হতে পারে অন্য কোনো উপহার। খালি হাত কখনোই নয়, হোক চকলেট কিংবা কিছু ফল, একটা কিছু নিয়ে যান তাঁর জন্যে।
অভিসারের সাজে সাজুন
স্যুটেড-বুটেড হয়েই যেতে হবে, এমনটা নয়। কিন্তু অবশ্যই নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করুন। হতে পারে জন্মদিনে উপহার পাওয়া জামা, যা এখনো পরা হয়ে ওঠেনি, কিংবা নতুন কেনা একটা শার্ট বা পাঞ্জাবি। নিজেকে নতুন অবয়বে হাজির করতে পারেন তাঁর কাছে। এটাই সেই দিন। তাঁকে চমকে দিন।
আসল অভিসারে ডাকুন
তোমার সঙ্গে ‘ওখানে দেখা হবে’ কিংবা ‘চলে আসো, আমি ওখানে থাকব’টাইপের টেক্সট নয়…কাউকে আসল অভিসারেই ডাকুন। নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করুন। চেষ্টা করুন সামনাসামনি কথা বলে অভিসারের দিনক্ষণ ঠিক করতে। না হলে ফোনে সময় নিয়ে কথা বলে তা ঠিক করুন, যাতে দুজনের মধ্যেই আসল অভিসারের বোঝাপড়াটা হয়।
পরিচয় করিয়ে দিন
অভিসারের সন্ধ্যায় ঘুরে বেড়ানোর সময় বা সিনেমায় রেস্তোরাঁয় যদি পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই আপনার প্রেয়সীকে তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিন। যদি সে অল্প পরিচিত কেউ হয় বা তার নাম ভুলে গিয়ে থাকেন, সমস্যা নেই। শুভেচ্ছা বিনিময় করুন, কয়েক মুহূর্তের জন্য হলেও আলাপ করুন। এতে আপনার সামাজিকতার গুণ ফুটে উঠবে এবং আপনার প্রেয়সীও বুঝবেন যে আপনি তাকে নিয়ে গর্বিত।
মোবাইল ফোন ভুলে যান
সন্ধ্যাটা যদি অভিসারের হয়, তাহলে তাকে সেভাবেই উপভোগ করা উচিত। আপনি যেহেতু নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করেছেন, তাহলে কেন কয়েক ঘণ্টার জন্য ফোন থেকে দূরে থাকতে পারবেন না! অফিস বা কর্মক্ষেত্রের খুব জরুরি কিছু হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে বিকল্প ফোনের মেসেজ দিয়ে রাখুন। নিদেনপক্ষে ফোন সাইলেন্ট করে রাখুন। আজকের সন্ধ্যাটা শুধু দুজনেরই হোক।
নিজেদের অবস্থান জানুন
অনেক সময়ই তুখোড় বক্তাও লাজুক বনে যান, নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন না। প্রেমের বিষয়ে লজ্জা পেলে তো চলবে না। একসঙ্গে সময় কাটানো নিজেকে প্রকাশ করার ভালো সুযোগ। নিজেরা কথা বলুন, নিজেদের অবস্থানটা জানা-বোঝার চেষ্টা করুন। আপনারা কি আসলেই একটা জুটিতে পরিণত হয়েছেন, নাকি আপনাদের একসঙ্গে দেখা যায় বলে লোকে সেটা ভাবে! এ বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিন।
কাছাকাছি হন
প্রথম অভিসার মানে তো আসলে পরস্পরকে আরও ভালো করে জানা-বোঝা। যৌনতা ভিন্ন বিষয়। তাই এই সন্ধ্যাটা কাজে লাগান নিজেকে প্রেয়সীর কাছে আরও ভালোভাবে তুলে ধরার জন্য। আগে পরস্পরের বোঝাপড়া হোক, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন।